মুজিবনগর প্রতিনিধি: দ্বিতীয় ধাপে মুজিবনগর উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের নির্বাচনী-২০২১ ডিউটি করতে আনসার ভিডিপির সদস্যদের নিকট থেকে মাথাপিছু ৫০০-৭০০ টাকা করে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ তুলে ঘুষের টাকা ফেরত চেয়ে বিক্ষোভ করেছে আনসার-ভিডিপি সদস্যরা। গতকাল রোববার (২৪ এপ্রিল) দুপুরের দিকে ডিউটিভাতা তোলার সময় ঘুষের টাকা ফেরত চেয়ে আনসার ভিডিপি অফিসের সামনে আন্দোলন করে ৪ ইউনিয়নের আনসার ভিডিপির ৬০০ সাধারণ সদস্য।
মুজিবনগরে বাগোয়ান ইউনিয়নের আনসার সদস্য চন্দনসহ কয়েকজন জানান, ইউনিয়ন দলনেতা আবুল কাশেম নির্বাচনী ডিউটি করানোর জন্য আমাদের কাছ থেকে মাথাপিছু ৫০০-৭০০ টাকা করে নিয়েছেন।
এভাবে একই অভিযোগ তুলে মহাজনপুর ইউনিয়নের আনসার ভিডিপি সদস্য সারুখ হোসেন, সাইদুর রহমান, আরিফুল ইসলাম ও মোমিনুল ইসলাম জানান, আমাদের ইউনিয়ন দলনেতা সেফাউল ইসলাম আমাদের কাছ থেকে নির্বাচনী ডিউটির প্রতিশ্রুতিসহ মাথাপিছু ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা করে পাইবে দেবে বলে ৭০০ টাকা করে ঘুষ নিয়েছে।
এদিকে মোনাখালী ইউনিয়নের রশিকপুর গ্রামের বাদল শেখ অভিযোগ করে বলেন, আমাদের দলনেতা ফয়সাল মাহামুদ আমাদের সাথে নির্বাচনী ডিউটি দিতে টাকা নিয়েছে। কিন্তু এখন টাকা নিতে যেয়ে আমরা মাথাপিছু মাত্র ২১০০ টাকা করে পাচ্ছি। দুপুরে খাবার দেবার কথা থাকলেও সেটা দেয়নি। আমরা ৫দিন ডিউটি করতে ৫শ টাকা করে ঘুষ দিয়েছি এবং দুপুরের খাবারসহ অন্যান্য খরচ করেছি আরো ৩ থেকে ৪শ টাকা করে। এখন এই কয়টা টাকা দিলে আমাদের কিভাবে পুষাবে। একজন মানুষ মাঠে কাজে গেলেও তো দিন ৫শ টাকা আয় করে।
এ বিষয়ে বাগোয়ান ইউনিয়ন কমান্ডার আবুল কাশেম টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি ৫শ থেকে ৭শ টাকা করে নেয়নি। তবে কাগজ ঠিক করতে ২শ থেকে ৩শ টাকা করে নিয়েছি।
এত টাকা একটা কাগজ ঠিক করতে খরচ হয় কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাগজ ঠিক করে বাকি যে টাকা ছিলো এটা সকলের পকেটে গিয়েছে।
মোনাখালী ইউনিয়ন দলনেতা ফয়সাল মাহামুদ টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, যারা আমার নামে টাকা নেয়ার বিষয়ে অভিযোগ করছেন তারা কেউ মোনাখালী ইউনিয়নের না। আমি তাদের কাউকে চিনি না। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে আমি টাকা নিয়েছি তাহলে আমি চাকরি ছেড়ে দেবো।
এদিকে মুজিবনগর উপজেলা আনসার ভিডিপি অফিসার মিরাজুল ইসলাম জানান, আমি নির্বাচনী ব্রিফিংয়ের দিন বলেছিলাম, ডিউটি করানোর জন্য কেউ যদি আপনাদের কাছে থেকে টাকা নিয়ে থাকে তাহলে আমাকে বলেন; আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেবো। কিন্তু তখন কেউ মুখ খোলেনি। তবে তারা আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করলে কেউ যদি টাকা নিয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে টাকা নেয়ার সত্যতা প্রমাণ করে আইনগত শাস্তির ব্যবস্থা করবো।
মুজিবনগর ইউএনও সুজন সরকার বলেন, চার ইউনিয়নের চারজন আনসার সদস্যের লিখিত অভিযোগ নিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দোষী প্রামাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ