চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি হাইস্কুলে পুরস্কার বিতরণকালে এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার
স্টাফ রিপোর্টার: জমকালো আয়োজনে চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি হাইস্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া, সংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন ঘোষণা করেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার বলেন, এটি ভাষার মাস। ১ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের রায় বাংলায় লেখা হয়েছে। আমার খুব ভালো লেগেছে। এই মাসটিকে ভুলে গেলে চলবে না। ভিজে স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে অনুষ্ঠানে আসতে পেরে ভালো লাগছে। এই মাঠটিও ঐতিহ্যবাহী মাঠ। এই মাঠ থেকে বহু নামি দামি খেলোয়াড় বের হয়েছে। সুস্থ সবল সুন্দর মন ও স্বাস্থ্যের জন্য খেলাধুলার বিকল্প নেই। খেলাধুলার মাধ্যমে পৃথিবীব্যাপী নাম করা যায়। আজকে খেলাধুলার কারণে মেসি, পেলেকে চিনি। শারীরিক সুস্থতার জন্য খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম। এ জন্য লেখাপড়ার পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের খেলাধুলার দিকে অভ্যস্ত করতে হবে। স্মার্ট জাতি গঠনে স্মার্ট শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। যারা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পাচ্ছো, তাদেরকে অভিনন্দন। যারা পুরস্কার পাওনি, তারা আগামীতে আরও ভালো করতে হবে। তিনি বলেন, সরকারিভাবেই দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এছাড়া প্রতিবছর মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুইবার ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। একটি শীতকালীন অপরটি গ্রীষ্মকালীন। এই খেলাধুলাগুলো পরিচালনায় প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে একজন করে ক্রীড়া শিক্ষক নিয়োগ দেয়া আছে। আমি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলবো এসব ক্রীড়া শিক্ষকদের ক্লাস নেয়ার ভার কিছুটা কমিয়ে তাদেরকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে খেলাধুলা ও শরীর চর্চার ব্যবস্থা করাতে হবে।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ সভাপতি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান (পিপিএম সেবা)। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আনোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) কবীর হোসেন, জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিল-আরা চৌধুরী, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজীব হাসান কচি, সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান চাঁদ, প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি শাহ আলম সনি। অতীতের আগমনের শুরুতে বিদ্যালয়ের চৌকশ বয় স্কাউটদের গার্ড অব এবং পরিপার্টি মার্চ পার্সের আয়োজন সকলকে মুগ্ধ করে। উদ্বোধনীস্থলে অতীতের আসন গ্রহণ পর্ব শেষে ফুলেল শুভেচ্ছা, ব্যাজ পরিধান এবং পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা, ক্রীড়া পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর অতিথিবৃন্দের শ্বেত কবুতর অবমুক্ত করণ ও মশাল প্রজ্বলনের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কার্যক্রম মনোমুগ্ধকর হয়ে ওঠে। প্রধান অতিথির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা, বিশেষ অতিথির বক্তব্য ও অনুষ্ঠানের সভাপতির উদ্বোধনী পর্বের সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শেষ হয়।
উদ্বোধন ঘোষণার পর শুরু হয় বিদ্যালয়ের দিবা ও প্রভাতী শাখার ২৮টি ইভেন্টের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সংস্কৃতিক ইভেন্টের ২৮টি প্রতিযোগিতা। অবশ্য পূর্বেই অনুষ্ঠিত হওয়া কিছু প্রতিযোগিতার পুরস্কারও অতিথিবৃন্দ তুলে দেন বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে। এরপর দিনব্যাপী চলতে থাকে অন্যান্য প্রতিযোগিতা এবং প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়ার কাজ। আমন্ত্রিত অতিথিদের বিদায়ের পর বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনসহ বিদ্যালয়ের সকল সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ ও সহকারী শিক্ষকগণ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
একক নৈপুণ্য দেখিয়ে দিবা শাখার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসলিম আল মাহমুদ ব্যক্তিগত চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করে। তাসলিম ৪০০ মিটার দৌড়, লৌহ গোলক, হাই জাম্প ও লং জাম্পে প্রথম স্থান অধিকার করে। প্রভাতী শাখার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিয়াম সাদমান তিনটি বিষয়ে কৃতিত্ব দেখিয়ে ব্যক্তিগত চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করে। সিয়াম ৪০০ মিটার দৌড়, লং জাম্প প্রতিযোগিতায় প্রথম এবং লৌহ গোলক নিক্ষেপে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। এছাড়া ষষ্ঠ শ্রেণীর ‘খ’ শাখার শিক্ষার্থী আ. ন. ম ইরফান একিন উপস্থিত বক্তৃতা ও শুদ্ধস্বরে জাতীয় সঙ্গীতসহ তিনটি বিষয়ে পুরস্কার লাভ করে। বার্ষিক ক্রীড়া ও সংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা সুষ্ঠু সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করেন বিদ্যালয়ের দিবা শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, সিরিয়ার শিক্ষক মামুনুর রশিদ, রফিকুল ইসলাম লিটন, আজাদ, রেজাউল ইসলাম প্রমুখ।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.