চুয়াডাঙ্গায় পরীক্ষার হল থেকে ডেকে তিন শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ স্কুলের নৈশপ্রহরীর বিরুদ্ধে

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মাখালডাঙ্গা দীননাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির তিন শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী মাসুমের বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে পরীক্ষা চলাকালীন সময় পরীক্ষার কক্ষ থেকে বাইরে ডেকে নিয়ে তাদেরকে পিটিয়ে আহত করা হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সামনে এ ধরনের ঘটনা ঘটার পরও তিনি কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় ভুক্তভোগী পরিবারের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মারধরের কারণে ওইদিন তারা ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারেনি বলেও ওই তিন শিক্ষার্থীর অভিযোগ। আহতরা হলো মাখালডাঙ্গা-দিননাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির হাসিবুর রহমান (১৮), আসিব হোসেন (১৮) এবং মেহেরাব হোসেন (১৬)। আহতরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছে। তবে, ওই ঘটনা নিয়ে গ্রাম জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের লোকজন নৈশ প্রহরী মাসুমের কঠোর ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে। নির্যাতনের শিকার ছাত্ররা লিখিত অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভুইয়া।

আহতরা অভিযোগ করে বলেন, একই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী আবির হাসান বেশ কিছুদিন আগে মোবাইল ফোন নিয়ে বিদ্যালয়ে আসে। বিষয়টি আমরা প্রধান শিক্ষক সাবোদ আলীকে জানালে তিনি আবির হাসানকে বকাঝকা করেন। ওই ঘটনায় আবির হাসানের সাথে আমাদের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। কয়েকদিন আগে আবির হাসানসহ আরও ৪-৫ জন আমাদেরকে মারধর করার হুমকি দিলে আমারও প্রতিবাদ করি। গত দুইদিন আগে আবির হাসানসহ আরও ৪-৫ জন বিদ্যালয়ে এলে আমাদের সাথে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আমরা তাদেরকে চড়থাপ্পর মারি। ওই

ঘটনায় গতকাল সোমবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাদের তার কক্ষে নিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করে দেন। এরপর আমরা পরীক্ষা দিতে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করা মাত্র বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী আমাদেরকে বলে তোদের পরীক্ষা দিতে হবে না। তোরা বাইরে বেরিয়ে আয়। আমরা শ্রেণিকক্ষের বাইরে এলে নৈশ প্রহরী মাসুম বাঁশের লাঠি দিয়ে আমাদের বেধড়কভাবে পেটাতে থাকে। এতে আমাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কালসিটে দাগ হয়ে যায়। আমাদের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা চলছে। সোমবার আমাদের পরীক্ষা ছিলো এবং মারধরের ফলে আমরা বাকি পরীক্ষা ঠিকমতো দিতে পারিনি।

এ বিষয়ে নৈশ প্রহরী মাসুম বলেন, প্রধান শিক্ষক আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন মিমাংসা করতে। তাই আমি মেরেছি।  তবে, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য এ প্রতিবেদককে বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করা চেষ্টা করেন অভিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরী মাসুম।

মাখালডাঙ্গা দিননাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাবোদ আলী বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলাপ আলোচনার পর কি করা যায় দেখবো।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ কুমার সাহার ব্যাক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম ভুইয়া বলেন, ঘটনা খুবই দুঃখজনক। যেখানে স্কুল থেকে বেত তুলে নেয়া হয়েছে সেখানে একজন নৈশ প্রহরী কখনোই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর শরীরে আঘাত করতে পারে না। এছাড়াও অন্যায় করলে আইনের দারস্থ হতে হবে, আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া যাবে না। ওই শিক্ষার্থীরা আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More