রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের কৃষিতে প্রভাব পড়বে

চুয়াডাঙ্গায় বিএডিসির নতুন অফিস ভবন উদ্বোধনকালে চেয়ারম্যান এএফএম হায়াতুল্লাহ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন-বিএডিসির বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের যুগ্ম পরিচালকের নতুন অফিস ভবনের উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে বিএডিসি চেয়ারম্যান এএফএম হায়াতুল্লাহ গতকাল সোমবার দুপুরে নূরনগর খামার চত্বরে ৬৩ লাখ ৭৬০ টাকা ব্যয়ে নির্মিত দোতলা এই ভবন ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন শেষে বিএডিসি চেয়ারম্যান খুলনা বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বিএডিসি চেয়ারম্যান বাংলাদেশের কৃষিকে এগিয়ে নিতে বিএডিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি এ সময় বলেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে রাসায়নিক সারের মূল্য বৃদ্ধি ঘটবে। এতে বাংলাদেশের কৃষিতে বড় ধরণের প্রভাব পড়তে পারে।’
বিএডিসি ঢাকার অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (ব্রিপস) আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন নূরনগর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের যুগ্মপরিচালক সেলিম হায়দার। অন্যান্যের মধ্যে মহাব্যবস্থাপক (বীজ) প্রদীপ চন্দ্র দে, ক্ষুদ্রসেচ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ ও খামার ব্যবস্থাপক রিপন কুমার ম-ল বক্তব্য রাখেন।
অফিস ভবন উদ্বোধন শেষে ভবনের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখেন এবং খবনের সুদৃশ্য সভাকক্ষে স্থানীয় কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন। এরআগে প্রধান অতিথি নূরনগর খামারে পৌঁছুলে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ সময় একটি নারিকেল গাছের গাছের চারা রোপণ করেন তিনি। ভবন উদ্বোধনকালে দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা এবাদত হোসেন।
এ সময় মেহেরপুর চিৎলা খামারের যুগ্মপরিচালক রেজাউল হক, উপপরিচালক দেলোয়ার হোসেন, কৃষিবিদ একরামুল হক, মীর্জা শফিকুল ইসলাম,খালেদা ইয়াসমিন, হামিদুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম, শামিম হায়দার, খাইরুল ইসলাম, মাহবুব আলম ও লিয়াকত আলী উপস্থিত ছিলেন।
চুয়াডাঙ্গার নূরনগর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে যুগ্মপরিচালক সেলিম হায়দার বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র চুয়াডাঙ্গায়। ১২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন বীজ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ৮টি গোডাউনে আছে। ১২ হাজার চাষি আছে। ৮ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন বীজ উৎপাদিত হয়। ৩ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন আপদকালিন মজুদ থাকে। ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন আলুবীজ উৎপাদিত হয়। ২ হাজার মেট্রিক টন সার রাখার জন্য গুদামের কাজ এগিয়ে চলেছে। লোকবল সমস্যা, ড্রাইভার সমস্যা ও গুদামগুলো পুরাতন হয়ে গেছে। এগুলো সংস্কার করা দরকা।
মতবিনিময় সভায় বিএডিসি চেয়ারম্যান এএফএম হায়াতুল্লাহ আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষিজীবীদের উন্নয়নে গুরুত্ব দিতেন। দেশে ৭৮৬ কোটি টাকা ছিলো প্রথম বাজেট। এরমধ্যে ১০১ কোটি টাকা কৃষির জন্য বরাদ্দ ছিলো। বিএডিসির মাধ্যমে সেচ ব্যবস্থা না করনে, তাহলে এতো অগ্রগতি হতো না। কৃষি-সেচ স্থাপনের কথা পবিত্র আয়াতে আছে। প্রবাহমান পানি কেউ ১ ফোঁটা অপচয় করো না। বিএডিসির কৃষি আধুনিক করার জন্য ৩টি বিষয় কাজ করে। এগুলো হলো, বীজ, সার ও সেচ। গণমাধ্যম কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তারা চিন্তা করেছেন কৃষির উন্নয়নে বিশেষ রিপোর্ট করার জন্য। মানুষ সভ্যই হয় কৃষির মাধ্যমে। বর্তমান সরকার যে প্রকল্পগুলো দিয়েছেন সেইকাজগুলো সুন্দরভাবে চলছে। করোনার কারণে মানুষকে জানানো যায়নি। প্রধানমন্ত্রী বর্তমান কৃষিমন্ত্রীর মাধ্যমে কাজগুলো বাস্তবায়ন করছেন। এক কেজি ইউরিয়া সার কৃষক পর্যায়ে ১৬ টাকা কেজি। এতে সরকার ভূর্তকি দেয় কেজিতে ৮০ টাকা। রাসায়নিক সার তৈরি হয় রাশিয়ায়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চললে প্রতি কেজি সারের দাম ২০০ টাকা থেকে ২৩০ টাকা হয়ে যাবে। ক্ষুধা নিবারণের জন্য ভাদ্য কৃষি থেকে আসে। আমাদের সভ্যতা দেয় কৃষি। ঘরবাড়ি বানায় কৃষি। দুর্নীতিকে ঘৃণা করা করা শিখবো আমরা। আরো এগুতে পারবো। ইউরোপ ও আমেরিকা এভাবে এগিয়েছে। আমাদের সীমিত সম্পদ। এসম্পদ কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More