চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে ছেলুন জোয়ার্দ্দার ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে টগর পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার চাঁদরে মোড়ানো ছিলো পুরো নির্বাচনি এলাকা
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনে কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট কেন্দ্রগুলোতে গোপন ব্যালোটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হয়। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চলে চুয়াডাঙ্গা-১ ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের ভোট গ্রহণ কার্যক্রম। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে ৪র্থ বারের মতো নৌকা প্রতীকে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে ৪র্থ হাজি আলী আজগর টগর নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেছেন। গতকাল রোববার চুয়াডাঙ্গা জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে রাত সাড়ে দশটার সময় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও চুয়াডাঙ্গা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতেৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত, র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার চাঁদরে যেন মোড়ানো ছিলো নির্বাচনি এলাকা। চুয়াডাঙ্গা-১ আসন চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলা নিয়ে গঠিত এবং চুয়াডাঙ্গা-২ দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলা নিয়ে গঠিত।

ভোট দেয়ার সময় এমপি টগর

চুয়াডাঙ্গা সদর (আংশিক) ও আলমডাঙ্গা উপজেলা মিলে ৭৯ চুয়াডাঙ্গা-১ আসন। এই আসনে ৪র্থ বারের মতো বেসরকারিভাবে নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন।
এ সময় নৌকা প্রতীকে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীক থেকে ২৩ হাজার ৪৯৮ জনের ভোট বেশি পেয়ে জয়লাভ করেন। নৌকা প্রতীকে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ভোট পেয়েছেন ৯৬ হাজার ২৬৬ জনের ভোট। তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ঈগল প্রতিকে ৭২ হাজার ৭৬৮ জনের ভোট পেয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য ফ্রিজ প্রতিকে এমএ রাজ্জাক খান রাজ ভোট পেয়েছেন ৫৯ হাজার ১৮০ জনের ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী এম শহীদুর রহমান ট্রাক প্রতিকে ৯৫৮ জনের ভোট পেয়েছেন। এনপিপি’র (ন্যাশনার পিপলস্ পার্টি) কেন্দ্রীয় মহাসচিব ইদ্রিস চৌধুরী আম প্রতিকে পেয়েছেন ৫৪০ জনের ভোট। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনীত প্রার্থী জাতীয় পার্টির চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি অ্যাড. সোহরাব হোসেন প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও তিনি লাঙ্গল প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৫৭১ জনের ভোট। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে মোট বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ৫ হাজার ৫শত ৩৪টি। সাংসদীয় ৭৯ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে মোট প্রদত্ত ভোটের হার ৪৯ শতাংশ।
অন্যদিকে সংসদীয় ৮০ চুয়াডাঙ্গা-২ আসন সদর (আংশিক) দামুড়হুদা উপজেলা ও জীবননগর উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে ৪র্থ বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকায় প্রার্থী হাজি আলী আজগার টগর নৌকা প্রতীকে এক লাখ ৭ হাজার ৫৯ জনের ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকের থেকে ৪৬ হাজার ২২৫ জনের ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হন তিনি। এ সময় নৌকা প্রতীকে হাজি আলী আজগর টগর ভোট পেয়েছেন এক লক্ষ ৭ হাজার ৫৯ জনের ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু হাশেম রেজা ট্রাক প্রতীক ভোট পেয়েছেন ৬০ হাজার ৮শত ৩৪ জনের ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী ঢেঁকি প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ২৯ হাজার ৭৫১ জনের ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী নূর হাকিম ঈগল প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ২ হাজার ৬শত ৫১ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল মল্লিক ফ্রিজ প্রতীকে পেয়েছেন ৮২৯ জনের ভোট। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের মনোনীত প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও দেওয়ান মো. ইয়াছিন উল্লাহ মশাল প্রতীক পেয়েছেন ২শত ১১ জনের ভোট। জাকের পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. আব্দুল লতিফ খান গোলাপ ফুল প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ২৭১ জনের ভোট। ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. ইদ্রিস চৌধুরী আম প্রতীক পেয়েছেন ৪৩০ জনের ভোট। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনীত প্রার্থী প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও তিনি লাঙ্গল প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৭৭৮ জনের ভোট। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে মোট বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ৭ হাজার ৬৬৯টি। সংসদীয় ৮০ চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে মোট প্রদত্ত ভোটের হার ৪৬ শতাংশ।
উল্লেখ, চুয়াডাঙ্গায় দু’টি সংসদীয় আসনে ভোটকেন্দ্র ছিলো ৩৫৪টি। যার মধ্যে ২০৫টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১৪৯টি কেন্দ্র সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিলো। কিন্তু কোন প্রকার অপ্রতিকার কর্মকা- ছাড়া শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ভোট দেয় সাধারণ নাগরিক।
জেলার দু’টি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৮ জন। নির্বাচনী এলাকা ৭৯ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও আলমডাঙ্গা উপজেলা চুয়াডাঙ্গা-১ সংসদীয় আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৯৮০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪১ হাজার ৩৮৭ জন এবং মহিলা ভোটার ২ লাখ ৪২ হাজার ৫৮৯ জন। মোট ভোট কেন্দ্রে সংখ্যা ১৮১টি। নির্বাচনি এলাকা ৮০ চুয়াডাঙ্গা-২ দামুড়হুদা উপজেলা, জীবননগর উপজেলা নিয়ে গঠিত। চুয়াডাঙ্গা-২ সংসদীয় আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৯৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪২ জন এবং মহিলা ভোটার ২ লাখ ৩১ হাজার ৬৯২ জন। মোট ভোটকেন্দ্রে সংখ্যা ১৭৩টি।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More