ঘুমের মধ্যে কম্বল চাপায় মারা গেলো ১১ মাসের শিশু জারা
চুয়াডাঙ্গার ছয়ঘরিয়ায় শিক্ষক দম্পতির কান্নায় এলাকার বাতাস ভারী
আফজালুল হক: আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি জুনায়েদ তাসমিন ওরফে জারা খাতুনের প্রথম জন্মবার্ষিকী। একমাত্র মেয়ের জন্মদিন ধুমধামের সাথে উদযাপন করবেন বাবা-মা। তবে তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হলো না। গত শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে ঘুমের মধ্যে কম্বল চাপা পড়ে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে জারা খাতুনের করুণ মৃত্যু হয়। জুনায়েদ তাসমিন ওরফে জারা খাতুন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের মেয়ে। দুই ভাইবোনের মধ্যে জারা ছিলো ছোট। বাবা জামাল উদ্দিন গিরীশনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মা শিরিন সুলতানা ছয়ঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। জারা খাতুনের চাচা দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে জানান, রাতে বাবা-মায়ের সাথে ঘুমিয়ে ছিলো জারা খাতুন। ঘুমের মধ্যে নড়াচড়া করতে করতে মায়ের পায়ের নিচে চলে যায় মেয়ে। এতে কম্বল চাপা পড়ে শ্বাসবন্ধ হয়ে মারা যায়। রাত ২টার দিকে পিতা জামাল উদ্দিন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে উঠলে মেয়েকে পাশে না পেয়ে তার মায়ের পায়ের কম্বলের নিচে দেখতে পান। মেয়ে নড়াচড়া না করলে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরও বলেন, আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি মেয়ের জন্মদিন ছিলো। মেয়ের জন্মদিনের আয়োজনেরও কথা ছিলো। তার আগেই চলে গেলো না ফেরার দেশে। বড় ছেলের নাম সিয়াম সিদ্দীকি (৭)। একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে বাবা-মা পাগল প্রায়। স্থানীয় ইউপি সদস্য আপিল উদ্দিন দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে জানান, খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। প্রথম জন্মবার্ষীকির দুদিন আগেই কম্বল চাপা পড়ে মৃত্যু হলো মেয়েটার। এ ঘটনায় পুরো গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে গ্রামের কবরস্থানে দাফনকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আল ইমরান জুয়েল দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, ভোর ৪টার দিকে পরিবারের সদস্যরা জারা খাতুনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। তিনি আরও বলেন, জারা খাতুন আমার চাচাতো বোনের মেয়ে। ঘুমের মধ্যে কম্বলের নিচে চাপা পড়ে শ্বাসবন্ধ হয়ে মারা গেছে। মেয়েকে হারিয়ে মা-বাবা পাগল প্রায়।