চুয়াডাঙ্গায় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত আরও ৫৯ জন রোগী শনাক্ত : উপসর্গ নিয়ে যুবকের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় আরও ৫৯ জন করোনা ভাইরাস সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে। ১১৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে এ সংখ্যক মানুষের করোনা ভাইরাস আক্রান্তের বিষয়টি শনাক্ত হয়েছে। এ হিসেবে শনাক্তের হার ৫০ শতাংশ। রোববার আরও ৪১ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫ জনে। গতরাতে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে করোনা উপসর্গ নিয়ে সুমন নামের একজনের মৃতৃ্যু হয়েছে।
নতুন ৫৯ জনকে নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৬শ ৫০ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯শ ৭৯ জন। রোববার আরও ১৩৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট ল্যাবে প্রেরণ করা হয়েছে। নিয়ে জেলায় মোট ১১ হাজার ৯শ ১২ জনের নমুনা নেয়া হয়েছে। গতকালের ১১৮ জনের নিয়ে মোট ১১ হাজার ৪শ ৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। নতুন সংক্রমিত ৫৯ জনের মধ্যে সদর উপজেলার ১৮ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ১৫ জন, দামুড়হুদা উপজেলার ৯ জন, জীবননগর উপজেলার ১৭ জন। সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বর্তমানে ৫৮৮ জন। এর মধ্যে ৫৩১ জন রয়েছেন নিজ নিজ বাড়িতে। হাসপাতালে ৫৩ জন। রেফার্ড রয়েছেন ৪ জন। আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সিগঞ্জ গড়গাড়ির আব্দুর রাজ্জাক কোভিড-১৯ পজিটিভ ছিলেন। গতকাল ভোরে তিনি আত্মহত্যা করেন। আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যু ধরে চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮১ জন। অবশ্য চুয়াডাঙ্গায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় মৃত্যুবরণকারীর হিসেবে চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবে নেই। এ ধরলে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৮৫ জন। উপসর্গ নিয়ে আরও বেশ ক’জন মারা গেলেও তাদের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট রোববার পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। গতকাল রোববারও উপসর্গ নিয়ে একজনের মৃত্যৃ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আমাদের জীবননগর ব্যুরো। জীবননগরে করোনা উপসর্গ নিয়ে সুমন (৩৭) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বাড়িতে স্বাসকষ্ট শুরু হলে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রোববার রাত ৮ টার দিকে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। মৃত সুমন (৩৭) জীবননগর পৌর শহরের থানা পাড়ার দোস্ত মহাম্মদের ছেলে। পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বর, সর্দি, কাশিতে ভুগছিলেন। রোববার সন্ধ্যার পর হঠাৎ করে সুমনের স্বাসকষ্ট শুরু হয়। এসময় পরিবারের সদস্যরা সুমনকে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করায়। জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত অফিসার ডা. নাহিদ জানান, করোনা উপসর্গসহ স্বাসকষ্ট নিয়ে সুমনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অক্সিজেন দেয়ার পরেও তার শারীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে তার মৃত্যু হয়। নমুনা নেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে দাফনের পরামর্শ দেয়া দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় দুদিনে নতুন যারা শনাক্ত হয়েছেন এদের মধ্যে হানুরবাড়াদির ৪ জন, হাসপাতালপাড়ার একজন, বাগানপাড়ার একজন, বড়শলুয়ার একজন, আলুকদিয়ার ১ জন, কোটপাড়ার ৪ জন, বেলগাছির ২ জন, শান্তিপাড়ার ৩ জন, পীরপুরের ১ জন, মাখালডাঙ্গার ১ জন, সাদেক আলী মল্লিকপাড়ার ১ জন, সবুজপাড়ার ১ জন, বাজারপাড়ার ১ জন, ঈদগাপাড়ার একজন। গতরাতে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় সক্রিয় রোগী ছিলেন ১৯৯ জন। এর মধ্যে বাড়িতে ১৭৫ জন, হাসপাতালে ২৩ জন, রেফার্ড ১ জন। আলমডাঙ্গা উপজেলায় সক্রিয় রোগী ৭০ জনের মধ্যে ৬৩ জন নিজ নিজ বাড়িতে, ৬ জন হাসপাতালে, ১ জন রেফার্ড। দামুড়হুদা উপজেলায় সক্রিয় রোগী ২০৮ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ১৭ জন, বাড়িতে ১৮৯ জন, রেফার্ড রয়েছেন ২ জন। জীবননগর উপজেলায় সক্রিয় রোগী ১১১ জনের মধ্যে ১০৪ জন নিজ নিজ বাড়িতে,৭ জন হাসপাতালে আইসোলেশনে রয়েছেন।
দেশে শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার ৮টা পর্যন্ত ২২ হাজার ২শ ৩১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। ৩ হাজার ৬শ ৪১ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫শ ৯ জন। মারা গেছেন ৮২ জন। এ নিয়ে দেশে মৃতের সংখ্যা সরকারি হিসেবে দাঁিড়য়েছে ১৩ হাজার ৫শ ৪৮ জন।
দেশে সংক্রমন ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় একের পর এক জেলা কঠোর লকডাউনের আওতায় নেয়া হচ্ছে। গতকাল রোববার থেকে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ও আলুকদিয়া ইউনিয়নে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। দামুড়হুদা উপজেলা ১৪ দিনের লকডাউনের আজ ৭ম দিন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More