ভ্যানচালক ঘরজামাই গাঁজা বিক্রেতা কিতাবকে কুপিয়ে ও গলা কেটে খুন

দামুড়হুদার কাদিপুরে অজ্ঞাত দুবৃর্ত্তদের নৃসংশতা : তদন্তে পুলিশের একাধিক টিম

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় ভুট্টাক্ষেত থেকে কিতাব আলী নামের এক ভ্যানচালকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার সকালে উপজেলার হাউলি ইউনিয়নের কাদিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ইসহাক মণ্ডলের ভুট্টাক্ষেত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ধারণা করছে, মঙ্গলবার রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা কিতাব আলীকে (৫০) কুপিয়ে হত্যা করে লাশটি ভুট্টাক্ষেতে ফেলে গেছে। নিহত কিতাব আলী চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। তবে তিনি প্রায় ৩০ বছর ধরে উপজেলার হাউলি ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামের স্কুলপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। মাদক কারবারের পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। ঘটনাটি অধিকতর তদন্তে কাজ করছে সিআইডি ও পিবিআই পুলিশসহ জেলা পুলিশের একাধিক টিম।

পুলিশ জানায়, বুধবার সকালে স্থানীয় লোকজন মাঠে যাওয়ার সময় লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশের সুরতহাল করেন। মাদক ব্যবসার পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

কিতাব আলীর স্ত্রী রাবেয়া খাতুনের বরাত দিয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাত ৯টার দিকে কিতাব আলী বাড়ি থেকে বের হন। এরপর সারারাত তিনি আর বাড়িতে ফেরেননি। বুধবার সকালে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে ইসহাক ম-লের ভুট্টাক্ষেতে কিতাব আলীর রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন।

এদিকে খবর পেয়ে পুলিশের দামুড়হুদা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জাকিয়া সুলতানা এবং দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তৌহিদুল ইসলাম লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহজামাল হোসেন জানান, নিহত কিতাব আলী পার্শ্ববর্তী জীবননগর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের সন্তান। তার পিতার নাম আবুল হোসেন। তিনি এই গ্রামে প্রায় ত্রিশ বছর ধরে ঘরজামাই হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন। তার শ্বশুরের নাম মসলেম খা। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে। দুই মেয়েরই বিয়ে হয়ে গেছে। একমাত্র ছেলে অনিক (৯) কাদিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।

দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ি কাদিপুরে ঘরজামাই থাকতেন কিতাব আলী। দীর্ঘদিন থেকে তিনি এবং তার স্ত্রী মাদক কারবার করে আসছিলেন। মরদেহের পাশ থেকে দুই পুরিয়া গাঁজা ও গাঁজা সেবনের সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে। কিতাব আলী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা। তিনি বলেন, খুনের রহস্য উদঘাটনের জন্য বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে তদন্তের কাজ চলছে। খুব শিগগিরই এ ঘটনার রহস্য উন্মোচনসহ হত্যাকা-ে জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি। এদিকে নিহত কিতাব আলীর লাশের ময়না তদন্ত শেষে রাত ৯টার দিকে দাফন সম্পন্ন করা হয়।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More