সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার মেয়েটি জিতলেন মিস ইউনিভার্সের মুকুট

এশীয়দের ঘৃণা করা বন্ধ করুন

মিস ইউনিভার্সের ৬৯তম আসরের মুকুট জিতলেন মেক্সিকোর সুন্দরী আন্দ্রেয়া মেজা। বিশ্বের ৭৩ প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে তরুণীদের কাঙ্ক্ষিত স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। রূপে-গুণে-মেধায় বিচারকদের মুগ্ধ করেছেন ২৬ বছর বয়সী এই রূপসী। রোববার রাতে (বাংলাদেশ সময় ১৭ মে) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের সেমিনোল হার্ড রক হোটেল অ্যান্ড ক্যাসিনোতে আন্দ্রেয়া মেজার মাথায় মুকুট পরিয়ে দেন গতবারের মিস ইউনিভার্স জোজিবিনি টুনজি। এরপর ঝলমলে লাল গাউন পরা মেক্সিকান রূপবতী চোখে আনন্দ অশ্রু নিয়ে ক্যাটওয়াক করেন মঞ্চে। সবশেষে অন্য প্রতিযোগীদের জড়িয়ে ধরেন তিনি। এ নিয়ে তিনবার মেক্সিকোর সুন্দরীরা মিস ইউনিভার্স হলেন। ১৯৯১ সালে মেক্সিকোর লুপিটা জোন্স প্রথমবার নিজের দেশকে মুকুট এনে দেন। সবশেষ ২০১০ সালে হিমেনা নাভারেতে। মিস ওয়ার্ল্ড ২০১৭ প্রতিযোগিতায় ভারতের মানুষি চিল্লারের কাছে হেরে প্রথম রানারআপ হয়েছিলেন আন্দ্রেয়া মেজা। এর আগে মিস মেক্সিকো ২০১৭ খেতাব পেয়েছেন তিনি। এছাড়া মেক্সিকানা ইউনিভার্সাল ২০২০ স্বীকৃতি এসেছে তার ঘরে।
১৯৯৪ সালের ১৩ আগস্ট মেক্সিকোর চিহুয়াহুয়া সিটিতে বাদামি রঙা চোখ ও চুল নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন আলমা আন্দ্রেয়া মেজা কারমোনা। তার পূর্বপুরুষরা এশীয়। বাবা সান্তিয়াগো মেজা, মায়ের নাম আলমা কারমোনা। তিন বোনের মধ্যে আন্দ্রেয়া সবার বড়। ২০১৭ সালে অটোনোমাস ইউনিভার্সিটি অব চিহুয়াহুয়া থেকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর চাকরি ও মডেল হিসেবে সমানতালে এগিয়েছেন ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার এই তরুণী। এবার ছিলো মিস ইউনিভার্সের ৬৯তম আসর। ২০১২ সালের মিস ইউনিভার্স অলিভিয়া কালপো আর আমেরিকান অভিনেতা মারিও লোপেজ এই আয়োজন সঞ্চালনা করেছেন। করোনা মহামারির কারণে গত বছর এই প্রতিযোগিতা স্থগিত হয়ে যায়।
এবারের প্রতিযোগিতার বিশ্লেষক ও ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করেছেন ২০১৯ সালের মিস যুক্তরাষ্ট্র চেসলি ক্রিস্ট, ২০১৪ সালের মিস ইউনিভার্স পলিনা ভেগা এবং ২০১৭ সালের মিস ইউনিভার্স ডেমি-লেই টেবো। পুয়ের্তোরিকান সংগীতশিল্পী লুই ফনসি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছেন।
প্রথম রানারআপ হয়েছেন ব্রাজিলের জুলিয়া গামা। দ্বিতীয় রানারআপ স্বীকৃতি পেয়েছেন পেরুর জেনিক মাসেতা। সেরা পাঁচে আরও ছিলেন ভারতের আডলিন কাস্টলিনো ও ডমিনিকান রিপাবলিকের কিম্বারলি হিমেনেজ। কার্নিভাল স্পিরিট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন মিস ডমিনিকান রিপাবলিক। সোশ্যাল ইম্প্যাক্ট অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে মিস বলিভিয়া লেনকা নেমারকে। মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সেরা ২১-এ স্থান করে নেওয়া মিস মিয়ানমার তুজার উইন্ট লুইন। গত ১৩ মে সেরা জাতীয় পোশাক বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। তখন মিস ইউনিভার্স মঞ্চে ‘প্রে ফর মিয়ানমার’ লেখা ব্যানার দুই হাতে তুলে ধরেন মিয়ানমারের এই তরুণী। গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ৭৯৬ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া প্রায় চার হাজার মানুষকে বন্দি করা হয়েছে। মিস সিঙ্গাপুর বারনাডেট বেল ওঙ জাতীয় পোশাকের মাধ্যমে রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছেন। তার পরা লাল বডিস্যুটের ওপরের অংশে সিঙ্গাপুরের পতাকার রঙে লেখা ছিলো, ‘এশীয়দের ঘৃণা করা বন্ধ করুন।’

Comments (0)
Add Comment