স্টাফ রিপোর্টার: দেশে উচ্চশিক্ষায় অধ্যয়নরত ৩৯ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন পৌনে ৪ লাখ। অবশিষ্ট শিক্ষার্থীরা পড়ছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি ও বেসরকারি কলেজগুলোতে। এর মধ্যে শুধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজের শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রমের কোনো খবর নেই। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত ঢাকার সাতটি কলেজের টিকা কার্যক্রম নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেই। ফলে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে।
দেশে ৫০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে ৪৬টিতে। এর মধ্যে দেশের ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২০টি আবাসিক হলের ১ লাখ ৩১ হাজার শিক্ষার্থীর টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরপর শুরু হবে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার কার্যক্রম। টিকাদান শেষ হলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে শিক্ষা বিভাগ থেকে এমন ঘোষণা রয়েছে। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমপর্যায়ের শিক্ষা স্তরে ২৯ লাখ ৭৫ হাজার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষার্থী এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাড়ে ৩ লাখ শিক্ষার্থী এই টিকাদানের আওতায় আসেননি।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, ইউজিসি থেকে আবাসিক শিক্ষার্থীদের তালিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সে আলোকেই এখন টিকা কার্যক্রম চলছে। কলেজগুলোর বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উদ্যোগ নিয়ে ব্যবস্থা নেবে। সরকার শিক্ষার্থীদের টিকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। টিকাদান কার্যক্রম শেষ হলেই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত রয়েছে আড়াই হাজার সরকারি-বেসরকারি কলেজ। এসব কলেজের মধ্যে কতগুলোতে আবাসিক হল রয়েছে এবং এসব হলে কতজন শিক্ষার্থী রয়েছে, তার নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেও।
স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী এখন ৩৫ বছর বয়সের বেশি ব্যক্তির টিকা নেয়ার সুযোগ আছে। যারা অনার্স পর্যায়ে পড়াশানা করছেন তাদের বয়স ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ বছর। তাই কলেজের এসব শিক্ষার্থীর টিকা নিতে হলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতো আলাদা নামের তালিকা পাঠাতে হবে। কিন্তু এই কলেজগুলো থেকে এমন কোনো তথ্যসংবলিত তালিকা করা হয়নি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল হোসেন জানান, একটি নির্ধারিত ফরমে কলেজগুলোর তথ্য চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ কলেজ থেকে তথ্য পাওয়া যায়নি। ফলে এ বিষয়ে কার্যক্রম নেয়া যাচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, আড়াই হাজার কলেজের মধ্যে দুই শতাধিক কলেজে হোস্টেল রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব হলে আছেন লক্ষাধিক শিক্ষার্থী। বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজে (বিএম) অনার্সের ২২ বিভাগ এবং মাস্টার্সের ২১ বিভাগে ২৩ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। কলেজটিতে সাতটি আবাসিক হল রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ছাত্রী হলে চার শতাধিক আসন এবং ছাত্রদের জন্য চারটি হোস্টেলে ৭০৮টি সিট রয়েছে। তবে এসব হলে নির্ধারিত সিটের বাইরে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী থাকেন।
কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংখ্যার তথ্য চেয়েছে। সে ক্ষেত্রে শুধু সংখ্যার হিসাবটি নিয়েছে।
সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোস্তফা কামাল জানান, ১৪টি অনার্স এবং ৬টি মাস্টার্স বিভাগে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছেন। এই কলেজের ছাত্রদের জন্য ১২৫ সিটের একটি ছাত্রাবাস রয়েছে। রংপুরের কারমাইকেল কলেজের সাতটি হলে কয়েক হাজার সিট রয়েছে। খুলনার বিএল কলেজের সাতটি হলে এবং রাজশাহী কলেজের তিনটি হলে থাকছেন সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। এসব শিক্ষার্থীকে টিকা কার্যক্রমের আওতায় নেওয়ার উদ্যোগ না থাকায় শিক্ষার্থী অভিভাবকদের মধ্যে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ