মসজিদের টাকা তোলা নিয়ে সংঘর্ষে নারীসহ ১২ জন আহত
চুয়াডাঙ্গার মাছেরদাইড় গ্রামে দু’জনের তর্কাতর্কি থেকে তুলকালাম কাণ্ড
স্টাফ রিপোর্টার:
চুয়াডাঙ্গার মাছেরদাইড় গ্রামে মসজিদের ইমামের সম্মানীর টাকা তোলা নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১২ জন। তাদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এদিকে, জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেয়ার সময়ও আরেক দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষ। পরে হাসপাতাল চত্বর থেকে দুজনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। গতকাল সোমবার বিকেলে সদর উপজেলার মাছেরদাইড় জামে মসজিদের টাকা তোলা নিয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় গতরাত পর্যন্ত সাতজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সদর থানা পুলিশ।
স্থানীয়সূত্র জানিয়েছে, মাছেরদাইড় জামে মসজিদের ক্যাশিয়ার আশকার আলী কিছুদিন চুয়াডাঙ্গার বাইরে যান। সে সময় ইমামের সম্মানী বাবদ মুসল্লিদের কাছ থেকে টাকা তোলার দায়িত্ব দিয়ে যান একই এলাকার এক কিশোরকে। এ নিয়ে মসজিদ কমিটির অন্যান্যদের সাথে বিরোধের সৃষ্টি আশকার আলীর। তারই সূত্র ধরে সোমবার বিকেলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে আহত ১২ জনের মধ্যে একপক্ষেরই রয়েছেন নারীসহ ১১ জন। তারা হলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের মাছেরদাইড় গ্রামের মৃত আবেদ আলীর ছেলে ইব্রাহিম (৫২), একই জাহাঙ্গীরের ছেলে তোতা মিয়া (৩৪), মিজানুর রহমানের ছেলে শাওন (২২), ছলেমান মিজির ছেলে ইছানুল হক (৫০), মিজানুর রহমানের ছেলে রাজু (৩০), মৃত আলী আজগরের ছেলে মাহাবুল (৪০), হোসেন আলীর ছেলে অনিক (১৭), মৃত আব্দুল বাতেনের ছেলে (ক্যাশিয়ার) আশকার আলী (৪০), তার স্ত্রী রিজিয়া পারভিন (৪৬), মৃত নুরু ব্যাপারির ছেলে তাইজেল আলী (৩৫) ও আলী কদরের ছেলে বাবুল আলী (৪০)। এছাড়া অপরপক্ষের আহত হয়েছেন মাছেরদাইড় গ্রামেরই মৃত শের আলী দেওয়ানের ছেলে সালাউদ্দিন (৪০)।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আসাদুল হক দৈনিক মাথাভাঙ্গা’কে বলেন, মসজিদের ইমাম সাহেবের সম্মানীর টাকা তোলা নিয়ে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ ও ক্যাশিয়ার আশকার আলীর সাথে বিরোধ চলছিলো। এ নিয়ে সোমবার বিকেলে উভয়পক্ষের লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আহত হয়েছেন এক নারীসহ স্থানীয় কয়েকজন।
এদিকে, সংঘর্ষের পর আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। জরুরি বিভাগে তাদের চিকিৎসা প্রদানের সময় আবারও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয়পক্ষের লোকজন। পরে হাসপাতালে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যসহ সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। দুজনকে আটক করে নেয়া হয় থানায়। আটকের সময় পুলিশের গাড়ি থেকে অভিযুক্তদের ছিনিয়ে নেয়ারও চেষ্টা করে ¯^জনরা। এসময় চিকিৎসা নিতে আসা রোগি ও তাদের ¯^জনসহ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে চিকিৎসক ও স্টাফদের মাঝে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন বলেন, আহতদের সকলেই শঙ্কামুক্ত। জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন দৈনিক মাথাভাঙ্গা’কে বলেন, মসজিদের টাকা তোলাকে কেন্দ্র করে সভাপতি ও ক্যাশিয়ারের বিরোধের সৃষ্টি হয়। ওই বিরোধের জেরে দুইগ্রæপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ১১জন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। এ ঘটনায় সাতজনকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইউএম/১৫০৩২২-০৭/২৩