চুয়াডাঙ্গা পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে বৃহত দুটি মনোনয়ন এবং প্রার্থিতা নিয়ে নানা আলোচনা
স্টাফ রিপোর্টার: কেন্দ্রের এক সিদ্ধান্তেই পাল্টে গেছে চুয়াডাঙ্গা পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার চিত্র। দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনী মাঠচষে আলোচনার শীর্ষে থাকা রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন নিজের প্রার্থিতার বদলে দলীয় চূড়ান্ত মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকনের প্রার্থিতা দাখিল করলেন। গতকাল জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকনকে সাথে নিয়ে পৌর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সাথে জেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মনোনয়ন পেশ করেন নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে। অপরদিকে বর্তমান মেয়র জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ আহ্বায়ক ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু মনোনয়নপত্র পেশ করেননি। ফলে তিনিও থাকছেন না প্রার্থী তালিকায়। তবে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শরীফ হোসেন দুদু প্রার্থিতা পেশ করেছেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন এবারের পৌর নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার লক্ষে আগেভাগেই পরিকল্পিতভাবে মাঠে নামেন। তিনি পেশাজীবী সংগঠন থেকে শুরু করে পৌর আওয়ামী লীগের প্রায় সকল ইউনিটের নেতাকর্মীদের নিয়ে বসে উঠে এসেছিলেন আলোচনায়। পৌর আওয়ামী লীগ তাকে প্রার্থী করার জন্য প্রস্তাবও দিয়েছেলো। গত শনিবার কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড মনোনীতও করেছিলো। তিনি রোববার চুয়াডাঙ্গায় ফিরলে তাকে সংবর্ধিতও করা হয়। পরদিন সোমবারই বদলে যায় চিত্র। তাকে বাদ দিয়ে দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে পৌর আওয়ামী লীগেরই প্রস্তাবিত তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা পৌর কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকনকে চূড়ান্ত করে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ঘটতে থাকে নাটকীয় নানা ঘটনা। পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মালক খোকনকে নিয়ে সন্ধ্যার পর জেলা যুবলীগ মিছিল করে। গতকাল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপির নিকট দোয়া নেন। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, জেলা যুবলীগের আহ্বায়কসহ দলীয় নেতাকর্মীরা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ আহ্বায়ক ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন কিনা তা জানার আগ্রহে অধীর হয়ে থাকেন অনেকে। শেষপর্যন্ত তিনিও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শরীফ হোসেন দুদু মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন। ২৮ ডিসেম্বর ভোট। অপরদিকে বিএনপি মনোনীত করেছে পৌর কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মনি তিনি গতকাল মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। জেলা বিএনপি চুয়াডাঙ্গা পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করার জন্য প্রস্তাব করেছিলো মজিবুল হক মালিক মজুকে। তিনি দলীয় মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তিনি প্রার্থী থাকবেন বলে জানিয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলেছেন, জেলা বিএনপি আমার সাথে রয়েছে। মজিবুল হক মালিক মজু অনেক আগে থেকেই নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় মাঠে নেমে আলোচনায় উঠে আসেন।
চুয়াডাঙ্গা পৌর নির্বাচনে বর্তমান এবং সাবেক মেয়র প্রার্থী থাকছেন না। এদের প্রার্থী না হওয়া এবং বিএনপির আগাম প্রচার প্রচারণায় নাম মজিবুল হক মজুর দলীয় প্রার্থিতা না পাওয়ায় বিষয়টি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকমহলে প্রধান আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে ভোটের হিসেবও কষছেন উৎসুক ভোটারদের অনেকে।