দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে আতঙ্কে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষ হচ্ছে আজ : প্রতীক বরাদ্দ কাল
স্টাফ রিপোর্টার: দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ১১ নভেম্বর। এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হচ্ছে আজ। কাল চূড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসাররা। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার-প্রচারণায় নামবেন চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত ও সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থীরা।
এদিকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য অনেক স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীকে হুমকি-ধমকি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। বেশ কিছু প্রার্থী সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারদের কাছে হুমকির বিষয়টি অবহিত করেছেন। অনেক প্রার্থী আতঙ্কে রয়েছেন প্রার্থিতা ঠিকিয়ে রাখা নিয়ে। তারা শঙ্কা করছেন- জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করানো হতে পারে। তাই প্রার্থিতা টিকিয়ে রাখতে অনেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন।
তৃণমূলের সবচেয়ে বড় নির্বাচন ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় ধাপে ৩৯ রাজনৈতিক দলের মধ্যে অংশ নিচ্ছে মাত্র ১৭টি। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টিসহ পাঁচ দলের প্রার্থী বেশি থাকলও নামে মাত্র নির্বাচন অংশ নিচ্ছে ১২টি দল। দ্বিতীয় ধাপে ৮৪৬ ইউপির তিন পদে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা সর্বমোট ৪৩ হাজার ৭৬৭ জন। চেয়ারম্যান পদে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৩ হাজার ৯৪৯ জন। এছাড়া বৈধ সাধারণ সদস্য প্রার্থীর সংখ্যা হচ্ছে ৩০ হাজার ৪৪৮ জন এবং সংরক্ষিত সদস্য পদে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা হচ্ছে ৯ হাজার ৩৭০ জন। তবে আপিলে বেশ কিছু প্রার্থী মনোনয়ন ফিরে পেয়েছেন। আজ ইসি প্রত্যাহার শেষে চূড়ান্ত সংখ্যা প্রকাশ করবে। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী রয়েছেন ৩১ ইউপিতে। আজ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হলে একক প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। তবে প্রত্যাহার শেষে এই সংখ্যা বাড়তেও পারে।
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, দ্বিতীয় ধাপের ৮৪৬ ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দিয়েছে ৮৩৮ ইউপিতে, বাছাই বাদ পড়েছে ১১ প্রার্থী। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী দিয়েছে ৩৬৮ ইউপিতে, বাছাইয়ে বাদ পড়েছে ১০ প্রার্থী। জাতীয় পার্টি প্রার্থী দিয়েছে ১০৭ ইউপিতে, বাদ পড়েছে ২ জন প্রার্থী। জাকের পার্টি-প্রার্থী দিয়েছে ৪৯ ইউপিতে, বাদ পড়েছে ২ জন প্রার্থী। চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন-২৬৫৫ জন, বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন ৯৯ জন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিতরা স্বতন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে এ নির্বাচন অংশ নিচ্ছেন। তবে বিএনপি এ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানালেও এই দলের নেতা-কর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্বিতীয় ধাপের ৮৪৬ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মোট ৬৯১ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। এ ধাপে চেয়ারম্যান পদে ১২৬ জনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ১১ জন প্রার্থীসহ মোট ২৭ জন দলীয় প্রার্থী রয়েছেন। আর স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে ৯৯ জনের। সাধারণ সদস্য পদে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে ৪৪২ জনের। সংরক্ষিত সদস্য পদে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে ১২৩ জনের। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২১ অক্টোবর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা হচ্ছে সর্বমোট ৪৩ হাজার ৭৬৭ জন। এর আগে ৮৪৬ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছিল ৪ হাজার ৭৫ জন। সদস্য পদে দাখিল করেছিল ৩০ হাজার ৮৯০ জন এবং সংরক্ষিত সদস্য পদে মনোনয়ন দাখিল করেছিল ৯৪৯৩ জন। বাছাই শেষে বৈধ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংখ্যা হচ্ছে ৩৯৪৯ জন। বৈধ সাধারণ সদস্য প্রার্থীর সংখ্যা হচ্ছে ৩০ হাজার ৪৪৮ জন এবং সংরক্ষিত সদস্য পদে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা হচ্ছে ৯৩৭০ জন। তবে আপিলে বেশ কিছু প্রার্থী মনোনয়ন ফিরে পেয়েছেন। সেই হিসাবে প্রার্থী সংখ্যা বেশি হবে। তফসিল অনুযায়ী আজ প্রত্যাহার শেষে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে প্রতিদ্ধন্ধিতা করতে আগ্রহীরা ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন; ২১ অক্টোবর বাছাই হয়। আজ ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More