করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও ১৫ জনের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার: জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট বা করোনাভাইরাসে সংক্রমণের (কোভিড-১৯) উপসর্গ নিয়ে সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার দেশের ১২ জেলায় আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বগুড়ায় ব্যাংক কর্মকর্তা ও পল্লী চিকিৎসকসহ তিনজন, পটুয়াখালীতে দুজন, বরিশালে শিক্ষা কর্মকর্তা, হবিগঞ্জে যুবলীগ নেতা, মাদারীপুর ও যশোরে দুজন ব্যবসায়ীসহ মুন্সীগঞ্জ, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, ফেনী, নরসিংদী ও খুলনায় একজন করে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
বগুড়ার আদমদীঘিতে করোনা উপসর্গ নিয়ে সোমবার রাতে ব্যাংক কর্মকর্তা (৪৩) ও পল্লী চিকিৎসকের (৫৫) মৃত্যু হয়েছে। আদমদীঘি উপজেলায় গত দুইদিনে করোনা উপসর্গ নিয়ে তিন ব্যক্তির মৃত্যু হলো। অপরদিকে ওই পল্লী চিকিৎসক গত চার দিন আগে শরীরে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আইসোলেশনে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার রাত ৯টায় তার মৃত্যু হয়। এছাড়া, বগুড়ার বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কাশি-শ্বাসকষ্ট নিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়। পটুয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার সকালে তাদের মৃত্যু হয়। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. কামরুজ্জামান জানান, গত ১৩ জুন শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন শহরের টাউন জৈনকাঠী এলাকার এক নারী (৬৫) ও শহরের নন্দকানাই এলাকার এক বাসিন্দা (৬০)। পরে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বরিশালে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে একজন শিক্ষা কর্মকর্তার (৪৮) মৃত্যু হয়েছে। ওই ব্যক্তির গ্রামের বাড়ি বরগুনার তালতলী উপজেলায়। হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে এক যুবলীগ নেতার (৪৮) মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে মারা যান তিনি। মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক ব্যবসায়ীর (৫৫) মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তিনি মাদারীপুর পৌরসভার বাসিন্দা। যশোরের অভয়নগর উপজেলায় করোনার উপসর্গ নিয়ে এক ব্যবসায়ীর (৬৫) মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। তিনি নওয়াপাড়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের এক ব্যক্তি (৫৫) জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা গেছেন। সোমবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু হয় তার। ওই ব্যক্তির বাড়ি উপজেলার বৌলতলী ইউনিয়নের মাইজগাঁও পয়সা এলাকায়। তবে তিনি পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে থাকতেন। করোনা উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে থাকা এক নারীর (৩৮) মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত নারীর ভাই জানান, তার বোনের দীর্ঘদিন জ্বর ও রক্তশূন্যতা ছিলো। গ্রাম্য ডাক্তারের পরামর্শে তাকে শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ার তাকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তার মৃত্যু হয়েছে। করোনা উপসর্গ নিয়ে কুষ্টিয়ায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তি (৩৫) মারা যান। তিনি শহরের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রুহুল আমিন জানান, ওই ব্যক্তিকে সোমবার দুপুরে সেখানে ভর্তি করা হয়। পরে সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। তার শরীরে করোনার উপসর্গ ছিলো বলে ওই চিকিৎসক জানান। তার নমুনা সংগ্রহ করে কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ফেনীতে মারা গেছেন ৭০ বছর বয়সি এক নারী। সোমবার রাতে ফেনী সদর হাসপাতালে তিনি মারা যান বলে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ইকবাল হোসেন ভূঞা জানান। তিনি বলেন, জেলা শহরের শান্তিধারা আবাসিক এলাকার এই নারী সোমবার রাতে জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়। আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভর্তির কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়। ওই নারীর ছেলে ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মৃত্যুর পর পরীক্ষার জন্য ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। নরসিংদীতে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার সকালে করোনা উপসর্গ নিয়ে জেলা হাসপাতালে ভর্তি এক মিল শ্রমিকের (৪০) মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তি পশ্চিম ব্রাহ্মন্দীর বাসিন্দা। হাসপাতাল এবং পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি প্রায় ১০ থেকে ১৫ দিন ধরে জ্বর, ঠান্ডায় ভুগছিলেন এবং ধীরে ধীরে অবস্থার অবনতি দেখলে পরিবারের লোকজন তাকে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান এবং মঙ্গলবার তাকে করোনা পরীক্ষা করার কথা থাকলেও সকালে তিনি মৃত্যু বরণ করেন। খুলনায় করোনা উপসর্গ নিয়ে এক বৃদ্ধের (৮৫) মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের করোনা সাসপেক্টেড আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ও করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. মিজানুর রহমান জানান, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে ওই বৃদ্ধ সোমবার সকাল সোয়া ৭টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা সাসপেক্টেড আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। এছাড়া তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দুপুর পৌঁনে ২টায় তিনি মারা যান।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More