বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কঠোর হতে হবে

সম্পাদকীয়

নিত্যপণ্যের বাজার কোনোভাবেই স্বাভাবিক হচ্ছে না। একেক সময় একেক অজুহাত তুলে বিক্রেতারা পণ্যেরে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। কয়েকদিন ধরেই বাজারে ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি ডিমের দামে বেশ অস্থিরতা চলছে। একটি মাফিয়া চক্র গত ১৫দিনে ডিম ও মুরগির বাজার থেকে ৫১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। চক্রটি পরিকল্পিতভাবে ডিম, মুরগি ও বাচ্চার দাম বাড়িয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা মুনাফা করেছে। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। তিনি বলেন, দেশের পোল্ট্রি খাত মাফিয়া চক্রের হাতে চলে গেছে। ১০-১২টি কোম্পানি যৌথভাবে এ চক্র তৈরি করেছে। চক্রটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে সারাদেশে প্রান্তিক খামারিদের ধ্বংস করতে চায়। বর্তমানে দেশে ডিম ও মুরগির বাজারে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে এটি বড় কোম্পানিগুলো জেনেশুনে করছে। এ দেশের অতিমুনাফালোভী অসৎ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এটা সিন্ডিকেটের কারসাজি এবং বাজার সংস্কৃতির একটি উজ্জ্বল অংশ। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাদের অজুহাতের শেষ নেই। তারা একেক সময় একেক অজুহাত দাঁড় করায়। তারা খাদ্যে ভেজালও দেয়। এই চিত্র বদলানো কঠিন।

আমরা মনে করি, বাজার সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হলে চলবে না। তাদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে কখনোই নজর দেয় না। এরা বাজারসন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রুত ধনী হওয়া যায় সেটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। বাজারে মূল্য তালিকা টাঙিয়ে যথাযথ তদারকির ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের অসহায় জনগণকে জিম্মি করে তারা বারবার পকেট কাটবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এর আগে তারা চাল, চিনি ও পেঁয়াজের বাজার অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিলো। লবণের ক্ষেত্রেও চেষ্টা চালিয়েছিলো, সফল হয়নি। ওই সময়ে ৪০ টাকার পেঁয়াজ ২৫০ টাকা কেজিতে উঠেছিলো। এবার তারা চাল, তেল, ডিম ও মুরগির দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে। এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। সরকার কঠোর না হলে ভবিষ্যতেও তারা একই কাজ করবে। বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা মনে করি, বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতোদিন না ঘটবে ততদিন নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে। সারা বছর বাজার মনিটরিং করতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারের কার্যকর কঠোর উদ্যোগই কেবল পারে জনগণকে হয়রানি ও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More