জীবননগরের উথলী ইউপি সচিবের লাঞ্ছিতকারী নাজমুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ইউএনওর কাছে অভিযোগ দায়ের

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলার উথলী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মনিরুজ্জামানকে লাঞ্ছিতকারী এবং ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত একটি সাইনবোর্ড ও ব্যানার ভাংচুরকারী উথলী গ্রামের আমতলাপাড়ার বহু অভিযোগে অভিযুক্ত নাজমুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উথলী ইউনিয়ন পরিষদের বিশেষসভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ অভিযোগ দেয়া হয়। এর আগে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মুনিম লিংকন গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১০ টায় উথলী ইউনিয়ন পরিষদে এলে পরিষদের সকল সদস্য, ইউপি সচিব ও গ্রাম পুলিশ সদস্যরা বহু অভিযোগে অভিযুক্ত নাজমুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ সময় ইউএনও অভিযুক্ত নাজমুলকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেন।

অভিযুক্ত নাজমুল উথলী গ্রামের আমতলা পাড়ার মজনু ম-লের ছেলে এবং জীবননগর উপজেলা যুবদলের সদস্য। নাজমুলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগে জীবননগর থানায় ৭টিসহ মোট ৯টি মামলা চলমান রয়েছে। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই পরিষদের এক সদস্য জানান, ভবিষ্যত নিরাপত্তার জন্য আজ শুক্রবার পরিষদের ৮ জন সদস্য, সচিব এবং গ্রাম পুলিশ সদস্যরা জীবননগর থানায় নাজমুলের বিরুদ্দে আলাদা আলাদা ডায়েরি করবেন। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিয়ন সচিব সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঈদের পর নাজমুলের বিরদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চুয়াডাঙ্গায় মানববন্ধন করা হবে এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্বারকলিপি দেয়া হবে। এদিকে নাজমুল নিজেকে রক্ষা করতে সরকার দলীয় নেতা-কর্মীর কাছে ইতোমধ্যে ধরনা দেয়া শুরু করেছে। এছাড়া এ ঘটনার মূল প্ররোচোনাকারী ওই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সেলিম হোসেন এবং অভিযুক্ত নাজমুল গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে গোপনে ইউপি সচিবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে গেলেও তা সফল হয়নি।

নাম প্রককাশ না করার শর্তে উথলী গ্রামের আমতলা পাড়ার একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, নাজমুলের নামে একাধিক মামলা থাকলেও আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে জেলহাজত থেকে বেরিয়ে আসে। সে এলাকার কোনো মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করে না। কারণে-অকারণে মানুষকে অশ্রাব্যভাষায় গালাগালি করে থাকে। ওই এলাকাবাসী নাজমুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

উল্লেখ্য, উথলী গ্রামের আমতলাপাড়ার শামসুল হকের ২৩ বছর বয়সী মেয়ের জন্মসনদ নেয়ার জন্য নাজমুল হক মঙ্গলবার উথলী ইউপি সচিব মনিরুজ্জামানের নিকটে যান। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ২৩ বছর বয়সীদের জন্য কিছু নিয়ম-কানুন মেনে জন্মসনদ নিতে হয়। ইউপি সচিব নাজমুলকে সরকারি ওই সব নিয়ম কানুন মেনে আসার জন্য জানালে নাজমুল অবৈধ উপায়ে জন্মসনদ পাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এক পর্যায়ে সে ভাই ইনামুল, চাচাতো ভাই সোহেল, লিপটন ও আওয়ালসহ অন্যান্যদের ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে এসে ইউপি সচিবের ওপর চড়াও হন। এসময় তাকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করা হয়। এ সময় নাজমুলের নেতৃত্বে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত একটি সাইনবোর্ডও ভাঙচুর করা হয় এবং একটি সরকারি ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়। এ ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে পরিষদের সকল সদস্য ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। দাবি উঠেছে ইউপি সচিবের ওপর চড়াও হওয়া দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More