জুনের শেষে মৃত্যু বাড়তে পারে কয়েকগুণ

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) সংক্রমণের যে মাত্রা তাতে প্রতি একজন করোনা আক্রান্ত থেকে নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছে আরও ১.৫৯ জন। সেই হিসাবে আক্রান্ত প্রতি ১০০ জন থেকে নতুন করে দেড়শ’ জনে সংক্রমিত হচ্ছে ভাইরাসটি। ওই দেড়শ’ জন থেকে আবার নতুন করে আড়াইশ’ জনে সংক্রমিত হচ্ছে। আড়াইশ’ জন থেকে আবার নতুন করে সংক্রমিত হবে ৩৩৮ জন। এভাবে অল্প সময়ের মধ্যেই ১০০ জন থেকে ৫০০ জনে ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাস। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ অব মেডিসিনের মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের (এমআরসি) বৈশ্বিক সংক্রামক রোগ বিশ্লেষণে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এ তথ্য দেয়া হয়েছে। ওই বিশ্লেষণে সংক্রমণের বর্তমান হার ও মৃত্যু অব্যাহত থাকলে চলতি মাসের শেষ নাগাদ সম্ভাব্য দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বর্তমানে করোনার মৃত্যু হারের ১০ গুণেরও বেশি দেখানো হয়েছে।
তবে এমন পূর্বাভাসও পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গে বদলায়। গত মার্চ মাসের দিকে জাতিসংঘের নেতৃত্বে বাংলাদেশে করোনার সম্ভাব্য আক্রান্ত ও মৃত্যুর বিশাল হিসাব দেখানো হয়েছিলো। জানা গেছে, সেটি ছিল স্বীকৃত মডেলভিত্তিক সম্ভাব্য হিসাব। সেই পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবেলায় কোনো উদ্যোগ নেয়া না হলে কী ঘটতে পারে তার আভাস ছিলো ওই প্রতিবেদনে। সরকার করোনা থেকে বাঁচাতে জনগণকে ঘরে রাখতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা, চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ অনেক উদ্যোগ নেয়ায় সেই পরিস্থিতি বদলেছে।
এমআরসির বিশ্লেষণে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, প্রতি ১০০ জন থেকে নতুন করে দেড়শ জনে করোনা সংক্রমণ ছড়াতে সময় লাগছে প্রায় তিন দিন। এভাবে মাত্র নবম দিনে করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ১০০ থেকে বেড়ে ৫৮৮ জনে উন্নীত হচ্ছে। ওই ১০০ জন থেকেই ৩০ দিন শেষে সংক্রমিত হচ্ছে ১১ হাজার ৩৩৩ জন।
এমআরসির ওই বিশ্লেষণটি তৈরি করেছে বাংলাদেশে সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার সংখ্যা বিশ্লেষণ করে। বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্তের সংখ্যা ১০ হাজার থেকে ২০ হাজারে পৌঁছুতে সময় লেগেছে ১১ দিন। এরপর ৩০ হাজারে যেতে সময় লেগেছে সাত দিন। ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজারে যেতে সময় লেগেছে ছয় দিন। শনাক্তের সংখ্যা ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজারে পৌঁছাতে সময় লেগেছে পাঁচ দিন।
এমআরসি বর্তমান প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে বলেছে, করোনা মোকাবেলায় নতুন করে কোনো উদ্যোগ নেওয়া না হলে আগামী চার সপ্তাহে হাসপাতাল ও উচ্চচাপের অক্সিজেনের চাহিদা অনেক বাড়বে। ৩০ জুন নাগাদ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন এমন রোগীর সংখ্যা ১৯ হাজার ৮৪৮ হতে পারে বলে ওই বিশ্লেষণে আভাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী চার সপ্তাহে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) শয্যার চাহিদাও বর্তমানের চেয়ে সাত গুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
ইউরোপে করোনা মহামারির বিশ্লেষণ থেকে এমআরসির ধারণা, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমিত রোগীদের প্রায় ৫ শতাংশের উচ্চচাপের অক্সিজেনসহ চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তি প্রায় ৩০ শতাংশের মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশন প্রয়োজন হতে পারে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More