এমপির কাবিখা প্রকল্পের সাথে দলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই

গাংনীতে সংবাদ সম্মেলনে জেলা আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক
গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকনের কাবিখা প্রকল্পের বিষয়ে দলীয় অবস্থান পরিস্কার করতে সংবাদ সম্মেলনে করেছেন জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ খালেক। গতকাল বুধবার সকালে গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে চুয়াডাঙ্গায় জব্দকৃত চালের বিষয় তুলে ধরে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের সাজা দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে এমএ খালেক বলেন, সারা বাংলাদেশের অনেক জায়গায় চাল চুরির ভাইরাল ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয়েছে। এমন একটি সেনসিটিভ সময়ের মধ্যে গাংনীর কাবিখা প্রকল্পের এই চালের বিষয়ে এমপি খোকনকে আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিলো।
সংসদ সদস্য সাহিদুজ্জামানের কাছে প্রশ্ন ছুঁড়ে তিনি বলেন, কাবিখার চাল গাংনী থেকে চুয়াডাঙ্গায় কেনো যাবে? কেন গুদামে জব্দ হবে? কেন ভাইরাল হবে? বিষয়টি নিয়ে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হয়েছে। এটার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
কাবিখার উন্নয়ন কাজটি গোপনে হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, উন্নয়ন কাজ হবে প্রকাশ্যে। উন্নয়ন কাজের কমিটি গোপনে করা হয়েছে। চাল উত্তোলন ও চুয়াডাঙ্গায় ট্রাকযোগে বিক্রির বিষয়টি জনমনে ধু¤্রজাল ও সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। এমপি সাহেবের কাবিখা প্রকল্প নির্ধারণ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন ও প্রকল্প বাস্তবায়নের সাথে দলের কারও সাথে আলোচনা করা হয়নি। তিনি (এমপি) এ বিষয়ে আমার ও দলের দায়িত্বশীল কারও সাথে আলাপ করেননি। তাই বিষয়টিতে আমি বা দলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
কাবিখা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও চুয়াডাঙ্গায় চাল জব্দের বিষয়ে তদন্তে যদি কেউ দায়ী হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে দলীয় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুশিয়ার করেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলা প্রশাসন পৃথক যে দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে তার ওপর আমাদের আস্থা রয়েছে। এ বিষয়ে দলীয় কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করার প্রয়োজন নেই।
সংসদ সদস্য সাহিদুজ্জামান খোকনের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন প্রকার অভিযোগ উত্থাপন করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক আরো বলেন, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ দলীয় লোকজনের সম্পৃক্ততা থাকলে স্বচ্ছতার সাথে বাস্তবায়ন হয়। অপরদিকে সরকারের লক্ষ্য অর্জন হয়। অথচ এমপি সাহেব নিজেই সবকিছু করে থাকেন। তিনি দল ও জনবিছিন্ন। দলের নেতাকর্মীদের কোনো উন্নয়ন কাজে সম্পৃক্ত করেন না।
কাবিখা প্রকল্পের চাল জব্দের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দাবি করে তিনি বলেন, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরনের কাজ করতে না পারে সেজন্য সরকার ও দল সচেতন রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গাংনী উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, সাবেক পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মোশাররফ হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মজিরুল ইসলাম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন, জেলা পরিষদ সদস্য সাহানা ইসলাম শান্তনা ও যুবলীগ নেতা সাইফুজ্জামান শিপু প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে চুয়াডাঙ্গায় গাংনী থেকে নেয়া একটি চালভর্তি ট্রাক ও গুদামে চাল জব্দ করে প্রশাসন। সরকারি চাল কিভাবে সেখানে গেলো তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে মেহেরপুর জেলাজুড়ে। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলা প্রশাসন পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটি আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে স্ব স্ব জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More