করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় চুয়াডাঙ্গায় ৭২ ঘণ্টার বিধিনিষেধ

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে

স্টাফ রিপোর্টার: করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৭২ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জেলা প্রশাসন। আজ সোমবার সকাল ছয়টা থেকে ১ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম সরকার এ বিষয়ে ১১ দফা শর্তসংবলিত একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চুয়াডাঙ্গা জেলায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ২৭ জুনের পত্র এবং ২৬ জুন করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক শর্ত সাপেক্ষে সার্বিক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, জনস্বার্থে এ আদেশ কার্যকর থাকবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে জাতীয় ও আঞ্চলিক সড়ক, মহাসড়ক ও নৌপথে এই জেলায় প্রবেশ অথবা এই জেলা থেকে অন্য জেলায় যাওয়া যাবে না। অটোরিকশা, সিএনজি, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, সাইকেল, ভ্যানসহ সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি সেবা, ওষুধ ও চিকিৎসাসেবা, কৃষিপণ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ ও পরিবহন এবং সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং সেবা নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন হবে না। এ সময় গরুর হাট ও পানের হাট বন্ধ থাকবে। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বেচাকেনা করা যাবে। খাবারের দোকান, হোটেল রেস্তোরাঁয় সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার অনলাইনে বিক্রি ও পার্সেল দেয়া যাবে। তবে কোনো অবস্থাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না। শপিংমল, মার্কেটসহ অন্যান্য দোকানপাট বন্ধ থাকবে। পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্রগুলো খোলা যাবে না। জনমসাবেশ হয় এ ধরনের বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান, জন্মদিন, পিকনিকসহ সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান আয়োজন করা যাবে না। এ সময় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নিজ নিজ অফিসের ব্যবস্থাপনায় তাদের আনা-নেয়া করতে হবে। মাস্ক পরিধানসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক নিয়মিত টহলের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা নিশ্চিত করতে হবে।
করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারত সীমান্তবর্তী উপজেলা দামুড়হুদায় ১৫ জুন থেকে ১৪ দিনের, জীবননগর উপজেলায় ২৩ জুন থেকে ৮দিনের এবং চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকা ও সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নে ২০ জুন থেকে লকডাউন অব্যাহত আছে। শুধু আলমডাঙ্গা উপজেলা লকডাউনের বাইরে ছিলো। কিন্তু জেলায় করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় পুরো জেলাকেই এবার ৭২ ঘণ্টা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হলো।

Comments (0)
Add Comment