স্কুলে ভর্তি অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে

সম্পাদকীয়

ভর্তি বাণিজ্য ও দুর্নীতি ঠেকাতে দেশের সরকারি স্কুলগুলোতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি শুরু হয়েছে অনেক দিন আগেই। সম্প্রতি এ বিষয়ে আরও একটি ইতিবাচক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তা হলো, বেসরকারি স্কুলের ভর্তি কার্যক্রমও সম্পন্ন হচ্ছে সরকারি তত্ত্বাবধানে। এসব উদ্যোগের ফলে স্বার্থান্বেষী মহলের দুর্নীতির পথ সঙ্কুচিত হলেও কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নীতিমালা লঙ্ঘন করে বাণিজ্যে মেতে উঠেছে।

সরকারি ভর্তি নীতিমালা অমান্য করে বাণিজ্যে মেতে ওঠা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে; ইতোমধ্যে ঢাকায় ১৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্তে কয়েকটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। দুঃখজনক হলো, ভর্তি বাণিজ্য বন্ধে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের নানারকম উদ্যোগের ফলেও এ বিষয়ে কাক্সিক্ষত সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। স্কুলে ভর্তি নিয়ে এখন আর আগের মতো শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভয়াবহ যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে না। তবে প্রতিবছর এ বিষয়ে নীতিমালা লঙ্ঘনের যেসব অভিযোগ ওঠে, সেগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত না হলে পরিস্থিতি আবার আগের মতো ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।

নতুন শিক্ষাবর্ষ সামনে রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মন্ত্রণালয়ের ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী ভর্তি ফি ও অন্যান্য ফি নিচ্ছে কিনা তা যাচাই করতে সরেজমিন পরিদর্শনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বাস্তব পরিস্থিতির কতোটা অবনতি হলে কর্তৃপক্ষকে এমন উদ্যোগ নিতে হয় তা সহজেই অনুমেয়। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনৈতিকভাবে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে থাকে, সেসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে কী বার্তা যায়? যারা এমন কর্মকা-ের সঙ্গে যুক্ত থাকেন তারা যদি শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার শিক্ষা দেন, তাহলে তা শিক্ষার্থীদের মননকে কতোটা স্পর্শ করবে? কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্যসহ যে কোনো অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেলে দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

বস্তুত এ সমস্যার মূলে রয়েছে দেশে যথেষ্ট মানসম্পন্ন বিদ্যালয়ের অভাব। অভিভাবক ও বাবা-মা স্বভাবতই মানসম্পন্ন বলে পরিচিত স্কুলে তাদের সন্তানদের ভর্তি করতে ছোটাছুটি করেন। কাজেই দেশে মানসম্পন্ন বিদ্যালয়ের অভাব দূর করার পদক্ষেপও নিতে হবে। তা না করে একটার পর একটা নীতিমালা প্রণয়ন করা হলে তাতে এ খাতের দুর্নীতি ঠেকানো যাবে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। দেশে বহু মানুষ কম খেয়ে বেশি পরিশ্রম করে সন্তানদের শিক্ষা উপকরণ জোগাড় করে থাকেন। কাজেই নিজেদের ভাবমূর্তি অক্ষুণœ রাখার স্বার্থে শিক্ষক সমাজের উচিত নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে সব ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More