পকেটের টাকায় গাছ কিনে লাগানোই তার আনন্দ

শরিফ রতন: গাছ লাগানো ও পরিচর্যা করায় যার নেশা। নিজের বাড়ি তো বটেই এলাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি খোলা জায়গায় গাছ লাগিয়ে বেড়ান তিনি। নিজের পকেটের টাকায় গাছ লাগানোই তার সব আনন্দ। সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে গাছ লাগিয়ে প্রায় ১৫ বছর পার করেছেন দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের পিরপুরকুল্লা গ্রামের সিংহপাড়ার দীন মোহাম্মদের ছেলে মজিবর রহমান (৫৫)। গ্রামে তিনি বৃক্ষপ্রেমিক মজিবর ওরফে মজু নামে পরিচিত। এই ১৫ বছরে হাজার গাছ রোপন করেছেন তিনি। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা বারো মাস নিজের টাকা খরচ করে এলাকায় এলাকায় গাছ লাগান এবং মানুষকে গাছ লাগানোর জন্য ও গাছের পরিচর্যা করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। বছরের পর বছর ধরে নিঃশব্দে নানা বাধা-বিঘœ-কটুক্তি উপেক্ষা করে এই কাজ করে চলেছেন তিনি। নতুন চারাগাছ তার পরম যতেœ বেড়ে চলেছে। গাছ লাগানোর বিষয়ে তিনি জানান, আমি প্রায় ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন প্রজাতের গাছ লাগিয়ে থাকি। বিশেষ করে কার্পাসডাঙ্গা-কুতুবপুর সড়কের কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের প্রয়াত সাবেক চেয়ারম্যান হাজি আকবার আলী বিশ্বাসের কবরস্থানের পাশ দিয়ে রাস্তার দুধারে আম, বরুই, পেঁপে, কলা, কচু, চিনি কচু, হলুদ, কাঁঠাল গাছসহ বিভিন্ন ফুল গাছ রোপণ করি। গাছের কান্না-হাসি-গান আমি শুনতে পাই, অনুভব করতে পারি। কবে থেকে এই গাছ লাগানোর নেশা চাপলো? জিজ্ঞাসা করলেই তিনি বলেন, আমি ছোট থেকেই সরকারি রাস্তার পাশে ফাঁকা জায়গা পেলেই গাছ লাগাই। বাঁশ কাবারি দিয়ে সেগুলো বেঁধে রাখি। কেউ ক্ষতি করে না। নিজে গাছ লাগানোর পাশাপাশি অন্যদের গাছ লাগানোর জন্য নিজের উদ্যোগে উদ্বুদ্ধ করি। গাছের ফল ও সবজি নিজে খাই অন্যরাও খাই। সরকারিভাবে কোনো সুযোগ সুবিধা থাকলে আমি আরো গাছ গাছালি লাগাতে পারতাম। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত গাছ লাগিয়ে যেতে চান বলে তিনি জানান এই বৃক্ষপ্রেমিক। এ বিষয়ে কুতুবপুর গ্রামের জনৈক ব্যক্তি জানান, কার্পাসডাঙ্গা-কুতুবপুর সড়কের আঁকাবাঁকা পথের দুই পাশে বনজ, ফলদ ও ওষধি বৃক্ষের পূর্ণ সবুজের সমাহার। রাস্তার দুই পাশে ফুল গাছে ফুল ফুটলে দেখতে খুব সুন্দর লাগে। তার নিজের জমি নেই বলে তিনি সরকারি রাস্তার পাশে গাছ রোপণ করে থাকে।

Comments (0)
Add Comment