স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্যে মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপন

স্টাফ রিপোর্টার: করোনা মহামারীতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চুয়াডাঙ্গায় যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্যে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। চিরাচরিত কোলাকুলি আর করমর্দন ছাড়াই এবার একে অপরের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তারা। এদিন সকালে পৌর এলাকায় ১৩টি মসজিদে ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায়ের মধ্যদিয়ে শুরু হয় পবিত্র দিনটি। বিশেষ মোনাজাতে করোনার বিস্তার থেকে মুক্তিসহ সারাবিশ্বের মুসলমানদের ওপর দমন, নিপীড়ন, নির্যাতন বন্ধ ও মুসলিম উম্মাহর হেফাজতে মহান আল্লাহর কাছে অশ্রুসিক্ত প্রার্থনা করেন মুসল্লিরা। করোনাভাইরাসের কারণে এবার চুয়াডাঙ্গা পৌর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ হয়নি। ফলে শহরের ১৩টি মসজিদে এ ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। যদিও করোনা মহামারীর কারণে গত বছরের মতো এবার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালন করতে হচ্ছে। ঈদুল আজহার নামাজ ও মোনাজাত শেষে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় পশু কোরবানিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন শহরবাসী। প্রতিবছরের মতই পশু জবাইয়ের নির্ধারিত স্থান ছাড়াও শহরের বিভিন্ন অলিগলির সড়কে ও ফাঁকা জায়গায় পশু কোরবানি করতে দেখা গেছে।
চুয়াডাঙ্গা পৌর মডেল মসজিদসহ ১৩টি মসজিদে ঈদের জামাত ৭টায় অনুষ্ঠিত হয়। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের বাসভবনে সকাল ৭টায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক, জেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনসহ পরিবারের সদস্য ও নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ঈদের নামাজে অংশ নেন। নামাজ শেষে সবার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় পরবর্তী কর্মকর্তা-কর্মচারী, নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এমপি ছেলুন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার পৌর মডেল মসজিদে সকাল ৭টায় নামাজ আদায় করেন। এরপর বাসভবনে ফিরে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় মিলিত হন। এরপর সরকারি শিশু পরিবারের সদস্যদের সাথে কূশল বিনিময় ও দুপুরের খাবার খান। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম পুলিশ লাইন জামে মসজিদে নামাজ আদায় করেন। এছাড়াও চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর পরিচালক মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান জাফরপুরস্থ বিজিবি’র ব্যাটালিয়ান সদর দপ্তর জামে মসজিদে সৈনিকদের সাথে নামাজ আদায় করেন এবং কূশল বিনিময় করেন। নামাজ শেষে বিভিন্ন ক্যাম্পে কর্তব্যরত বিজিবি’র ক্যাম্প কমান্ডার ও সৈনিকদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান শহরতলি দৌলাতদিয়াড় জান্নাতুন নাঈম জামে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন। এরপর তিনি জেলা স্বাস্থ্যকর্মীদের সাথে কুশল বিনিময় এবং সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।
চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আলামিন নিজ বাসায় পরিবারের সাথে ঈদের জামাতে এবং সাধারণ সম্পাদক রাজিব হাসান কচি দৌলাতদিয়াড় জান্নাতুন নাঈম জামে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ফাতেহ আকরাম জান্নাতুল মওলা জামে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন। এরপর হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের আহবায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দার জান্নাতুল মওলা জামে মসজিদে নামাজ আদায় শেষে নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ সামসুল আবেদীন ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু স্বপরিবার নিয়ে ঢাকাতে ঈদ উদযাপন করেছেন বলে জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপি’র উপ-কোষাধ্যক্ষ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শিল্পপতি আলহাজ মাহমুদ হাসান খান বাবু এবার স্বপরিবারে ঢাকাতেই ঈদ করেছেন। জেলা বিএনপির অন্যতম সদস্য মো.শরীফুজ্জামান শরীফ এবার পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ উদযাপন করেছেন ঢাকা মিরপুরে।
এদিকে, ঈদের জামাত শেষে মোনাজাতে মহান আল্লাহর কাছে চোখের পানি ফেলে মহামারী করোনা থেকে মুক্তির ফরিয়াদ জানান ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। সেই সঙ্গে সারা বিশ্বে করোনা আক্রান্ত ও মৃত ব্যক্তিদের জন্যও দোয়া করা হয়। এছাড়াও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের নিহত সদস্যদের রুহের মাগফেরাত এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনাও করা হয় মোনাজাতে। পরে কোলাকুলি আর করমর্দন ছাড়াই সালামের মাধ্যমে ঈদের শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করেন মুসল্লিরা। এছাড়া ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে সদর হাসপাতাল, এতিমখানা, জেলা কারাগার ও সরকারি শিশু পরিবারের সদস্যদের মাঝে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More