বন্ধুকে গুলি করে হত্যায় বন্ধুর আমৃত্যু কারাদণ্ড

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় উচ্চ শিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়া যাওয়াকে কেন্দ্র করে শিপলু রহমান সাকিব (২০) নামে এক ছাত্রকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। রোববার দুপুরে দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন। আমৃত্যু কারাদ-প্রাপ্ত ওই আসামি হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাদুগড় এলাকার টিএন্ডটি পাড়ার শেখ জহিরুল হকের ছেলে শেখ সরোয়ার তুহিন (৩৫)। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৫ আগস্ট রাতে শিপলু রহমান সাকিবের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করে তুহিন। হত্যাকান্ডের পর লাশ দৌলতপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের বিল বোয়ালিয়া ও কিশোরীনগর বিলের মাঝখানে ফেলে রাখে। পরদিন ২৬ আগস্ট সকালে দৌলতপুর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। একই দিন দুপুরে দৌলতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। নিহত শিপলু রহমান সাকিব নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ইসলামগাথি এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য তিনি রাজশাহীর একটি ম্যাসে উঠেছিলো। সেখানে তুহিনের সঙ্গে তার পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয়। আসামি তুহিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির সুযোগ করে দেবে বলে শিপলুর কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু সে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির সুযোগ করে দিতে ব্যর্থ হয়। পরে অভিনব কৌশলে শিপলুর কাছ থেকে পুনরায় আরও চার লাখ টাকা নেয় অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চ শিক্ষার সুযোগ করে দেয়ার কথা বলে। এরপর বিমান ভাড়া এবং অন্যান্য খরচের জন্য এক লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়ে শিপলুকে ভেড়ামারা রেলওয়ে স্টেশনে আসতে বলেন তুহিন। আসামির কথামতো শিপলু ভেড়ামারা রেলওয়ে স্টেশনে গেলে তাকে সঙ্গে নিয়ে দৌলতপুর উপজেলায় যায় তুহিন এবং রাতে শিপলুকে গুলি করে হত্যা করে বিল বোয়ালিয়া ও কিশোরীনগর বিলের মাঝখানে ফেলে রাখে। তুহিন ২৩ হাজার টাকা দিয়ে পিস্তলটি ভেড়ামারা এলাকা থেকে কিনেছিলো। মামলার তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ হরেন্দ্র নাথ সরকার দ-বিধির ৩০২/৩৪ ধারায় আসামির বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ২৪ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। এ মামলায় ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রোববার আদালত এ রায় দেন।
এদিকে শিপলুর স্বজনরা রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, শিপলুকে গুলি করে হত্যা করে তুহিন। দশ বছর আদালতে মামলার কার্যক্রম শেষে আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক। এ রায়ে আমরা খুবই খুশি।
আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আসামি তুহিনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড- দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More