মেহেরপুর অফিস: করোনার কারণে প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন মুখ। দীর্ঘায়িত হচ্ছে লাশের লাইন। প্রতিদিন করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গেল ২৪ ঘন্টায় মেহেরপুর জেলায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত ৪ জন মারা গেছেন। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭ জন। আক্রান্তের হার শতকরা প্রায় ৪১ ভাগ। করোনা আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন ৪ জন। দিন দিন মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে করোনা আক্রান্ত রোগী। এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৬০ জন। মেহেরপুরে সচেতন মানুষের মাঝে বাড়ছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা।
গেলো ২৪ ঘণ্টায় মেহেরপুর জেলায় নতুন করে ৪৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে মেহেরপুর সদর উপজেলায় ৩০ জন, গাংনী উপজেলায় ১০ জন ও মুজিবনগর উপজেলায় ৭ জন রয়েছেন। এ নিয়ে বর্তমানে জেলায় মোট করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫২৬ জন। এছাড়া মারা গেছেন আরো ৪ জন। এ নিয়ে মেহেরপুর করোনা আক্রান্ত রোগির মৃত্যুর সংখ্যা ৬০। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সিভিল সার্জন ডা. মোঃ নাসির উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, গেলা ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত ৪ জন রোগী মারা গেছেন। এরা হলেন মেহেরপুর সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে আনারুল ইসলাম (৫০) ও একই উপজেলার যাদবপুর গ্রামের মওলাদ আলীর ছেলে মিয়ারুল ইসলাম (৩৫) এবং গাংনী উপজেলার কুঞ্জনগর গ্রামের শরিফ উদ্দিনের স্ত্রী আমিরুন নেছা (৫৫) ও একই উপজেলার নতুন মটমুড়া গ্রামের সুবহান আলীর স্ত্রী ফজিলা খাতুন (৫৫)। এদের মধ্যে ফজিলা খাতুন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ও বাকিরা মেহেরপুর ২৫০ শষ্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে মারা যান।
মেহেরপুর সিভিল সার্জন অফিস থেকে আরো জানায়, কুষ্টিয়া ল্যাব থেকে ১১৫টি নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৪৭ জন করোনা রোগী চিহ্নিত হয়েছেন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন মোট ৫২৬ জন করোনা রোগীর মধ্যে সদর উপজেলার বাসিন্দা ২০৯ জন, গাংনী উপজেলার বাসিন্দা ২১৬ জন ও মুজিবনগর উপজেলার বাসিন্দা ১০১ জন। এছাড়া ট্রান্সফার্ড হয়েছেন ১১৫ জন। এদের মধ্যে সদর উপজেলার ৭৩ জন, গাংনী উপজেলার ১৭ জন ও মুজিবনগর উপজেলার ২৫ জন রয়েছেন। এ ছাড়া এ পর্যন্ত সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এক হাজার ২৪৩ জন। যার মধ্যে সদর উপজেলায় ৬৭৭ জন, গাংনী উপজেলায় ৪০৩ জন ও মুজিবনগর উপজেলায় ১৬৩ জন রয়েছেন। এছাড়া এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৬০ জন। যার মধ্যে সদর উপজেলায় ২২ জন, গাংনী উপজেলার ২৪ জন ও মুজিবনগর উপজেলার ১৪ জন রয়েছেন।
এদিকে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় দফায় উদ্বেগজনক হারে সংক্রমণ বৃদ্ধিতে মেহেরপুর জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে। মাঠে নেমেছে র্যাব ও সেনা বাহিনীর সদস্যরা। গতকাল দুপুরের দিকে যশোর সেনানিবাসের ১৭ আর্টিলারি রেজিমেন্টের মেজর আসিফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর সদস্যদের জেলা শহরসহ গাংনী ও মুজিবনগরে টহল দিতে দেখা যায়। এদিকে র্যাব সদস্যদের কঠোর লকডাউন নিশ্চিত করতে শহরে থাকতে দেখা যায়। এছাড়া শহরের মোড়ে মোড়ে ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ সদস্যদের দেখা যায়।
মাস্ক পরার অভ্যেস, করোনামুক্ত বাংলাদেশ” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে মেহেরপুর পুলিশের উদ্যোগে সাধারণ মানুষের মধ্যে শতভাগ মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতকরণে সচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ জনসাধারণের মাঝে মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলের দিকে মেহেরপুর পুলিশের একটি দল মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার মোড় এবং পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জনসচেতনতা মূলক প্রচারণা চালান। অযাথা ঘরের বাইরে বের না হওয়ার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়। একই সাথে সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করার জন্য আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে মেহেরপুর জেলা ব্যাপী জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ শহর ও গ্রাম-গঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছেন। করোনা সংক্রমণ মারাত্বক আকার ধারন করেছে। যে কারনে কঠোর নির্দেশনা বাস্তবায়নে অভিযান পরিচালনা করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারবৃন্দ সহ জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারবৃন্দ। অভিযান চলাকালে কঠোর নির্দেশনা বাস্তবায়নে সকলকে সতর্ক থাকার আহবান জানানো হয় এবং নিজের সুরক্ষার সাথে সাথে পরিবার ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে সবাইকে কাজ ছাড়া বাহিরে না আসার আহবান জানান।
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ