আলমডাঙ্গা বধ্যভূমি পার্ক নির্মাণ কাজের উদ্বোধনকালে এমপি ছেলুন জোয়ার্দ্দার

পার্কটি মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের ইতিহাস জানান দেবে

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গা বধ্যভূমি পার্ক নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করলেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। গতকাল সকালে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আলমডাঙ্গা বধ্যভূমি পার্কের নাম সংবলিত সাইনবোর্ড প্রতিষ্ঠা করে এ পার্ক নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন করেন।

এ সময় তিনি বলেন, এ পার্কটি শুধু চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থাই হবে না, একই সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের ইতিহাসও নতুন প্রজন্মকে স্মরণ করিয়ে দেবে। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে সেইসব সূর্য সন্তান জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদেরকে উপযুক্ত সম্মান জানাতে হবে। নতুন প্রজন্মকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের গৌরবগাঁথা স্মরণ করিয়ে দিতে হবে। স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নির্যাতন অত্যাচারে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, তাদের সুমহান স্মৃতিকে উত্তর প্রজন্মের নিকট পৌঁছে দিতে আলমডাঙ্গা বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেছিলাম।

আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন আলীর সভাপতিত্বে পার্ক নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন, আলমডাঙ্গা পৌরমেয়র ও উপজেলা আ.লীগের সভাপতি হাসান কাদির গনু, আলমডাঙ্গা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. সালমান আহমেদ ডন।

উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপির সহযোগিতায় বধ্যভূমির মতো এ পার্কটিও নির্মিত হচ্ছে। তার প্রতি আমাদের অবিচল আস্থা রয়েছে। তিনি ইতোপূর্বে আমাদের বধ্যভূমি নির্মাণ করেছেন। দর্শনার্থীদের বিশ্রামাগার নির্মাণ করেছেন। আমাদের বিশ্বাস তিনি সুদৃশ্য বধ্যভূমি পার্ক নির্মাণের ব্যাপারেও আন্তরিক থাকবেন।

বিশেষ অতিথি পৌর মেয়র বলেন, এ পার্কটি নির্মিত হলে পৌরবাসীসহ আলমডাঙ্গার মানুষের চিত্ত বিনোদনের চমৎকার সুব্যবস্থা হবে। কর্মক্লান্ত মানুষ শ্রান্তি নিরসনের উপলক্ষ পাবে। মানুষের সুন্দর মনন গড়ে উঠবে।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ক কর্মকর্তা এনামুল হক, উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি বিশিষ্ঠ শিক্ষানুরাগী ও ব্যবসায়ী আলহাজ লিয়াকত আলী লিপু মোল্লা, উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি আনিসুজ্জামান মল্লিক, পৌর আ.লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর মতিয়ার রহমান ফারুক, পৌর আ.লীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য আবু মুসা, উপজেলা আ.লীগের প্রচার সম্পাদক মাসুদ রানা তুহিন, পৌর আ.লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাইফুর রহমান পিন্টু, ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ পিন্টু, তরিকুল ইসলাম। কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফুল হক, পৌর আ.লীগের প্রচার সম্পাদক মিজানুর রহমান রিপন, ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি সম্পাদকের মধ্যে জয়নাল আবেদীন, আশিকুজ্জামান ওল্টু, মাহমুদুল হাসান চঞ্চল, জাহাঙ্গীর হোসেন, খন্দকার মজিবুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা আহসান উল্লাহ, টুটুল, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি নয়ন সরকার, ছাত্রলীগ নেতা হাসানুজ্জামান, টিটন প্রমুখ।

আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন আলী বলেন, ক্রমেই আলমডাঙ্গা বধ্যভূমির দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এমন পরিস্থিতে বধ্যভূমির পাশে পার্কটি নির্মিত হলে দর্শনার্থীদের চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা হবে। তাছাড়া, বেশ বড় আয়তনের এ উপজেলায় চিত্তবিনোদনের সুব্যবস্থা নেই। পার্কটি নির্মিত হলে এ অভাব পূরণ হবে।

প্রসঙ্গত, আলমডাঙ্গা বধ্যভূমি পার্ক নির্মাণের সংবাদে আনন্দিত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে দেখা গেছে অনেককেই। আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার আয়তন অনেক বিস্তৃত হলেও এ শহরে নেই কোনো চিত্ত বিনোদনের স্থান। উপজেলার একমাত্র শিশুপার্ক রয়েছে পৌর এলাকার  বেশ দূরে মোনাকষা গ্রামে। ক্রমবর্ধমান এ শহরে শিশুসহ স্থানীয়দের চিত্ত বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে শ্রদ্ধা ও বেদনায় একাকার এ বধ্যভূমির মনোরম পরিবেশটাকেই তারা চিত্ত বিনোদনের স্থান ভেবে নিয়েছে। ফলশ্রুতিতে এ পবিত্র স্থানের মর্যাদা অনেক সময় ভুলুণ্ঠিত হয়ে পড়ে। অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে। এ বধ্যভূমির পাশে এ পার্কটি নির্মিত হলে ভবিষ্যতে বধ্যভূমি অবমাননাকর ঘটনা  রোধ করা সম্ভব হবে বলেও অনেকে মনে করেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More