ঝিনাইদহে চাকরির দাবিতে ঢাবির দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্নাতকোত্তর শেষবর্ষের শিক্ষার্থী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শাহীন আলম চাকরির দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। নিজ এলাকা ঝিনাইদহ জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গতকাল সোমবার সকাল ৯টায় অনশনে বসেন তিনি। যতক্ষণ সরকার তাকে চাকরির নিশ্চয়তা না দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এক ফোঁটা পানিও পান করবেন না বলে জানিয়েছেন শাহীন আলম। তিনি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আজমপুর ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে। ২০১৫ সালে এইচএসসি পাসের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন শাহীন। ২০১৯ সালে সেখান থেকে স্নাতক (সম্মান) শেষ করে বর্তমানে স্নাতকোত্তরে পড়ছেন। প্রতিবন্ধীদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির দাবি জানিয়েছেন শাহীন আলম। তিনি বলেন, দৃষ্টিশক্তি না থাকার পরও দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জনের পর কেন তাকে বেকার থাকতে হবে? প্রতিবন্ধী বলে তিনি কোনো চাকরি পাবেন না, এটা হতে পারে না। সোমবার ঝিনাইদহ শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, একটি হ্যান্ডমাইক নিয়ে বসে আছেন শাহীন আলম। বৃষ্টিতে পুরো শরীর ভেজা, এরপরও স্থান ত্যাগ করেননি। সরকারের বিভিন্ন দফতরে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে চাকরি পাচ্ছেন না বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, চাকরি যদি নাই হবে, তাহলে কেন সরকার লেখাপড়ার সুযোগ দিলো? তার মতো আরও অনেক প্রতিবন্ধী পড়ালেখা করছেন। এক সময় তারাও কাজ না পেয়ে পরিবার ও সমাজের বোঝা হয়ে উঠবেন।
শাহীন আলম লেখাপড়ার পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। করোনা মহামারিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেলে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। ওই সময় তিনি নিজ উদ্যোগে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।
শাহীন আলম বলেন, সংবিধানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে বঞ্চিত বা তার প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ না করার কথা বলা হয়েছে। তার সরকারি চাকরির বয়সসীমা পার হয়ে যাচ্ছে। অথচ সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়েও চাকরিতে ঢুকতে পারছেন না। যে কারণে তিনি অনশনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। চাকরির ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত তিনি অনশন ভাঙবেন না। প্রয়োজনে জীবন দিয়ে দেবেন। এই প্রতিবেদন লেখার সময় রাত ৮টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেই ছিলেন শাহীন আলম।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More