চুয়াডাঙ্গায় ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে : বাড়তি প্রস্তুতিতে হাসপাতাল

মশক নিধনে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে না : এডিস মশা মারতে না পারলে পরিস্থিতি বেশামালের শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় মশক নিধনের উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ পরিলক্ষিত না হলেও মশা জনিত ডেঙ্গি রোগে আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসা দেয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ডেঙ্গি রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য ২০টি শয্যা পৃথকভাবে রাখা হয়েছে। এ ওয়ার্ডে গতকাল নতুন করে ৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে প্রাপ্ত তথ্য মতে গতকাল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ৯ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। চলতি ডেঙ্গি প্রদুর্ভাব মরসুমে চুয়াডাঙ্গায় আক্রান্ত ১৫ জন রোগীকে গতকাল সকাল পর্যন্ত ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফতেহ আকরাম দোলনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সদর হাসপাতালে ডিঙ্গি আক্রান্ত রোগীদের জন্য ২০টি শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ বিভাগে মেডিকেল অফিসার হিসেবে ডা. হাসানুর রহমানকে বিশেষভাবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। হেলথ এডুকেটর খরশিদা নিয়মিত স্বাস্থ্য শিক্ষা দিচ্ছেন। বহির্বিভাগের টিকেট কাউন্টারের সামনে নিয়মিত মাইকে প্রচার করে রোগী সাধারণকে সচেতন করার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। ওষুধ বিতরণের ফার্মেসির পাশে কিয়স্কিতে ভিডিও চিত্র দেখানো হচ্ছে। নতুন ভবন ও পুরাতন ভবনের সামনে ব্যনার ঝুলিয়েও জনসাধারণকে সচেতন করার পদক্ষেপ নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। চুয়াডাঙ্গায় ডেঙ্গি আক্রান্তদের মধ্যে ১৫ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ৯ জন ভর্তি রয়েছে। এদের মধ্যে ৪ জনকে শনিবার ভর্তি করা হয়েছে। পূর্বে আক্রান্তদের মধ্যে একজনকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। তিনি সুস্থ হয়ে ইতোমধ্যেই বাড়ি ফিরেছেন। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই এডিস মশা ছড়িয়েছে। এ মশার কামড়েই ডেঙ্গি আক্রান্ত হয় মানুষ। মশা মারার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করার পাশাপাশি নিজ নিজ বাড়ির ছাদ, আঙিনায় ডাবের খোশা, ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ারসহ পরিত্যক্ত প্লাস্টিক অপসারণের মাধ্যমে এডিস মশামুক্ত সমাজ গড়তে পারলে ডেঙ্গি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি থাকে না। চুয়াডাঙ্গায় অল্প ক’দিনের মধ্যে ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও মশক নিধনে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ পরিলক্ষিত না হওয়ায় রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে। দেশে ডেঙ্গি আক্রান্তে রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও চুয়াডাঙ্গাতে অবশ্য গতকাল পর্যন্ত এরকম দুঃসংবাদ মেলেনি। চুয়াডাঙ্গা সদর হাপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরএমও বলেছেন, ডেঙ্গি বা ডেঙ্গু রোগী নিয়ে ভিতসন্ত্রস্থ হওয়ার কারণ নেই। নিজ নিজ অবস্থানে থেকে এডিস মশা নিধনে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রোগ সম্পর্কে সচেতন হওয়া অতীব জরুরি। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে যেমন জ্বরের প্রদুর্ভাব বেড়েছে। তেমনই দেখা দিয়েছে ডেঙ্গি। জ্বর হলেও বাড়িতে রেখে রোগীর চিকিৎসা কখন দেয়া যাবে, কখন হাসপাতালে জরুরি ভিত্তিতে ভর্তি করাতে হবে সে বিষয়ে সচেতনমূলক প্রচার পত্র বিতরণের কাজ চলছে। এ প্রচার পত্রে বলা হয়েছে, জ্বরে আক্রান্ত রোগী মুখে পর্যাপ্ত তরল খাবার খেতে পারলে, প্রতি ৬ ঘণ্টায় অন্তত ১ বার প্রস্রাব হলে রোগী বাড়িতে রেখে রোগীকে পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে। স্বাভাবিক খাবারের সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণে লবন যুক্ত তরল খাবার যেযন-খাবার সেলাইন, ডাবের পানি, ফলের রস, স্যুপ ইত্যাদি খেতে দিতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরে প্যারাসিটামল ব্যতীত অন্য কোন খবার ওষুধ সেবন করানো যাবে না। পূর্ণ বয়স্কদের জ্বর ব্যাথা জনিত কারণে সর্বোচ্চ দৈনিক ৩ গ্রাম বা ৫শ’ মিলিগ্রামের ৬টি ট্যাবলেট, শিশুদের জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা দিতে হবে।  জ্বর কমাতে কুসুম গরম পানি দিয়ে সারা শরীর মুছে ফেলা যেতে পারে। এছাড়া প্রচন্ড পেট ব্যথা ও অধ্যধিক পানি পিপাসা, ঘন ঘন বমি বা বমি বন্ধ না হলে, রক্তবমি, কালো পায়খানা হলে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। দাঁতের মাড়ি বা নাক থেকে রক্তপাত হলে ৬ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে প্রস্রাব না হলে, প্রচ- শ্বাসকষ্ট হলে, ডায়রিয়া হলে, অধ্যাধিক দুর্বলতা অনুভব করলে, গর্ভবতী মা নবজাতক শিশু বয়স্ক রোগী ডায়াবেটিস ও কিডনী রোগে আক্রান্ত থাকলে শরীরে তাপমাত্রা অস্বাভাবিক কমে গেলে তথা বেশি ঠা-া হয়ে গেলে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে রোগীকে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More