কালীগঞ্জে জামায়াত সদস্য সাজাতে চেয়ারম্যানের নাটক : গভীর রাতে বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর

কালীগঞ্জ সংবাদদাতা: জমি নিয়ে চলছে বিরোধ। আদালতে মামলাও বিচারাধীন। আর মামলার বাদীকে জামায়াত সদস্য বানাতে পুলিশের নাম ভাঙিয়ে গভীর রাতে বাড়িতে অভিযানের নামে হামলা চালানো হয়েছে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দুলাল মুন্দিয়া গ্রামে। তবে পুলিশ বলছে, দুলাল মুন্দিয়া গ্রামে পুলিশের কোনো টিম দুলাল মুন্দিয়ায় অভিযানে যায়নি।

স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে হঠাৎ শব্দ। ৬-৭ জনের একটি দল খলিলুর রহমান ও মহিদুলের বাড়িতে আসে। এরপর চিৎকার শুনতে পায়। কিছুক্ষণ থাকার পর তারা চলে যায়।

দুলাল মুন্দিয়া গ্রামের খলিলুর রহমান জানান, আমার একটি জমি নিয়ে ঝিনাইদহ আদালতে মামলা চলছে। মামলায় ৭নং রায়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপুকে বিবাদী করা হয়েছে। আদালত উক্ত জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছেন। তিনি আমার জমি দখল করে সেখানে একটি বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এই নিয়ে চেয়ারম্যানের সাথে বিরোধ। চেয়ারম্যানের ভয়ে আমরা রাতে বাড়িতে ঘুমাতে পারছি না।

তিনি আরো জানান, গত সোমবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে হঠাৎ আমার দুই ভাইয়ের বাড়িতে ৬-৭ জনের একটি দল হামলা চালায়। এ সময় আমরা বাড়িতে ছিলাম না। ঘরের মধ্যে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। জমি নিয়ে বিরোধ থাকায় তিনি এখন আমাদের জামায়াত সদস্য বানানোর চেষ্টা করছেন। এছাড়াও ওই জমিতে গেলে আমার পা কেটে ফেলবে বলেও হুমকি দেয়া হচ্ছে।

খলিলুর রহমানের স্ত্রী রহিমা বেগম জানান, ছোট দুইটা সন্তান নিয়ে রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ বাড়ির জানালা ও দরজায় লাঠির শব্দ। এরপর দরজা খোলার পর ৬-৭ জন আমাকে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বলে। এরমধ্যে দুইজন গ্রাম পুলিশ ও আলী হোসেন অপু চেয়ারম্যানের ছেলে ছিলো। ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র এলোমেলো ও ভাঙচুর করে। কিছু না পেয়ে বাইরে বের হয়ে আসে। এরপর অন্য একজনের হাত থেকে একটি বই নিয়ে বলে এই বই তোমাদের ঘরে পাওয়া গেছে। এ সময় বাড়ির একপাশে চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপু দাঁড়িয়ে ছিলেন।

মহিদুল ইসলামের স্ত্রী চামেলী বেগম জানান, আমার ঘরে ২-৩ জন প্রবেশ করে। এরপর আমার সাবালিকা মেয়েকে কান ধরে টান দেয়। এরপর আমি তাদেরকে ঘর থেকে বের করে দিই।

এ ব্যাপারে ৭নং রায়গ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপু বলেন, দুলাল মুন্দিয়া গ্রামে জামায়াত সদস্যদের গোপন মিটিং চলছিলো। এমন খবর পেয়ে পুলিশের সহযোগিতায় গতকাল রাতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। একটি জিহাদী বইও উদ্ধার করা হয়।

তবে দুলাল মুন্দিয়া গ্রামে সোমবার রাতে কোনো পুলিশ সদস্য অভিযানে যায়নি উল্লেখ করে কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা: মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। পুলিশের কোনো সদস্য গত সোমবার রাতে দুলাল মুন্দিয়া গ্রামে অভিযানে যায়নি। আর চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপু ও খলিলুর রহমানের জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More