জাতীয় যুবদলের খেলোয়াড় থেকে মাদক জগতে!

স্টাফ রিপোর্টার: ৪৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ হাসান ছিলেন এথলেট। ১০০ মিটার স্প্রিন্টে কুষ্টিয়া জেলায় সেরা হয়ে অংশগ্রহণ করেন বিভাগীয় পর্যায়ে। দৌড়ে খুলনা বিভাগেও সবাইকে ছাড়িয়ে যান মোহাম্মদ হাসান। এরপর ঢাকায় গিয়ে ট্রায়াল দিলেও জাতীয় দলে সুযোগ পাননি তিনি। তবে স্প্রিন্টে না পারলেও হ্যান্ডবলে জাতীয় যুবদলে ঠিকই জায়গা করে নেন তিনি। খেলেন বেশকিছু ম্যাচও। ক্রীড়ায় যার এমন উজ্জ্বল পথচলা সেই তিনিই কিনা হারিয়ে গেলেন মাদকের অন্ধকার জগতে। তিন সহযোগীসহ জাতীয় যুব হ্যান্ডবল দলের সাবেক এই খেলোয়াড়কে গ্রেফতার করেছে চুয়াডাঙ্গা থানা পুলিশ।
শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৪৯ টি প্যাথেড্রিন, নগদ টাকা ৪ হাজার ৪০০ টাকা ও একটি দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বড় মসজিদপাড়ার মৃত মওলা বক্সের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক @ বনি (৩৩), একই পাড়ার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে আসলাম হোসেন (৪৭), মৃত আজিজুল হকের ছেলে মোহাম্মদ হাসান (৪৯) ও জোয়ার্দার পাড়ার মতলেব মিয়ার ছেলে তোতা মিয়া (৪৭)।
পুলিশ জানায়, মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে শীর্ষ মাদক কারবারি আবু বক্কর সিদ্দিক বনি ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে হাসানও রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মোট ৬ টি মামলা রয়েছে।
পুলিশ আরও জানায়, বনি চুয়াডাঙ্গায় মাদকের নিজস্ব একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। তাকে এর আগেও একাধিকবার গ্রেফতারে অভিযান চালালেও সে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায়। রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মসজিদ পাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাকিদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর হাসানের তথ্য জানা যায়। হাসানের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানায়, ১৯৮৭ সালে তিনি জাতীয় যুব হ্যান্ডবল দলে খেলেন। ১৯৮৯ পর্যন্ত তিনি এই দলে খেলেন। পরে ভাগ্যান্বেষনে মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমান। সেখানে সুবিধা করতে না পারায় দেশে ফেরেন ২০১৭ সালে। দেশে একটি মুদির দোকান দিলেও তা বন্ধ হয়ে যায় অল্প দিনেই। এরপর বন্ধুদের সাথে মাদকের জগতে পা বাড়ান হাসান। প্রথমে শুধু সেবন করলেও পরে নিজেও বিক্রিতে নেমে পড়েন। যোগ দেন বনির দলে। ২০১৮ সালে একবার গ্রেফতারও হন তিনি। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, আবু বক্কর সিদ্দিক বনি জেলার শীর্ষ মাদক কারবারি। সদর থানায় তার বিরুদ্ধে ৬ টি মামলা রয়েছে। এছাড়া হাসানের বিরুদ্ধে ৬টি,আসলামের বিরুদ্ধে ৪টি,তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা রয়েছে। তাদের আজ দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান ওসি মহসীন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More