মেহেরপুরে করোনায় মারা গেছেন ৫জন : নতুন আক্রান্ত ৮৮
শহরাঞ্চলে লকডাউন পালিতে হলেও গ্রামাঞ্চলে ঢিলেঢালা
মেহেরপুর অফিস: করোনা সংক্রমণে প্রতিদিন মেহেরপুরে মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন মুখ। দিনে দিনে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গেলো ২৪ ঘণ্টায় মেহেরপুর জেলায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত ৫ জন রোগী মারা গেছেন। এদের মধ্যে ৩ জন মেহেরপুর সদর, একজন গাংনী ও অপর একজন মুজিবনগর উপজেলার বাসিন্দা। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৮ জন। আক্রান্তের হার শতকরা ৫২.৭০ ভাগ। এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৬৮ জন। আর আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৬৩৪ জন। এতে মেহেরপুরে সচেতন মানুষের মাঝে বাড়ছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা। মেহেরপুরের লকডাউন কঠোরভাবে পালনে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। সাথে যোগ হয়েছে র্যাব, সেনা সদস্য ও বিজিবি। গতকাল রোববার জেলা ও উপজেলা শহরে সফলভাবে লকডাউন পালিত হয়েছে। তবে গ্রামে সফলভাবে লকডাউন পালিত হচ্ছে না বলে অনেকে দাবি করেছেন।
গেলো ২৪ ঘণ্টায় মেহেরপুর জেলায় নতুন করে ৫ জন করোনা রোগী মারা গেছেন। এরা হলেন ঢাকার বনানী এলাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন মেহেরপুর শহরের স্টেডিয়ামপাড়ার বাসিন্দা হোমিও চিকিৎসক মুজিবনগর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. ইদ্রিস আলী (৭২), মেহেরপুর ২৫০ শষ্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেহেরপুর সদর উপজেলার রাঁধাকান্তপুর গ্রামের জামাল উদ্দিনের স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিন (৬০) ও পিরোজপুর গ্রামের খয়ের উদ্দিনের ছেলে রজব আলী (৬০) এবং গাংনী উপজেলার শালদা গ্রামের আলীশা ম-লের স্ত্রী আয়েশা খাতুন (৬৫) ও মুজিবনগর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের আবুল কাশেম ওরফে কাঙালীর স্ত্রী নূরুন্নাহান (৭০)।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় মেহেরপুর জেলায় নতুন করে ৮৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে মেহেরপুর সদর উপজেলায় ৫২জন, গাংনী উপজেলায় ৩২জন ও মুজিবনগর উজেলায় ৪ জন রয়েছেন। এ নিয়ে বর্তমানে জেলায় মোট করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬৩৪ জন। গতকাল রোববার রাতে সিভিল সার্জন ডা. মো. নাসির উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মেহেরপুর সিভিল সার্জন অফিস থেকে আরো জানা যায়, কুষ্টিয়া ল্যাব থেকে ১৬৭টি নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৮৮ জন করোনা রোগী চিহ্নিত হয়েছেন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন মোট ৬৩৪ জন করোনা রোগীর মধ্যে সদর উপজেলার বাসিন্দা ২২৬ জন, গাংনী উপজেলার বাসিন্দা ৩০০ জন ও মুজিবনগর উপজেলার বাসিন্দা ১০৯ জন। এছাড়া ট্রান্সফার্ড হয়েছেন ১১৫ জন। এদের মধ্যে সদর উপজেলার ৭৩ জন, গাংনী উপজেলার ১৭ জন ও মুজিবনগর উপজেলার ২৫ জন রয়েছেন। এছাড়া এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এক হাজার ৩৬২ জন। যার মধ্যে সদর উপজেলায় ৭৬১ জন, গাংনী উপজেলায় ৪২০ জন ও মুজিবনগর উপজেলায় ১৮১ জন রয়েছেন। এছাড়া এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৬৮ জন। যার মধ্যে সদর উপজেলায় ২৭ জন, গাংনী উপজেলার ২৫ জন ও মুজিবনগর উপজেলার ১৬ জন রয়েছেন।
এদিকে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় দফায় উদ্বেগজনক হারে সংক্রমণ বৃদ্ধিতে মেহেরপুর জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে। মাঠে নেমেছে র্যাব, সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা।
রোববার সকালের দিকে মেহেরপুর পুলিশের একটি দল শহরের হোটেল বাজার মোড় এবং পুরাতন বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে সচেতনতামূলক প্রচারণা ও মাস্ক বিতরণ করেছে। এ সময় যেসব পথচারী মাস্ক পরেননি তাদেরকে মাস্ক পরতে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন থানা পুলিশের প্রচারণা টিম। এছাড়াও মাস্কবিহীন পথচারীদেরকে পুলিশের পক্ষ থেকে মাস্ক পরিয়ে দেয়া হয়।
এদিকে সচেতনতামূলক প্রচারণাকালে মেহেরপুরে পুলিশ সদস্যরা বলেন, বর্তমান সময়ে হঠাৎ করোনার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। করোনার সংক্রমণ রোধে আমাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।