চুয়াডাঙ্গায় পানির অভাবে পাটজাগ দিতে পারছেন না কৃষকরা : অনেকের পাট শুকিয়ে যাচ্ছে জমিতেই

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় পানির অভাবে পাটজাগ দিতে পারছেন না চাষিরা। মাঠের পর মাঠ ক্ষেতেই এখনও দাঁড়িয়ে আছে হাজারো কৃষকের পাট। বৃষ্টির আশায় এসব পাট কাটছেন না চাষিরা। অনেকের পাট ক্ষেতেই শুকিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ জমি থেকে পাট কাটলেও পানির অভাবে জাগ দিতে পারছেন না। ফলে আঁটি বাঁধা অবস্থায় শুকিয়ে যাচ্ছে। কৃষি অফিস রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট জাগ দেয়ার কথা বললেও অতিরিক্ত খরচের আশঙ্কায় সেপথে কেউ হাঁটছেন না। সারা বছর খরচ খরচা করে পাট ঘরে তুলতে না পারায় অনেক কৃষকের মাথায় হাত উঠেছে। কোনো কোনো কৃষক অতিরিক্ত খরচ করে পাট থেকে আঁশ ছাড়িয়েও কাক্সিক্ষত দামে বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে অনেককে।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গায় এ বছর ১৬ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে পাটচাষ হয়েছে। যা অন্যান্যবারের তুলনায় কম। চুয়াডাঙ্গার চার উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাটের আবাদ হয়েছে আলমডাঙ্গায়। মাসখানেক আগেই এখানে পাট কাটা শুরু হয়েছে। তবে গর্ত-ডোবায় পানি না থাকার কারণে অনেক কৃষক এখনও পাট কাটেননি। তারা বৃষ্টির জন্য প্রতীক্ষা করছেন। যদি ভারি বর্ষণ হয় তাহলে হয়তো গর্ত-ডোবায় পানি জমবে। তখন পাট কেটে জাগ দেবেন তারা। আলমডাঙ্গার নতিডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আশকার আলী বলেন, পাট জাগ দেয়ার পানির খুবই সংকট এখানে। আমাদের পাশের একটি খালে কয়েক গ্রামের লোক পালাক্রমে পাট জাগ দিচ্ছেন। তাও সবাই সুযোগ পাচ্ছেন না। পাশর্^বর্তী আঠারোখাদা গ্রামের কৃষক সাহাবুল হক বলেন, আমাদের এলাকার মানুষ পাট নিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। বৃষ্টি ছাড়া গর্ত-ডোবায় পানি জমার কোনো বিকল্প নেই। একই উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ গ্রামের দরিদ্র কৃষক আলতাফ হোসেনের কয়েক বিঘা জমির পাট খেতেই শুকিয়ে যাচ্ছে। গ্রামের জুড়োন ম-লের পাটও খেতে পড়ে আছে অযত্ন অবহেলায়। এ গ্রামের কৃষক মুকুল মোল্লা বলেন, ‘এ বছর আমি তিন বিঘা জমিতে পাটচাষ করেছিলাম। পাট ভালোই হয়েছিল। কিন্তু পানির অভাবে পথে বসার জোগাড় হয়েছে। জমি থেকে পাট কেটে আঁটি বেঁধে রেখেছি। কিন্তু পানির অভাবে কোথাও জাগ দিতে পারছি না। তিনি বলেন কৃষি অফিসের কেউ কেউ রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাঠের আঁশ ছাড়িয়ে নান্দা বা গর্তে পানি জমিয়ে জাগ দেয়ার কথা বলছেন, কিন্তু সেটা কোনোভাবেই সম্ভব হয় না। ওটা করতে গেলে কয়েক গুন খরচ হয়ে যাবে। তাতে পাট বিক্রি করে টাকা উঠবে না। চুয়াডাঙ্গার বিশিষ্ট পাটব্যবসায়ী শ্যাম সুন্দর আগরওয়ালা বলেন, ‘এ বছর পাট বিক্রি করে কৃষকের টাকা উঠছে না। আড়তে বসে আমরা ১৮ থেকে ১৯শ’ টাকায় কিনছি একমণ পাট। আর ফড়িয়ারা কিনছে ১৭ থেকে ১৮শ’ টাকায়।’ এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গায় প্রায় ৮০ ভাগ পাট জমি থেকে কর্তন হয়েছে। পানির জন্য পাটজাগ দিতে পারছে না অনেকেই। তবে আমি এখন অফিসের বাইরে থাকায় পুরোপুরি সঠিক সব তথ্য দিতে পারছি না।’

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More