দীর্ঘদিনের জট খুললেও দৃশ্যমান কোনো প্রস্তুতি নেই

স্টাফ রিপোর্টার: দীর্ঘ ১৭ মাস যাবৎ বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষার দুয়ার খোলা নিয়ে আলোচনা চলছে বিস্তর। দীর্ঘদিনের জটও খুলতে শুরু করেছে। ঘোষণা করা হয়েছে চলতি বছরের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার সময়। প্রস্তুত এসএসসি’র প্রশ্ন, শেষ পর্যায়ে এইচএসসি’র। ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রমও চলছে। আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ঘোষণা দিয়েছেন দ্রুত শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে। কিন্তু দৃশ্যমান কোনো প্রস্তুতি এখনো গ্রহণ করা হয়নি। গতকাল সোমবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রোগ্রাম (কর্মসূচি) ঠিক করছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, এর আগে সচিব সভায় নির্দেশনা দিয়ে দেয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আজকেও কথা হয়েছে। তারা প্রোগ্রাম ঠিক করছে- কীভাবে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা আপনাদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে বসবে। পাবলিকলি বলে দেবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলতি ছুটি ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু ১লা সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুর সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা বলা হলেও নেয়া হয়নি বাস্তবিক কোনো পদক্ষেপ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দীর্ঘ বন্ধে আকুল শিক্ষার্থীদের হয়তো অপেক্ষায় থাকতে হবে আরও কিছুদিন। রোডম্যাপ অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে প্রয়োজন হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সংস্কারের কাজ। যার জন্য প্রয়োজন হবে অন্তত ১৫দিন সময়। বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হলে নেয়া হয়নি কোনো ধরনের পরিকল্পনা। প্রতিষ্ঠানেও দেয়া হয়নি প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ। এ থেকে অনুমান করা যায়, হয়তো ফের বাড়ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি। তবে ব্যতিক্রমও আছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে হলগুলো। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে পরিপাটি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সূত্রে জানা যায়, দ্রুতই তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে চান। তাদের পরিকল্পনায় রয়েছে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ কিংবা নভেম্বরে খোলা হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে যে প্রস্তুতি তা আগেও নেয়া হয়েছিলো। তাই আমরা স্বল্প সময়ে ও দ্রুততার সঙ্গে প্রস্তুতি সারতে পারবো। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নভেম্বরে খুলে মাঝামাঝি সময়ে এসএসসি পরীক্ষা নেয়া হবে। আর প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আলাদা করে কোনো পরিকল্পনা নেই। স্কুল-কলেজের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সমন্বয় করেই তারা এগুবেন। এ ছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নির্ভর করছে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির ওপরও। গেল বছরে নভেম্বর-ডিসেম্বরে কমে এসেছিলো করোনার সংক্রমণের হার। এ ছাড়াও এখন কমতে শুরু করেছে সংক্রমণের হার। গতকাল সংক্রমণের হার ছিল ১৫.৫৪ শতাংশ। এই সংক্রমণের হার একক সংখ্যায় নেমে আসলে খোলা সম্ভব হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আবার শিক্ষকদের টিকাদান মোটাদাগে অগ্রগতি হয়েছে। এদিক থেকেও স্বস্তি মিলেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের সব শিক্ষক-কর্মচারী টিকাদানের আওতায় এসেছেন। বেসরকারি ৩ লাখ ৬৩ হাজার ২২২ জনের মাঝে টিকা পেয়েছেন ২ লাখ ৭৮ হাজার ৪২৬ জন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকাদানের পর শুরু হবে সশরীরে পাঠদান। দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী ১ লাখ ৭৯ হাজার ২৬১ জন নিবন্ধন করেছেন। যার মধ্যে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৭৯ হাজার ৯১৪ জন। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৬ হাজার ৭২ জন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪ হাজার শিক্ষকের মাঝে ৩০ হাজার শিক্ষককে টিকা দেয়া হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মোটা অঙ্কের শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন, ২৮ লাখ। সবমিলিয়ে উচ্চ শিক্ষা পর্যায়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪০ লাখ। স্বভাবতই এসব শিক্ষার্থীদের টিকাদান সময়সাপেক্ষ বিষয়। মাউশি’র মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ফারুক বলেন, টিকা কার্যক্রম দ্রুত চললে সংক্রমণ কমবে। এই মুহূর্তে স্বল্প পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরানোর পরিকল্পনাও নেয়া হতে পারে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More