মানচিত্রের ৪৮টি লাইটের বক্স ভাঙা

সৌদর্য হারাচ্ছে মুজিবনগর কমপ্লেক্স : 

মুজিবনগর প্রতিনিধি: করোনার প্রাদুর্ভাবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে মুজিবনগর কমপ্লেক্স। আসতে শুরু করেছে পর্যটক। তবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে ও নানা অব্যবস্থাপনায় সৌন্দর্য হারিয়েছে মুজিবনগর কমপ্লেক্স। বিশ্বের দীর্ঘতম বাংলাদেশের মানচিত্রটির চারপাশের বিভিন্ন অবকাঠামো ভাঙতে বসেছে। মরাগাছ আর আগাছাই জৌলুস হারিয়েছে আমের বাগানটিও। যথাযথ দেখভালের অভাবে এমনটিই হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় অনেকে।
গত বছর ২৬ মার্চ থেকে করোনার প্রাদুর্ভাবে মেহেরপুরে লকডাউন শুরু হয়। এরপর থেকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মুজিবনগরসহ মেহেরপুরের সবকটি পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। যা সম্প্রতি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্বের দীর্ঘতম বাংলাদেশের মানচিত্রের চারপাশের ৪৮টি লাইটের বক্স সবগুলোই ভাঙা। চুরি হয়েছে বাল্ব ও হোল্ডার। আবার কোথাও কোথাও বৃষ্টির পানিতে রঙ হারিয়েছে দেয়ালগুলো। পরিচর্যা নেই বাগানটিতেও। বাগানের পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে বাগানের সৌন্দর্য থেকে।
শত্রুবাহিনীর নজর এড়াতে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরের আম্রকাননে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ নেয়। এই আম্রকাননকে ঘিরে গড়ে উঠেছে স্মৃতিসৌধ, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কমপ্লেক্স এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্মৃতি মানচিত্র। মুজিবনগরের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ আর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসেন এখানে। এ স্থানের প্রধান আকর্ষণ আমবাগান। এই বাগানেই অযন্ত অবেহেলায় পড়ে আছে মৃত গাছ। সেই সাথে পুরো বাগানজুড়ে আগাছাই ভরপুর।
মুজিবনগরের স্থানীয় কয়েজন ব্যক্তি জানান, দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার ফলে অসাধু কিছু মানুষের আনাগোনা থাকে মুজিবনগরে। তারাই মূলত এইসব লাইটের বক্সগুলো ভেঙেছে।
৩৩ জন আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যের ২৪ ঘন্টা নজরদারি ও বসানো আছে সিসি (ক্লোজ সার্কিট) ক্যামেরা। তারপরও অসাধুদের আনাগোনা, ভাঙছে অবকাঠামো। মুজিবনগরের সুনাম ধরে রাখতে সারা বছরই কমপ্লেক্সটা সুন্দর ভাবে সাজিয়ে রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন দর্শনা থেকে বেড়াতে আসা সাংবাদিক ফরহাদ হোসেন। মুজিবনগরের আনসার প্লাটুন কমান্ডার আব্দুস সাত্তার বলেন, আমরা ২৪ ঘন্টা নজরদারিতে রাখি। ভেঙে যাওয়া লাইটগুলোর জন্য আমরা গণপূর্তকে অবহিত করেছি ।
মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ পরিচর্যাকারী সুভাস মল্লিক জানান, মুজিবনগর কমপ্লেক্স বাংলাদেশের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক স্থান। এই জায়গাটি সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও সাজিয়ে রাখা দরকার। কারণ এখানে দু-দূরান্ত থেকে পর্যটক আসে। এই জায়গাটি অপরিষ্কার থাকলে নিজের কাছেও খারাপ লাগে।
মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজন সরকার জানান, মুজিবনগর কমপ্লেক্সের পরিষ্কার পরিছন্ন আমরা নিয়মিত ভাবে করছি। জেলা প্রশাসন সার্বিকভাবে দেখভাল করছে। এছাড়াও মুজিবনগরের অবকাঠামো নজরদারি রাখার জন্য আনসার সদস্য আছে, সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। তারপরও কোন জায়গায় যদি ত্রুটি থাকে আমরা বিষটি দেখবো।
গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী সম্ভু রাম পাল বলেন, অসাধু কিছু মানুষ এগুলো ভেঙেছে। বর্তমানে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভাঙা অংশগুলো মেরামতের জন্য আমরা এর আগেও একবার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে সেটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। আশা করছি আগামী অক্টোবরের মধ্যেই আমরা ভাঙা অংশসহ বাল্বগুলো মেরামত করতে পারবো।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More