মহামারী করোনায় বিপাকে পড়েছে কালীগঞ্জের সাপুড়ে পল্লীর বেদে সম্প্রদায়ের পরিবারগুলো

শিপলু জামান: মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে সবচেয়ে বেশী বিপাকে পড়েছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নের বাদেডিহী ও কালীগঞ্জ পৌরসভার কাশিপুর সাপুড়ে পল্লীর বেদে সম্প্রদায় পরিবারগুলো। এমনিতে চলছে করোনার লকডাউন তারপর মরার উপর খাড়ার ঘা ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। বেঁচে থাকার মতো সব আশা ভরসা যেনো তাদের শেষ হয়ে যাচ্ছে। করোনা ভাইরাসের কারণে সারাদেশের মতো ঝিনাইদহেও জনসমাগম থেকে বিরত থাকায় জীবন-জীবিকার সন্ধানে আশ্রয়স্থলে থাকা এখানকার বেদে পরিবারগুলো ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। বর্তমানে তারা পড়েছে চরম খাদ্য সঙ্কটে। কোনদিন একবার খেয়ে আবার কোনদিন না খেয়েও চলছে তাদের জীবন। তার ওপর ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে উড়ে গেছে তাদের মাথার গোজার একমাত্র ঠায় তাবুগুলো। চরম বিপাকে পড়ে এই বেদে পরিবারগুলো তাদের শেষ সম্বল কারও নাকের নাকফুল, কোমরের বিছা ও হাতের আংটি বিক্রি করে কোনোরকম দিন পার করছেন। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর এলাকার কাশিপুর সাপুড়ে পল্লিতে প্রায় ৫৫০টি পরিবারের ২হাজার ৫শ’ সদস্য এবং বারোজারের বাদেডিহী সাপুড়ে পল্লীতে ১৭৭ পরিবারের ৮৪০ জন সদস্য। করোনার কারণ এবং বেঁচে থাকার মতো যথেষ্ট খাদ্য সামগ্রী না পাওয়ায় তারা রয়েছে করুণ পরিস্থিতিতে। তাদের যেনো দেখার কেউ নেই। সরেজমিনে বারবাজারের বাদেডিহী ও কালীগঞ্জের কাশিপুর সাপুড়ে পল্লিতে গিয়ে দেখা যায় তাদের জীবন-যাপনের করুণ চিত্র।

বাদেডিহী সাপুড়ে উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, এই মহামারি করোনায় সারাদেশে যখন অসহায় ও নি¤œ আয়ের মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে, তখন আমরা বারোবাজারের বেদে সম্প্রদায়ের পরিবারগুলো খাদ্য সামগ্রী হিসেবে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মহোদয়ের নিকট থেকে পেয়েছি ৮৫ ব্যাগ, ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬ থেকে ১০৫ ব্যাগ এবং কাশীপুর বেদে সাপুড়ে পল্লীর পরিবারগুলো পেয়েছে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট থেকে ৩৩৫ ব্যাগ ও পুলিশ সুপার মহোদয়ের নিকট থেকে ১১৩ ব্যাগ। এছাড়া আমরা আর কোনো খাদ্য সামগ্রী পায়নি। রোজগারের সকল পথ বন্ধ থাকায় আমাদের পরিবারগুলোর নারী, শিশু ও বৃদ্ধা সবাই খেয়ে না খেয়ে অতি কষ্টে দিন পার করছে। এ ব্যাপারে আমরা বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর সু-দৃষ্টি কামনা করছি যাতে আমরা সরকারের দেয়া ২ হাজার ৫শ’ টাকার ভাতাসহ সকল প্রকার সুবিধাভোগী আওতায় আসতে পারি। তা না হলে আমাদের এভাবে অর্ধাহারে-অনাহারে থেকে আমাদের মৃত্যুবরণ করতে হবে।

 

 

Comments (0)
Add Comment