পাচারের স্বর্ণ ছিনতাই ঘটনায় খুলনায় এসআইসহ ৩ পুলিশ গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার: ভারতে পাচারকারী ব্যক্তির কাছ থেকে স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় খুলনায় তিন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একইসঙ্গে পাচারকারী ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) লবণচরা থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। শনিবার গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তাসহ চারজনের গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করেন নগরীর লবণচরা থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নগরীর লবণচরা থানার এসআই মো. মোস্তফা জামান, এএসআই আহসান হাবীব (৩৫), কনস্টেবল মুরাদ হোসেন (৪২) ও নগরীর খালিশপুর এলাকার স্বর্ণ পাচারকারী ব্যাসদেব দে (৩৯)। পুলিশ সদস্যদের মধ্যে এসআই মো. মোস্তফা জামানের বাড়ি যশোর, এএসআই আহসান হাবীবের বাড়ি বাগেরহাট ও কনস্টেবল মুরাদ হোসেনের বাড়ি সাতক্ষীরায়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে লবণচরা থানায় এসআই মোকলুসুর রহমান বাদী হয়ে চোরাচালান ও দস্যুতার অভিযোগে একটি মামলা করেছেন।
জানা গেছে, গত শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দায়িত্ব পালনকালে নগরীর লবণচরা থানার সাচিবুনিয়া বিশ্বরোড মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে এসআই মো. মোস্তফা জামান সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন, টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেসের একটি বাসে অবৈধ স্বর্ণের বার নিয়ে একজন ব্যক্তি খুলনা মহানগরীতে প্রবেশ করবে। উক্ত সংবাদ পেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে এসআই মোস্তফা জামান সঙ্গীয় এএসআই মো. আহসান হাবিব ও কনস্টেবল মো. মুরাদ হোসেনের সঙ্গে যোগসাজস করে সাচিবুনিয়া বিশ্বরোড মোড় এলাকার রূপসা ব্রিজ থেকে জিরো পয়েন্টগামী মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটির সামনে পাকা রাস্তার ওপর চেকপোস্ট পরিচালনা করেন। এ সময় পুলিশ দেখে একজন ব্যক্তি টুঙ্গীপাড়া পরিবহন থেকে নেমে দ্রুত হেঁটে যেতে থাকে। তখন পুলিশ সদস্যরা তাকে দাঁড়ানোর জন্য বললে সে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। দুপুর ২টার পর পুলিশ সদস্যরা ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করাতে সক্ষম হয়। এ সময় তাকে পালানোর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তার নিকট স্বর্ণের বার আছে বলে স্বীকার করে। এরপর আসামি ব্যাসদেব দে’র জিন্স প্যান্টের বেল্টের নিচের বর্ডার কেটে সুকৌশলে বানানো গোপন পকেট দেখা যায়। ব্যাসদেব পকেট থেকে খাকি স্কচ টেপ দিয়ে মোড়ানো ৬টি স্বর্ণের বার এসআই মোস্তফা জামানের কাছে দেয়। এরপর পুলিশ সদস্যরা আসামি ব্যাসদেব দে কে ভয় দেখিয়ে ৩টি স্বর্ণের বার নিয়ে নেয়। পরে তারা ব্যাসদেব দে কে বাকি ৩টি স্বর্ণের বারসহ ছেড়ে দেয়। ছিনতাই করা তিনটি স্বর্ণ বারের মূল্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা।
সূত্র জানায়, পরবর্তীতে বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানতে পারেন। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই তিন পুলিশ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তখন অভিযুক্ত তিন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়া হয়। এ ঘটনায় আসামি ব্যাসদেব দে আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক অপরাধের সঙ্গে তার জড়িত থাকার বিষয়টি বর্ণনা করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More