‘ক্ষুধার তাড়না’য় তরুণীর আত্মহত্যা !

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের উত্তর যদুবয়রা গ্রামে শারীরিক প্রতিবন্ধী রত্না (২৭) ক্ষুধা ও অসুস্থতায় ওষুধ কেনাসহ নানা চাহিদা মেটাতে না পারায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল সোমবার সকালে নিজ ঘর থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রত্মা খাতুন ওই গ্রামের দিনমজুর মফিজের মেয়ে। করোনার সময়ে শাড়ির কারচুপির কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে তিনি আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী ছিলেন রত্মা। ওষুধের ওপর নির্ভর ছিলো তার জীবন। সেলাই, শাড়ির কারচুপির কাজসহ নানান হাতের কাজ করে চলতো তার চিকিৎসা ও সংসারের ব্যয়। রত্না জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও ২৭ বছরেও হয়নি ভাতার কার্ড। মেলেনি কোনোপ্রকার সরকারি সাহায্য সহযোগিতা। সংগ্রামী এই নারী প্রতিবন্ধী হলেও তার কাজের মাধ্যমে বুঝতে দেননি কাউকে। করোনায় কাজ না থাকায় অভাব ছিলো তার নিত্যদিনের সঙ্গী। অভাবের কষ্ট সইতে না পেরে অভিমানে রোববার রাতে নিজ ঘরে আড়ার সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। সকালে রত্মা মা জানালা দিয়ে বিছানায় তাকে না দেখে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে থানা পুলিশে খবর দেন।

নিহতের চাচি সুফিয়া খাতুন বলেন, রত্মা খুব ভালো মেয়ে ছিলো। জন্মগত প্রতিবন্ধী হওয়ায় সবাই ওকে ভালোবাসতো। পরিবারে অভাব থাকায় হাতের কাজ করে চিকিৎসার খরচ চালাতো। করোনায় কাজ বন্ধ হওয়ায় অভাবে পড়েছিলো।

ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুস সাত্তার বলেন, এবার উন্মুক্ত ভাতা বাছাইয়ে ইউনিয়নে ১০টি নাম কম পড়ায় রত্নার নাম দেয়া হয়েছে। ভাতার প্রসেসিং চলছে।

ঐদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শরিফুল আলম বলেন, মেয়েটিকে একদিন ফার্মেসিতে ওষুধ কিনতে দেখে জানতে পারি সে প্রতিবন্ধী। তাকে ভাতার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছিলাম।

উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোহাম্মদ আলী বলেন, রত্মা খাতুন ভাতার বই বা কার্ড নেই। ২০১৪ সালে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিবন্ধী যাচাই বাছাই তালিকায় শুধু তার নাম রয়েছে।

কুমারখালী থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) মামুনুর রশীদ বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তিনি জন্মগত শারীরিক প্রতিবন্ধী ছিলেন। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More