জিন তাড়ানোর নামে গরম পানিতে ঝলসে দেয়া হলো স্কুলছাত্রীকে

চুয়াডাঙ্গার কিশোরী হরিণাকুণ্ডুতে ভন্ড কবিরাজের কাছে চিকিৎসা নিতে গিয়ে নৃশংসতার শিকার

স্টাফ রিপোর্টার: ঝিনাইদহ হরিণাকু-ুর ভন্ড কবিরাজ সাহেদ আলীর নৃশংশতার শিকার হয়েছে চুয়াডাঙ্গার এক স্কুলছাত্রী। জ্বীন তাড়ানোর নামে টগবগে ফুটন্ত পানি ওই স্কুলছাত্রীর শরীরে ঢেলে ঝলসে দিয়েছেন সাহেদ। গত সোমবার সকালে ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকু-ু পৌর এলাকার শুড়া গ্রামে ঘটে এ ঘটনা। অভিযুক্ত ভন্ড কবিরাজ সাহেদ আলী (৫৫) একই এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় স্কুলছাত্রীর বাবা আরিফুল ইসলাম বাদি হয়ে হরিণাকু-ু থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। গতরাতে শেখ খবর পাওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত ভন্ড কবিরাজ সাহেদ আলীকে ধরতে পারেনি পুলিশ।

গতকাল বুধবার দুপুরে সরেজমিনে চুয়াডাঙ্গা থানা কাউন্সিলপাড়ায় ওই স্কুলছাত্রীর বাড়িতে গেলে দেখা মেলে এক হৃদয় বিদারক ঘটনা। ঝলসানো শরীর নিয়ে ব্যাথায় কাতরাচ্ছে ওই স্কুলছাত্রী (১৫)। মেয়ের এ অবস্থা দেখে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তার বাবা-মা।

বাবা আরিফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, বেশ কিছুদিন ধরে আমার মেয়ের উপরদৃষ্টি ভাব দেখা যায়। জ্বীনের আছড় লেগেছে ভেবে আমার মেয়েকে নিয়ে ঝিনাইদহের হরিণাকু-ু শুড়া গ্রামের সাহেদ আলীর নিকট যায়। সাহেদ আলী আমার মেয়ের শরীরে থাকা জ্বীনকে তাড়িয়ে দেবে বলে ৬ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি তা পরিশোধ করি। টাকা দেয়ার পর মেয়ের সমস্যা অনেক বড় বলে আরও ১০ হাজার টাকা দাবি করেন সাহেদ আলী এবং আমার মেয়ের শরীরে গরম পানি ছিটিয়ে দিলেই জ্বীন চলে যাবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিছুক্ষণ পর ভন্ড কবিরাজ সাহেদ আলী একটি পাত্রে পানি নিয়ে গরম করতে থাকে। পানি টগবগ করে ফুটতে থাকে। পরে ফুটন্ত টগবগে পানি আমার মেয়ের শরীরে ছিটিয়ে দেয়। আরিফুল ইসলাম অভিযোগ করে আরও বলেন, গরম পানি ছিটানোর সাথে সাথে আমার মেয়ের চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে। আর আমি অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আমার মেয়েকে উদ্ধার করে প্রথমে হরিণাকু-ু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। পরবর্তীতে আমরা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি।

এদিকে, এ ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত ভন্ড কবিরাজের নানা অপকর্মের ঘটনার অভিযোগ ওই এলাকার সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে শোনা যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, ভন্ড কবিরাজ সায়েদ আলী দীর্ঘ ১৭ বছর যাবৎ কবিরাজি করে বিভিন্ন মানুষকে হয়রানি করে আসছেন। স্থানীয়ভাবে অনেকবার অনেক গ্রাম্য সালিসে মিমাংসা হলেও আজ অবদি আইনের আওতায় আসিনি। এ ঘটনার সাথে সাহেদ আলী স্ত্রী পাপিয়া খাতুনও জড়িত বলে স্থানীয়দের বক্তব্য।

হরিণাকু-ু থানার ওসি আক্তারুজ্জামান লিটন জানান, দগ্ধের পরিবার একটি লিখিত অভিযোগ করেছে। এরপর থেকেই কবিরাজ সায়েদ আলী পলাতক। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More