জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি পেশের সপ্তাহকাল পর সড়ক পরিবহন মালিক- শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলন
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার আঞ্চলিক ৫টি সড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধ করা না হলে আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে বাস ধর্মঘট শুরু করবে জেলা সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। গতকাল সোমবার সকার ১১টায় আলী হোসেন সুপার মার্কেটস্থ জেলা বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। বলা হয়, ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দাবি দাওয়া না মানা হলে ঢাকা, চট্টগ্রাম সিলেট বরিশাল ও খুলনাসহ সারা দেশের সাথে চুয়াডাঙ্গার সব ধরণের যাত্রীবাহি বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাবিবুর রহমান লাভলু। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সভাপতিসহ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক হাজী মো. রিপন ম-ল। উপস্থাতি লিখিত বক্তব্যে স্বাক্ষর করেন জেলা সব মিনিবাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদদক হাজী মো. আবুল কালাম, জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক সাইফল হাসানস জোয়ার্দ্দার, জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম মঈন উদ্দিন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আলি রেজা সজল, জেলা বাস-মিনিবাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. সালাউদ্দিন, জেলা বাস-ট্রাক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলামসহ সংগঠনসমূহের সদস্যদের মধ্যে অনেকে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১০ সালে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গাসহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক সমূহে আলমসাধু, নছিমন, করিমন, ভটভটি চলাচল নিষিদ্ধ। আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করছি চুয়াডাঙ্গার পাঁচটি আঞ্চলিক মহাসড়কে (চুয়াডাঙ্গা-হাসাদহ, বদরগঞ্জ-চুয়াডাঙ্গা-দরবেশপুর, চুয়াডাঙ্গা-ডম্বলপুর (আলমডাঙ্গা), চুয়াডাঙ্গা-আটকবর ভায়া দর্শনা-দামুড়হুদা ও চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা ভায়া আসমানখালী পথে অবৈধ যান অবাধে চলাচল করছে। আরও বলা হয়, সড়ক পরিবহন খাত একটি শিল্প। গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে কোভিড-১৯ এর কারণে পরিবহন খাত চরম লোকশানের ধকল সহ্য করে আসছে। লকডাউন শেষে সীমিত আকারে বাস চলাচল শুরু হওয়ার পর পুরোদমে অবৈধযানের কারণে এই শিল্পটি ধ্বংসের ধারপ্রান্তে। যে কারণে এই জেলার প্রায় ১৫০০ পরিবহন ব্যবসায়ী ও ৬ হাজার পরিবহন শ্রমিক চরম কষ্টে দিনাতিপাত করছে, অথচ পরিবহন শিল্প খাতে সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে থাকে। তাই এই শিল্পে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সরকার ও প্রশাসনীকভাবে সহযোগীতে জরুরি হয়ে পড়েছে। তারা আরও বলা হয়, সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ১০ বছরে চুয়াডাঙ্গায় ছয় শতাধিক মানুষ নিহত এবং আড়াই হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে এই অবৈধযানের কারণে। উপার্জনক্ষম ব্যাক্তিদের হতাহতের কারণে এসব পরিবারের সদস্যরা খেয়ে-না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। পরিবহন শিল্পকে রক্ষার্থে নানা নামের অবৈধ যান বন্ধ করতে হবে। এ দাবি নিয়ে গত ৩০ জুলাই চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি দেয়া হয়। তিনি কোন পদক্ষেপের কথা জানানি। সড়ক থেকে অবৈধ যান বন্ধও হয়নি। বুধবারের মধ্যে অবৈধ যান বন্ধ করা না হলে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর থেকে আঞ্চলিক ৫টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। পরে ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যদি দাবি আদায় না হয় তাহলে ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে দূরপাল্লার যাত্রীবহন করা পরিবহন বন্ধ রাখা হবে। জেলার সাথে সারাদেশের অনির্দিষ্টকালের জন্য সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করা হবে। দাবি পুরণ না হওয়া পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট চলবে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্যপরিষদ নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্যালোইঞ্জিন চালিত অবৈধ যানে যখন যাত্রী বহন করা হয় তখন পুলিশ দেখে না, যখন মালামাল পরিবহন করা হয় তখন দেখেন। নানা ভাবে হয়রানীও করা হয়। পন্যবহনে আমাদের যতোটা না আপত্তি তার চয়ে বেশি আপত্তি যাত্রীবহনে। কেনো না, যাত্রী বহনের ফলে পরিবহন শিল্পই শুধু ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না, প্রতিদিনই দুর্ঘটনার কারণে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। সমাজে পঙ্গুত্বের সংখ্যাও বাড়ছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
চুয়াডাঙ্গা করোনা উপসর্গ নিয়ে একজনের মৃত্যু : আরও শনাক্ত ১১ রোগী
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ