টেকসই উন্নয়ন তরান্বিত করতে সর্বক্ষেত্রেই সমন্বয় প্রয়োজন
উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির মাসিক সভায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান
স্টাফ রিপোর্টার: স্মার্ট চুয়াডাঙ্গা গড়তে সর্বক্ষেত্রে সমন্বয়ের ভিত্তিতে উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেছেন, সড়কসহ সকল অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কার কাজে কোনভাবেই অনিয়ম মেনে নেয়া হবে না। সরকার টেকসই উন্নয়নে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে, উন্নয়ন কাজের গুনগত মান নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তাদের নজরদারি বাড়াতে হবে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির মাসিক সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম। গতসভার কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামীদ রেজা। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিছুজ্জামান লালন, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলি মুনছুর বাবু, জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভুইয়া, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতা, কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক, গণপূর্ত বিভাগের চুয়াডাঙ্গা নির্বাহী অফিসার, এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথ প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের চুয়াডাঙ্গা নির্বাহী, পানি উন্নয়ন বোর্ডের চুয়াডাঙ্গার নির্বাহী প্রকৌশলী, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারসহ জেলার প্রায় প্রতিটি দফতরের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে নিজ নিজ দফতরের চলমান উন্নয়ন কর্মসূচি সম্পর্কে অবহিত করেন। কোথাও কোনো সমস্যা থাকলে তারও চিত্র তুলে ধরা হয়। জেলায় কিছু সড়কের মালিকানা নিয়ে জেলা পরিষদ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের মধ্যে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে তা নিরসনে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়। জেলায় কৃষি পণ্য আবাদসহ গৃহপালিত পশু পালনে কৃষকসহ ছোট বড় খামারিদের সর্বাত্মক সহযোগিতার বিষয়টিও সভায় উঠে আসে। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজাহায় কোরবানীর পশুর সংখ্যা নিয়েও আলোচনা করা হয়। জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তরফে পরিসংখ্যান উপস্থাপন করে বলা হয়, এবারও চুয়াডাঙ্গায় যে পরিমাণ পশু কোরবানী দেয়া হবে তার যোগান স্থানীয়ভাবেই রয়েছে। এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক পশু দেশের রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরেও রফতানি করা হবে।
পশু হাটগুলোতে পশু কেনাবেচায় যাতে কোন প্রকারের সমস্যা না হয়, সে লক্ষ্যে ব্যাংকের বুথও থাকবে। টাকার জাল নোট এবং অজ্ঞানপার্টি নামক প্রতারক চক্রের অপতৎরতা রোধেও পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সজাগ দৃষ্টি রাখবেন। এ তথ্য তুলে ধরে সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক জেলায় শিক্ষার মান বৃদ্ধিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্যে যারা প্রাইভেট টিউশন নিয়ে ব্যাস্ত থাকেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে বিদ্যালয়ে শিক্ষা বিকাশে আন্তরিক করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলাতে হবে। চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের প্রধান সড়ক শহীদ আবুল কাশেম সড়কের রেল লেবেল ক্রসিঙে দুর্ভোগ দূর করতে প্রস্তাবিত ওভারপাস নির্মাণের প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরু করে যথাসম্ভব স্বল্প সময়ে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে পারলে জনদুর্ভোগ হ্রাস পাবে। শহীদ হাসান চত্বরকে যানজটমুক্ত করতে পরীক্ষামূলক প্লাস্টিকের ডিভাডার দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। মাথাভাঙ্গা নদী থেকে কোমর অসারণের পাশাপাশি কোমর দেয়া অসাধু ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া দরকার। তা না হলে তারা কোমর দিয়ে সুযোগের অপেক্ষায় থাকছে। প্রশাসনকে লোকবল দিয়ে তা অপসরণ করতে গিয়ে বাড়তি অর্থ ও সময়ের অপচয় হচ্ছে। এটা হতে দেয়া উচিৎ হবে না। চুয়াডাঙ্গায় মাদক নিরাময় কেন্দ্র নেই। বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে তা স্থাপনের মাধ্যমে মাদকাসক্তদের যেমন সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো প্রয়োজন, তেমনই মাদক বিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে সচেতনমহলকেও এগিয়ে আসা দরকার।
সর্বোপরি চুয়াডাঙ্গা জেলার সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় উন্নয়ন কাজ তরান্বিত করে জেলাবাসীর সার্বিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা দায়িত্বেরই অংশ। বিশেষ করে জেলার সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে স্বাস্থ্য সেবার মান বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে রোগী ও রোগীর লোকজনের মধ্যে সচেতনতা ছড়ানো প্রয়োজন। নিজ নিজ ক্ষেত্রে অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করলে কোন সমস্যাই থাকার কথা নয়। স্মার্ট চুয়াডাঙ্গা গড়তে সকল অফিসারসহ কর্মরত সকলকেই নিজেদেরকে স্মার্ট করে গড়ে তুলতে সকল বিষয়েই আপডেট হতে হবে।