মানবদেহে নিপাহ ভাইরাসের টিকা পরীক্ষা শুরু

স্টাফ রিপোর্টার: যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণঘাতী নিপাহ ভাইরাসের টিকা (চ্যাডোক্স ১ নিপাহ বি) মানবদেহে পরীক্ষা করা শুরু হয়েছে। এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বৃহস্পতিবার এ টিকা মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কথা জানিয়েছে অক্সফোর্ড। অক্সফোর্ডের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, গত সপ্তাহেই প্রথম এক ব্যক্তি এ টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওষুধ নির্মাতা অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও ভারতের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোভিড-১৯ টিকা তৈরি করেছিল, ঠিক সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ টিকা আবিষ্কার করা হয়েছে। আর এ টিকা উদ্ভাবন করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যানডেমিক সায়েন্সেস ইনস্টিটিউট। এখন মানবদেহে পরীক্ষা শুরুর কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপ। অক্সফোর্ডের প্যানডেমিক সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ৫১ জন রোগীর ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হবে। তাদের বয়স ১৮ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে। এই টিকা তাদের দেহে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি করে সে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর এখানে সফল হলে নিপাহ ভাইরাস উপদ্রুত অঞ্চলের রোগীদের ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হবে।
নিপাহ ভাইরাসের টিকার মানবদেহে পরীক্ষার প্রধান এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নাফিল্ড ডিপার্টমেন্ট অব মেডিসিনের অধ্যাপক ব্রায়ান আংগেস বলেন, ‘উচ্চ মৃত্যুহার এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার বৈশিষ্ট্যের জন্য নিপাহ ভাইরাসকে অতিমারি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। টিকার পরীক্ষাকে এ সমস্যার সমাধানে একটি মাইলস্টোন হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এর ফলে এ রোগের প্রাদুর্ভাব রোধ করা যেতে পারে। বিশ্বকে ভবিষ্যতের অতিমারি থেকে রক্ষা করতে এ টিকা সহায়তা করতে পারে।’
চিকিৎসক, গবেষক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ প্রচেষ্টাকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন। ক্ষয়ক্ষতির নিরিখে বিশ্বে এখন জলাতঙ্কের পরই ভয়ানক নিপাহ ভাইরাসের স্থান। এ রোগে আক্রান্ত হলে প্রায় ৭৫ ভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তবে জলাতঙ্কের টিকা আছে, নিপাহ ভাইরাসের কোনো টিকা নেই।
১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ায় প্রথম নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর এর প্রাদুর্ভাব ধীরে ধীরে বাংলাদেশ, ভারত এবং সিঙ্গাপুরে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এর তথ্য মতে, বাংলাদেশে ২০০১ সালে মেহেরপুরে প্রথম নিপাহ ভাইরাস চিহ্নিত হয়। এরপর দুই দশকের বেশি সময় ধরে যতজন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৭১ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে। ২০০১ সাল থেকে দেশে এ পর্যন্ত ৩৩৯ জন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৪০ জনই মারা গেছেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More