করোনা ভাইরাসে ডায়াবেটিস রোগীর জন্য পরামর্শ

……….. -ডায়েটিশিয়ান উম্মে আতিকা মল্লিক আখি ……………

ডায়েটিশিয়ান ও হেলথ এডিকেটর. চুয়াডাঙ্গা ডায়াবেটিক সমিতি, চুয়াডাঙ্গা।

ডায়াবেটিস দেহে রোগ উৎপত্তির কারিগর বলা যেতে পারে। ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পেলে দেহে বিভিন্ন রোগ ডেকে আনে। রোগগুলোহলো-কিডনিসমস্যা, চোখেরসমস্যা, লিভারসমস্যা, হার্টেরসমস্যা, পায়েরসমস্যাপ্রভৃতি।

ডায়াবেটিসনিয়ন্ত্রনকরারজন্য পরামর্শ-

প্রথমত: ডায়াবেটিস আক্রান্তদের চিকিৎসক কর্তৃক প্রদেয় ওষুধ গ্রহণ করা, দ্বিতীয়ত: ডায়েটিশিয়ানের খাদ্য তালিকা অনুসারে খাদ্য খাওয়া, তৃতীয়ত: বয়স অনুযায়ী ব্যায়াম করা। এগুলোর মধ্যে একটি ব্যত্যয় হলে ডায়াবেটিস বেড়ে যাবে। নিচে এগুলো বর্ণিত হলো-  প্রথমত: চিকিৎসকগণ বিভিন্ন রোগীর বিভিন্ন রোগের বর্ণনার ভিত্তিতে চিকিৎসাপত্র লেখেন। চিকিৎসাপত্র অনুযায়ী ওষধ খেতে হয়। এর বাইরে যাওয়ার কোন উপায় নেই। একজন ডায়াবেটিস রোগীর হার্টের সমস্যা আছে তার জন্য যে ব্যবস্থাপত্র দেয়া হবে সেই ব্যবস্থাপত্র অন্য একজন কিডনি রোগীরজন্য দেয়া হয়না। চিকিৎসক এটা মেনেই ব্যবস্থাপত্র দেন।

দ্বিতীয়ত: রোগীরজন্য খাদ্যদরকার। ডায়াবেটিক হাসপাতাল বা ডায়াবেটিক সমিতি থেকে একটি বই সরবরাহ করা হয়। এ বই লেখা আছে কী খাবার খাবেন। একজনের হার্টের সমস্যা আছে, তারজন্য এক ধরণের খাদ্য তালিকা আবার অন্য জনের কিডনির সমস্যা তার জন্য আলাদা খাদ্য তালিকা হবে। এ দুজনের একই খাদ্য তালিকা হবেনা। এজন্য ডায়াবেটিক হাসপাতাল বা সমিতি থেকে পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞানে ডিগ্রী প্রাপ্ত ডায়েটিশিয়ান বা পুষ্টিবিদের নিকট থেকে খাদ্য তালিকা তৈরি বা পরামর্শ নিতে হবে। সে অনুযায়ীখাদ্য খেতে হবে।

তৃতীয়ত: ডায়াবেটিস আক্রান্তকারী নিয়মিত ব্যায়াম করবেন। প্রবীন ও মধ্য বয়সী ব্যাক্তি গণকে নির্ধারিত সময়ে নিয়মিত হাটতে হবে, যেন শরীর থেকে ঘাম ঝরে য়ায়। তারপর হাটা বন্ধ করুন। যুবক ও অল্পবয়সীদের নিয়মিত হাটার পাশাপাশি ব্যায়াম করা দরকার। খেয়াল রাখতে হবে সব বয়সের মানুষ একই রকম ব্যায়াম না করা। যদি বয়স ভেদে ব্যায়ম করা না হয় তাতে ক্ষতি হতে পারে। তবে বলা যায় সব বয়সের ডায়াবেটিক রোগী নিয়মিত হাটা আবশ্যকীয়। প্রতিদিন সকালে ৪৫ মিনিট হাটতে হবে।

করোনা মহামারিতে আরো কিছু নিয়ম মেনেচলা দরকার। বাড়িতে থাকুন। খুব প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হলে কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করুন। মাস্ক দিয়ে নাক ও মুখ ঢেকে রাখবেন। এ সময় মাস্কের উপরে বা ভিতরে হাত দিবেন না। মাস্ক খুলবেন কানের সাথে লাগান ফিতায় হাত দিয়ে। বাড়িতে এসে মাস্কটি সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

বাইরে থাকাকালীন হেটে চলুন বা যে কোন যানবাহন বা ভ্যান ব রিক্সায় চড়–ন বা যে কোন জায়গায় বসুন শরীরিক দুরত্ব রাখবেন তিনফুট। এ সময় সম্ভব হলে হ্যান্ডস্যানেটাইজার ব্যবহার করুন কিছুসময় পর পর।

বাইরে থেকে বাড়িতে ফেরার পর আপনার ব্যবহৃত জিনিস বা পোশাক ঘরে না নিয়ে কিছুক্ষণ রোদে রেখে সাবান বা ডিটারজেন পাওডার দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আপনার পকেটে থাকা টাকা বাইরে থেকে আসার পর রোদে শুকিয়ে নিন।

ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের প্রতি আহবান আপনারা হতাশ হবেন না। নিয়ম মেনে চলুন, দেখবেন আপনার ডায়াবেটিস কমে গেছে, অন্য রোগ থেকে মুক্ত হয়েছেন, আপনি শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকবেন। বিশেষকরে এ মহামারি চলাকালীন আপনার রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও বেড়ে যাবে।  তাই নিজেকে সুরক্ষা করুন।

 

Comments (0)
Add Comment