চুয়াডাঙ্গার তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে দু’ভাগে বিভক্ত : একদিকে নির্বাচন অন্যদিকে চলছে প্রশাসক নিয়োগের প্রক্রিয়া

বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে তিতুদহ ইউনিয়ন পুনর্গঠন এবং নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয়েছে। আইনি জটিলতায় তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলেও নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়নের নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই সাথে তিতুদহ ও গড়াইটুপি ইউনিয়নে প্রশাসক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এদিকে ইউনিয়ন দুটিতে অভিভাবক না থাকায় নাগরিক সনদসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের জন্য চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ইউনিয়নের নাগরিকরা। ইউনিয়ন দুটিতে দ্রুত প্রশাসক নিয়োগের দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী মহল।

জানাগেছে, ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত হয় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। মেয়াদ শেষের আগেই ব্যাপক সীমানা এবং অর্ধলক্ষ জনগোষ্ঠির সেবা প্রদানে বিঘœ সৃষ্টি হওয়ায় তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে পুনর্গঠিত তিতুদহ ও নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদ গঠণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ইউনিয়ন বিভক্তের পরপরই সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দেখা দেয় আইনি জটিলতা। আইনি জটিলতার আংশিক সমাধান হলে গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের দার খুলে যায়। তিতুদহ ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে আইনি জটিলতা থেকে গেলেও গড়াইটুপি ইউনিয়নের তফশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফশিল অনুযায়ী আগামী ২০ অক্টোবর নির্বাচন। জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানাগেছে, এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান ও মেম্বার পদে ৫৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। যাচাই বাছাইকালে একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রির্টানিং অফিসার। যদিও সেটি আপিলের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বৈধ প্রার্থীর প্রাথমিক  তালিকায় রয়েছেন ৪ চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ৫১ মেম্বার প্রার্থী। এদের মধ্যে আছেন ১নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার প্রার্থী ৩ জন, ২নং ওয়ার্ডে ২ জন ও ৩নং ওয়ার্ডে ২ জন। সাধারণ পুরুষ প্রার্থীদের তালিকায় আছেন ১নং ওয়ার্ডে ৫ জন, ২নং ওয়ার্ডে ৫ জন, ৩নং ওয়ার্ডে ৩ জন, ৪নং ওয়ার্ডে ৪ জন, ৫নং ওয়ার্ডে ৫ জন, ৬নং ওয়ার্ডে ৬ জন, ৭নং ওয়ার্ডে ৬ জন, ৮নং ওয়ার্ডে ৭ জন ও ৯ নং ওয়ার্ডে ৪ জন। তবে ৩ অক্টোবর মনোনয়পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন চুড়ান্ত হবে শেষ পর্যন্ত কতজন প্রার্থী গড়াইটুপি ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন তা নির্ধারিত হবে বলে নির্বাচন কর্মকর্তা তারেক আহম্মেদ জানিয়েছেন। এদিকে আ.লীগ ও বিএনপি চেয়ারম্যান প্রার্থীদের দলীয় প্রতীক চুড়ান্ত হলেও মেম্বার ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতীক ৪ অক্টোবর ঘোষিত হবে। প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্ধ না পেলেও নাওয়া খাওয়া ভুলে কৌশল অবলম্বন করে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে; দিচ্ছেন প্রতিশ্রুতি চাইছেন দোয়া ও ভোট। প্রতীক হাতে পেলে আটঘাট বেঁধে মাঠে নামবেন বলে অনেক প্রার্থী জানিয়েছেন। এদিকে তিতুদহ ইউপি চেয়ারম্যান আকতার হোসেন পদত্যাগ করায় এবং গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন চলমান থাকায় অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়েছে ইউনিয়ন দু’টি। ফলে নাগরিক সনদসহ বিভিন প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের জন্য চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ইউনিয়নবাসীকে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান বলেন, তিতুদহ ও গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদের জন্য প্রশাসক নিয়োগ চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। শিগগিরই নির্দেশনা এসে যাবে বলে আশা করছি।

উল্লেখ্য, এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা প্রকৌশল অফিসের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসক বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক প্রেরিত পত্র প্রাপ্তির পর স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লি¬ উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ২০১৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ৬৮৬ নং পত্রের নির্দেশক্রমে এবং স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) সংশোধন আইন ২০০৯ এর ১১ ধারা মোতাবেক জেলা প্রশাসকের ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে সংশি¬ষ্ট জেলা প্রশাসক ২৪ জুন ২০১৫ ইং সালে তিতুদহ ইউনিয়নকে বিভক্ত করে নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়ন নামে নতুন ইউনিয়ন এবং তিতুদহ ইউনিয়নকে পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশি¬ষ্ট মন্ত্রণালয়ে অনুলিপি প্রেরণ করেন। তারই আলোকে ওই বছর ২৪ সেপ্টম্বর গেজেট প্রকাশিত হয়। গেজেট প্রকাশের পর সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দেখা দেয় জটিলতা। ফলে পরিষদের মেয়াদ শেষ হলেও আইনি জটিলতার মারপ্যাঁচে ৪ বছর অনুষ্ঠিত হয়নি নির্বাচন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More