স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গা উপজেলার শালিকা গ্রামে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে গৃহবধূকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ওরফে জহরনালের বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৭ টার দিকে ওই গৃহবধূর বাড়িতে এঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত জহিরুল ইসলাম ওরফে জহরনাল (৬৫) শালিকা গ্রামের রোডপাড়ার মৃত ফজের আলী ছেলে। তিনি শালিকা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি। এ ঘটনায় গতকাল রাতেই আলমডাঙ্গা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তোভুগী গৃহবধূ। লিখিত অভিযোগের বিষয়টি দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে নিশ্চিত করেছেন আলমডাঙ্গা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম। লিখিত অভিযোগসূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ চার বছর যাবত গৃহবধূকে কু-প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করে আসছে জহিরুল ইসলাম ওরফে জহরনাল। বিভিন্ন সময় অজুহাত দেখিয়ে গৃহবধূর মোবাইলে কল করেও উত্যক্ত করতো। পরবর্তীতে মোবাইলের সিম পরিবর্তন করে গৃহবধূ। বিষয়টি স্বামীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানানো হয়। এ নিয়ে কয়েকবার গ্রাম্যভাবে সালিস হলেও কোন সুরাহা হয়নি। প্রতিবাদ করলে স্বামীসহ গৃহবধুকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যার দিকে বাড়ির উঠোনে শিশু সন্তানকে ভাত খাওয়াচ্ছিলেন গৃহবধূ। বাড়িতে স্বামী না থাকার সুযোগে অভিযুক্ত জহিরুল ইসলাম ওরফে জহরনাল ঢুকে গৃহবধূকে জড়িয়ে ধড়ে। পরে শিশু সন্তানকে মাটিতে ফেলে দিয়ে গৃহবধুকে জোর করে শয়ন করে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করলে ব্যর্থ হয়। পরে ঘর থেকে বের হয়ে সন্তানকে নিয়ে চলে যেতে চাইলে গৃহবধুকে বেধড়ক মারধর করে জহিরুল ইসলাম ওরফে জহরনাল। অভিযোগে আরও বলা হয়, মারধরে শিশু সন্তান সহ গৃহবধু আহত হয়। পরে প্রতিবেশিরা ঘটনাস্থলে পৌছালে অভিযুক্ত জহিরুল ইসলাম ওরফে জহরনাল গৃহবধূ ও তার স্বামীকে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এদিকে, অভিযোগে বলা হয়েছে ঘটনার পর গৃহবধূ স্বামী খবর পেয়ে বাড়িতে পৌছে স্ত্রী তার শিশু সন্তানকে উদ্ধার করে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। চিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত হতে গতকাল রাত পৌনে ১ টা দিকে ভুক্তোভুগী ও তার শিশু সন্তানের নাম-ঠিকানা উল্লেখ করে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোবাইলে যোগাযোগ করে দৈনিক মাথাভাঙ্গার প্রতিবেদক। সেখানে থাকা জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাশুক রহমান মাথাভাঙ্গাকে নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার বিকেল ৬টা থেকে রাত পৌনে ১ টা পর্যন্ত ওই নাম ও গ্রামের (ভুক্তোভুগী ও শিশু সন্তান) কেউ চিকিৎসা নেইনি। রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভুক্তোভুগী ও তার স্বামীর সাথে মোবাইলে কথা হয় প্রতিবেদকের। তারা জানায়, থানা থেকে গাড়িতে করে বাড়িতে যাচ্ছেন। চিকিৎসার বিষয়ে জানতে চাইলে গৃহবধূ বলেন, ঘটনার পর স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে সরাসরি থানায় চলে গিয়েছিলাম। শরীরটা ভালো না। খুবই ক্লান্ত। এখনো চিকিৎসা নেয়া হয়নি। আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হবো বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে জানতে শালিকা ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি আবু তাহের আবু ও অভিযুক্ত জহিরুল ইসলাম ওরফে জহরনালের মোবাইল নাম্বারে কল করা হলে নাম্বার বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। আলমডাঙ্গা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, গতকাল রাতে বৃদ্ধের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার লিখিত অভিযোগ দিয়েছে এক নারী। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা করা হবে।