গাংনী পৌরসভার তিনতলা ভবন নির্মাণকাজ স্থগিত

গাংনীপ্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী শহরের চালপট্টিতে পৌরসভার তিনতলা ভবন নির্মাণ কাজ স্থগিতের আদেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। মার্কেট নির্মাণ নিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন মাধ্যমের অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে জেলা প্রশাসন। ভবন নির্মানের লক্ষ্যে গতকাল বুধবার সকাল থেকে পুরাতন স্থাপনা ভাঙার কাজ শুরু করে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাংনী শহরের বাণিজ্য কেন্দ্র গাংনী সবজি বাজার ও চালপট্টি এলাকা। চালপট্টিতে রয়েছে সরকারি মালিকানাধীন জমিতে অস্থায়ী কিছু দোকান। এখানে চাল ও অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মাস দুয়েক আগে থেকে এ স্থাপনা ভেঙে দিয়ে নতুন মার্কেট নির্মাণের কাজ শুরু করে পৌরসভা। প্রথম পর্যায়েই মার্কেট নির্মাণে বাধা পড়ে। পরবর্তীতে নানা গুঞ্জন পার করে গতকাল সকাল থেকে মেয়রের উপস্থিতিতে পুরাতন স্থাপনা ভাঙার কাজ শুরু হয়। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান গাংনী সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়ানুর রহমান। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় ভাঙার কাজ বন্ধ করে দেন তিনি।

এ বিষয়ে ইয়ানুর রহমান বলেন, এখানে যে নির্মাণ কাজ চলছে সে বিষয়ে প্রশাসন অবগত নয়। তাই নিয়ম কানুন যাচাই করে পরবর্তীতে নির্মাণ কাজের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সে পর্যন্ত আপাতত এখানে চলমান কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

এদিকে জানতে চাইলে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেন, এখানে অনেকদিন ধরে সরকারি জায়গার ওপর যে যার ইচ্ছামতো ব্যবসা করে আসছে বিনা ভাড়ায়। তাতে সরকার তার রাজস্ব হারাচ্ছে। আমরা এখানে পুরাতন ভবন ভেঙে নতুন করে ৩ তলা ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করে ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজ শুরু করছি মাত্র।

এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, আগের জেলা প্রশাসক আতাউল গণির সাথে ভবন নির্মাণের বিষয়ে কথা হয়েছে এবং দরখাস্ত বা যাবতীয় কাগজপত্র দেয়া হয়েছে। ওই বিষয়টি নতুন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান হয়তো অবগত নন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা করে পরবর্তীতে কাজ আরম্ভ করবো।

প্রায় ১ কোটি ১২ লক্ষ ৪৩ হাজার ৩শ’৭১ টাকা চুক্তিতে কুষ্টিয়া মজমপুরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রোমানা কন্সট্রাকশন এ কাজটি বাস্তবায়ন করছে বলেও জানান মেয়র আশরাফুল ইসলাম।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খাঁন বলেন, সরকারি জায়গায় যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে হলে সরকারকে অবগত করতে হবে। গাংনী চালপট্টিতে ভবন নির্মাণ বিষয়ে আমার কাছে কোনো বার্তা বা খবর আসেনি। কোন পন্থায় কার মাধ্যমে এটা হচ্ছে তার কোনো কিছুই জেলা প্রশাসন অবগত নয়। এসব বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

গাংনীর অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থায়ী করণ ও পুলিশ সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি

গাংনী প্রতিনিধি: রক্তাত্ব জনপদের কুখ্যাতি রয়েছে মেহেরপুর গাংনীসহ আশেপাশের জেলার কিছু অংশের। এক সময় বোমা আর গুলির শব্দের আতংক ভীতি নিয়ে রাতপার হয়েছে আর ভোরে ঘুম ভেঙ্গেছে হত্যাকা-ের খবর দিয়ে। চাঁদাবাজি, বোমাবাজি, খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, চুরিসহ সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছিলো এ অঞ্চল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক উদ্যোগ আর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সাহসী কর্মকা-ে সারাদেশে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয় অসংখ্য। যার মধ্য দিয়ে সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্যে প্রবাহিত হতে থাকে শান্তির সুবাতাস। পুলিশ বাহিনীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় আইন শৃংখলা পরিস্থিতিতে সন্তুষ্ট মানুষ। তবে এ অবস্থা ধরে রাখতে অস্থায়ী পুলিশক্যাম্পগুলো স্থায়ী করণ ও জনবল বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি।

গতকাল বুধবার বিকেলে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সভা কক্ষে আয়োজিত এক কর্মশালায় উপরোক্ত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বীরমুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকসহ গাংনীর বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের ভবিষ্যত নির্ধারণে এ কর্মশালার আয়োজন করে গাংনী থানা।

অনুষ্ঠানে সভাপত্বি করেন গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুর রহমান। অতিথি ছিলেন গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যন ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক, গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) হাসিবুল আলম।

অনুষ্ঠানে বক্তারা পুলিশ ক্যাম্পের প্রয়োজনীয়তা, পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের পূর্ব ও বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বলেন, বর্তমান সময়ে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি ভালো থাকলেও সেবার মান বৃদ্ধির জন্য পুলিশ সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। একই সাথে পুলিশের জন্য প্রয়োজনীয় যানবাহন দেয়া একান্ত জরুরি। বিশেষ করে টহল, অভিযান ও কোনো ঘটনার তাৎক্ষনিক সেবা পাওয়ার জন্য পুলিশের যানবাহন বৃদ্ধি করতে না পারলে সেবার মান বৃদ্ধি পাবে না। তাই গাংনীর চারটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প দ্রুত স্থায়ী ও আধুনিকায়নের দাবি এখন জনদাবিতে পরিণত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গাংনী উপজেলায় ৯টি পুলিশ ক্যাম্পের মধ্যে ভবানিপুর, পীরতলা, কসবা, হেমায়েতপুর ও হিন্দা পুলিশ ক্যাম্প অস্থায়ী। বাকিগুলো স্থায়ী।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More