উদাসীনতায় অপূরণীয় ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ছে

সম্পাদকীয়

ডেঙ্গি নাকি ডেঙ্গু? নামে কী আসে যায়! রোগটা যে অনেকেরই তরতাজা প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। চুয়াডাঙ্গায় চলতি মরসুমে মৃত্যুর খবর না মিললেও দেশে মৃতের সংখ্যা ৩শ ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও মৃত্যু সংখ্যা শূন্যের কোটাই নেই। ফলে এডিস মশা কামড়ে হওয়া এ রোগ থেকে মুক্তির উপায় মশক নিধনসহ এ মশার বংশ বিস্তার রোধে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে দায়িত্ব পালন। চুয়াডাঙ্গায় এ রকম বিশেষ পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে না।  উদাসীনতায় পরিস্থিতি যে বেসামাল হয়ে উঠতে পারে, তা অস্বীকার করার জো নেই।

চুয়াডাঙ্গায় ক’দিনের মধ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে ১৫জনের ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। ৯জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।  একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়াতেও পাঠাতে হয়েছে। দেশে বিশেষ করে রাজধানীর চিত্র অনেকটাই ভয়াবহ। প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। রাজধানীর সিটি করপোরেশনের তরফে মশক নিধনের কিছু দৃশ্য দূরদর্শনের খবরে ভেসে উঠলেও রোগ প্রতিরোধের হার দেখে ওই কর্মসূচির বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা সঙ্গত। প্রশ্ন উঠছেও। তারপরও মশা নিধনসহ এডিস মশার বংশ বিস্তারে লার্ভা ছাড়ার স্থানগুলো সম্পর্কে সচেতন করার চেষ্টা লোকদেখানো হলেও বিদ্যমান। যা চুয়াডাঙ্গায় অনুপস্থিত।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গি রোগী চিকিৎসার জন্য ২০টি শয্যা পৃথক করে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। একজন মেডিকেল অফিসারও বিশেষভাবে দায়িত্বপালনে নিযুক্ত হয়েছেন। হাসপাতালের বর্হিবিভাগে সচেতনমূলক প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ পথ্যও রয়েছে। তা হলে আর দুশ্চিন্তা কেন? রোগাক্রান্ত চেয়ে প্রতিরোধ শ্রেয়। আক্রান্তদের মধ্যে একজনেরও মৃত্যু কাম্য নয়। সুস্থতার শতভাগ নিশ্চয়তা যেখানে নেই, সেখানে রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা অতীব জরুরি। এ দায়িত্ব কার? শহরে অবশ্যই শহর ব্যবস্থাপনা পরিষদ তথা পৌর পরিষদের ওপরই সিংহভাগ বর্তায়। এ দায়িত্ব পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়েই দায়িত্বের মশনদে বসেছেন প্রতিনিধিগণ। এডিস মশা নিধনে শহরবাসীরও দায়িত্ব রয়েছে।

অবশ্যই চিকিৎসার শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে হবে। সুচিকিৎসা পাওয়া প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গি বা ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা প্রদানে বিশেষ পদক্ষেপ প্রশংসার দাবি রাখে। শহরে এডিস মশার উপদ্রব বেড়েছে বলেই এ মশা বাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে কালবিলম্ব না করে মশক নিধনে বাস্তবমুখি বিশেষ উদ্যোগ প্রয়োজন। একই সাথে দরকার, শহর ও শহরতলিবাসীগণের নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল হওয়া।  উদাসীনতায় অপূরণীয় ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More