ছাত্রীর প্রেমে মজলেন শিক্ষক : আলমডাঙ্গার অনুমোদনহীন স্কুলের অনিবন্ধিত দুই শিক্ষক বরখাস্ত

স্টাফ রিপোর্টার: ছাত্রীর সাথে প্রেমজ সম্পর্কের জেরে আলমডাঙ্গার ফুলবগাদী আদর্শ নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। শিক্ষক আব্দুল্লাহ ও রাসেল হোসেনকে বিদ্যালয়ে যেতে মৌখিকভাবে নিষেধ করা হয়েছে।

ফুলবগাদী গ্রামের মুনতাজ আলীর ছেলে শিক্ষক আব্দুল্লাহ নিজের বিদ্যালয়েরই ৯ম শ্রেণির এক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ছাত্রীকে বিয়ে খায়েশে স্ত্রীকেও তালাক দিয়েছেন তিনি। অপরদিকে, একই গ্রামের আব্দুল আলীর ছেলে রাসেল হোসেনও ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনিও গ্রামের এক কলেজছাত্রীর সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে এলাকায় জন্ম দিয়েছেন নানা আলোচনা-সমালোচনার। তবে গত বছর প্রতিষ্ঠিত ফুলবগাদী আদর্শ নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি অনুমোদিত না হওয়ায় এ ব্যাপারে কোনো তথ্য দিতে পারেননি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার।

গ্রামবাসীদের কয়েকজন জানিয়েছেন, ফুলবগাদী গ্রামের পার্শ্ববর্তী নিমতলা গ্রামের মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকলেও দুই গ্রামের রেষারেষির কারণে গত বছর ২০২১ সালে গ্রামের কতিপয় ব্যক্তি গ্রামে হাইস্কুল করার উদ্যোগ নেয়। আর এখন শুনছি স্কুলের শিক্ষকরাই প্রাইভেট পড়ানোর সময়ে ছাত্রীদের সাথে প্রেমে মজে যাচ্ছেন। আবার ছাত্রীর বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাবও দিচ্ছেন।

গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, মুনতাজের ছেলে আব্দুল্লাহ গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে সকালে ও বিকালে প্রাইভেট পড়ান। তার স্কুলেরই এক ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন আব্দুল্লাহ। ছাত্রীকে বিয়ে করার জন্য তিনি তার স্ত্রীকেও তালাক দিয়েছেন। এ ঘটনায় আব্দুল্লাহ কয়েকদিন জেলও খেটেছেন।

এদিকে অপর শিক্ষক রাসেল হোসেনের ভগ্নিপতি ফুলবগাদী গ্রামের নুরু ঘটক বলেছেন, গ্রামের এক কলেজছাত্রীর সাথে রাসেলের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে বলে শুনেছি। গত সোমবার রাত ১২টার দিকে ওই মেয়ের ভাইসহ পরিবারের কয়েকজন বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে রাসেলদের বাড়িতে যান। তবে রাসেলের পরিবার এতে রাজি হয়নি। গ্রামের ফুলবগাদী হাইস্কুলের দুই শিক্ষকের প্রেমের কাহিনি নিয়ে এলাকাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

গ্রামের বাসিন্দা মানিক হোসেন বলেন, আমাদের স্কুলটি এখনো পাঠদানের অনুমতি পায়নি। স্কুলে নিবন্ধনধারী শিক্ষক রয়েছেন দুজন। বাকি যারা রয়েছেন তারা স্কুলে গিয়ে প্রাইভেট পড়ান আর ছাত্রীদের দেখে দেখে পছন্দ করেন। সেখানে আর কী আশা করা যাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নাসির উদ্দীন কুতুব বলেন, স্কুল ছুটি হওয়ার পর বাইরে কী হবে সেটা তো আমি দেখবো না। আর কারো সাথে প্রেমের সম্পর্ক থাকলে সেটা তাদের পরিবার দেখবে। সেটা তাদের পারিবারিক বিষয়। অভিযুক্ত শিক্ষকদের বরখাস্ত করা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আমার স্কুল থেকে কোনো শিক্ষককে লিখিতভাবে বরখাস্ত করা হয়নি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আখতারুল ইসলাম বলেন, সহকারী শিক্ষক আব্দুল্লাহ তার স্ত্রীকে তালাক দেয়ার ঘটনায় কিছুদিন আগে হাজতবাস করেন। আব্দুল্লাহ ও রাসেল দুজনেই স্কুলে কম কম আসেন। আজও তারা কেউ আসেননি।

নামপ্রকাশ না করার শর্তে ফুলবগাদী আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেছেন, আব্দুল্লাহ ও রাসেল হোসেনের এই সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের দুজনকেই বিদ্যালয়ে আসতে বারণ করেছে।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল বারী বলেন, প্রতিষ্ঠানটি নতুন। কোনো অনুমোদন নেই। নিজস্ব তত্ত্বাবধানে বিদ্যালয়টি চলছে। ফলে সেখানে আমাদের সংশ্লিষ্টতা না থাকায় শিক্ষকের বরখাস্তের ব্যাপারেও আমাদের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ
1 টি মন্তব্য
  1. Md Abdus Salam বলেছেন

    কথা গুলো সব মিথ্যা ঔই বিষয় টা কলেজের ছিলো

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More