চুয়াডাঙ্গায় সব রেকর্ড ভেঙে একদিনে ৫১ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত

দামুড়হুদার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাপকহারে ছড়িয়েছে ভাইরাস : সংক্রমণ রোধে লকডাউনসহ নানা পদক্ষেপ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় এক দিনে রেকর্ড সংখ্যক করোনা ভাইরাস সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর আগে এক দিনে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৫১ জন রোগী শনাক্ত হয়নি। এর মধ্যে ৩৭ জনই দামুড়হুদা উপজেলার বাসিন্দা। ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫১ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। ৩৭ জন দামুড়হুদা উপজেলার বাসিন্দা। শিবপুরেই ১৬ জন। সংক্রমণ রোধে দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গা ও নাটুদাহ ইউনিয়নের কিছু এলাকা ইতোমধ্যেই লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ বৃহস্পতিবার পূর্বের প্রেরিত ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পায়। এদিন নতুন আরও ৮৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ঠ ল্যাবে প্রেরণ করা হয়েছে। শনাক্তকৃত ৫১ জনের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ১৩ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ১জন ও দামুড়হুদা উপজেলার ৩৭ জন। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১৬৩ জন। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৪৭ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ১০ জন, দামুড়হুদা উপজেলার ৯১ জন, জীবনগর উপজেলার ১৫ জন। সদর উপজেলার ৪৭ জনের মধ্যে হাসপাতালে ৭ জন, বাড়িতে ৩৯ জন, রেফার্ড ১ জন। আলমডাঙ্গা উপজেলার ৮জন বাড়িতে একজন হাসপাতালে ও ১ জন রেফার্ড রয়েছেন। দামুড়হুদা উপজেলার ৯১ জনের মধ্যে বাড়িতে ৭৪ জন, হাসপাতালে ১৫ জন, রেফার্ড রয়েছেন ২ জন। জীবননগর উপজেলার ১৫ জনের মধ্যে একজন হাসপাতালে বাকি ১৪ জন বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার শনাক্তকৃতদের মধ্যে দামুড়হুদার শিবপুর গ্রামের ১৬ জন, হরিরামপুরের ৮জন, কাতুবপুরের ১জন, বাস্তপুরের ১ জন, দামুড়হুদা রশিদপাড়ার ১ জন, জুড়ানপুরের ১ জন, বাঘাডাঙ্গার ১ জন, কালিয়া বকরির ২ জন, মুক্তারপুরের ১ জন, বদনপুরের ১ জন, হাতিভাঙ্গার ১ জন, হরিশচন্দ্রপুরের ২ জন, উজিরপুরের ১ জন। সদর উপজেলার ১৩ জনের মধ্যে ৪ জনের বাড়ি জেলার বাইরে। এরা ভারত থেকে দেশে ফেরা। বাকি ৯জন স্থানীয়। এদের মধ্যে দৌলাতদিয়াড়র দক্ষিণপাড়া, জেলা শহরের আরামপাড়া, কোটপাড়া, পশুহাসপাতালপাড়া, পুরাতন হাসপাতালপাড়া, হাটকালুগঞ্জের, বনানীপাড়ার, সাতগাড়ী, জেলা কারাগারের একজন করে রয়েছেন। আলমডাঙ্গা উপজেলার শনাক্তকৃতর বাড়ি ওসমানপুরে।
চুয়াডাঙ্গা জেলায় নতুন ৫১ জনকে নিয়ে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯১ জন। সুস্থ হয়েছেন মোট ১ হাজার ৮শ ২০ জন। মারা গেছেন ৬৮ জন। বৃহস্পতিবারের নতুন ৮৮ জনের নমুনা নিয়ে মোট নমুনা নেয়া হয়েছে ১০ হাজার ৩শ ৫৮ জনের। রিপোর্ট পাওয়া গেছে ১০ হাজার ৯২ জনের। এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৬৮ জনের মধ্যে সদর উপজেলার ৩৯ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ১৯ জন, দামুড়হুদা উপজেলার ১৬ জন, জীবননগর উপজেলার ৪ জন। অপরদিকে দেশে বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ হাজার ৯শ ৭২ জনের নমুনা নেয়া হয়েছে। এ নিয়ে মোট নমুনা নেয়া হয়েছে ৬০ লাখ ২ হাজার ৯শ ৯৪ জনের। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েৈেছ ১ হাজার ৬শ ৮৭ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লাখ ৫ হাজার ৯শ ৮০জন। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হ াজার ৯শ ৭০ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হলেন ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৩৫ জন। ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৩০ জন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা ১২ হাজার ৭শ ২৪ জন।
এদিকে চুয়াডাঙ্গার ভারত সীমান্তবর্তি এলাকায় করোনা ভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়াচ্ছে। সংক্রমণ রোধে প্রশাসনের তরফে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ও নাটুদহ ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় পরিস্থিতি মহামারি আকারে রূপ নিতে যাচ্ছে। যেসব বাড়িতে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত তথা কোভিড-১৯ রোগী রয়েছেন ওইসব বাড়িতে লাল পতকাও লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে। ফলে স্বাস্থ্য বিধি মেনে মাস্ক পরার উপর যেমন সবার্ধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, তেমনই স্বাস্থ্য বিভাগও প্রত্যন্ত অঞ্চলে অস্থায়ী ক্যাম্প করে উপসর্গে আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে প্রেরণ করছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More