যাকে মনোনয়ন দেবো তাকে বিজয়ী করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে

শত সংগ্রামে অজস্র গৌরবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় শীর্ষক আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিতসভায় প্রধানমন্ত্রী

এমপিদের বিরুদ্ধে বিষেদগার না করার আহ্বান : জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে মনোনয়ন দেয়ার অনুরোধ তৃণমূল নেতাদের

স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে। প্রার্থী মনোনয়ন আমি দেব, কে প্রার্থী আপনারা সেটা দেখতে যাবেন না, যাচাই করতে যাবেন না। যাকে মনোনয়ন দেয়া হবে, তাকে বিজয়ী করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। গতকাল রোববার গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় সমাপনী বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন। বর্ধিত সভায় সকল নেতারা হাত তুলে প্রধানমন্ত্রীর উল্লেখিত আহ্বান মেনে চলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। বৈঠক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের আশায় মাঠে নেমে অনেকেই দলের বর্তমান সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিষেদগার করছেন।

সূত্র জানায়, গতকালের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তাদের ওপর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, যারা জনসংযোগকালে দলীয় এমপিদের সমালোচনা করবেন তাদের মনোনয়নের জন্য বিবেচনা করা হবে না। কাজেই মনোনয়ন পেতে এমপিদের বিরুদ্ধে বিষেদগার করবেন না। সবার আমলনামা আমার কাছে রয়েছে। বিভিন্ন জরিপ চালানো হচ্ছে। প্রতি ছয় মাস পরপর জরিপ রিপোর্ট আপডেট করা হচ্ছে। প্রায় ১৫ বছর ধরে দেশের শাসন ক্ষমতায় থাকায় আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরে যত উন্নয়ন হয়েছে, সেসব তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও কর্মকা-ের চিত্রও জনগণের কাছে তুলে ধরার নির্দেশনা দেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ পর্যায়ের প্রায় সাড়ে তিন হাজার নেতা ও জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে ‘শত সংগ্রামে অজস্র গৌরবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়’ শীর্ষক এই বিশেষ বর্ধিত সভায় বসেন প্রধানমন্ত্রী। বক্তব্য রাখেন তৃণমূলের ৪৪ জন নেতা। কেউ কেউ কর্মীদের সঙ্গে এমপিদের দূরত্বের বিষয়টি তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী সবার বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনেন। আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা সভায় যোগ দেন। এছাড়া জাতীয় সংসদের দলীয় সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের দলীয় চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার দলীয় মেয়র এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরাও উপস্থিত ছিলেন।

দিনব্যাপী বৈঠকে সূচনা বক্তৃতায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের শক্তিই হচ্ছে আওয়ামী লীগের শক্তি। আওয়ামী লীগের কোনও প্রভু নাই, দেশের জনগণই আওয়ামী লীগের প্রভু। জনগণের কাছেই আমরা দায়বদ্ধ। জনগণের কল্যাণে আমরা কাজ করি। আমরা কতটুকু করতে পেরেছি এবং ভবিষ্যতে কী করব; তা আমরা শুধু জনগণকে বলি, অন্য কাউকে নয়। আগামী নির্বাচনে আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষকে আমি আহ্বান করবো-তারা কি চান বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে চলুক? জনগণ ভোটের মালিক, তারা যদি চান উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, প্রতিষ্ঠিত হবে-তাহলে আওয়ামী লীগকে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কতিপয় লোক আছে যারা চোর, দুর্নীতিগ্রস্ত ও খুনি। আসলে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান-সকলেই খুনি। দেশের মানুষ তাদের হাতে নিরাপদ নয়, দেশও নিরাপদ নয়। তাই আপনাদের (দলের তৃণমূল নেতা ও জনপ্রতিনিধি) প্রতি আমার অনুরোধ, ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ যেসব উন্নয়ন কাজ করেছে তার সবগুলো জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জনগণের পাশে থাকে, জনগণ উপকৃত হয়। সকলের জন্য আমরা কাজ করবো- এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলবো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যে উন্নয়ন করেছি, পরিবর্তন এনেছি সেই তথ্যগুলো মানুষের কাছে দিবো, সেগুলো আপনারা মানুষের কাছে পৌঁছে দিবেন। একইসঙ্গে আগামী সাধারণ নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি দলকে শক্তিশালী করতে বলেন এবং জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করার আহবান জানান। তৃণমূল নেতাদের তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে আজকে ২০২৩ সাল এই সাড়ে ১৪ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে এবং সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছে বলেই আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আজকের বাংলাদেশ বিশ্বে সম্মান পেয়েছে। আওয়ামী লীগকে ভোট দিলেই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে চলতে পারবে এ দেশের মানুষ।

ভোট চুরি করলে মানুষ মেনে নেয় না: এক-এগারো সৃষ্টির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির দুর্নীতি ও দুঃশাসনের কারণেই দেশে ওয়ান ইলেভেন হয়েছিল। খালেদা জিয়া ভোট চোর হিসেবে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। ভোট চুরি করলে দেশের মানুষ মেনে নেয় না বলেই খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সারাবিশ্বের কাছে মর্যাদা পেয়েছে। কিন্তু এটা আমাদের ধরে রাখতে হবে। ধরে রেখেই আরও এগিয়ে যেতে হবে। মানুষের জীবনমান আজ উন্নত হয়েছে। মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি এগুলো তো আওয়ামী লীগ সরকার করে দিয়েছে। অন্য কেউ করেনি, কোনদিন করবেও না।

শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পেয়েছে: মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে তার সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়নের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, আজ শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পেয়েছে। আমরা নিজেদের গ্যাসফিল্ড থেকে গ্যাস উত্তোলন করছি। অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একইদিনে শত সেতু আর একই দিনে শত সড়ক উদ্বোধনের এই রেকর্ড আর কেউ করতে পারেনি। বাংলাদেশ করতে পেরেছে। পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু দুর্নীতির কথা উঠেছিল, চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। দেশে দারিদ্র বিমোচনে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক অর্থনীতিবিদ লিখেছেন কোন এক বিশেষ এনজিও ক্ষুদ্র ঋণে নাকি দেশে দারিদ্র্য কমেছে! আওয়ামী লীগ ২০০৯ এ সরকার গঠন করে ২০২৩ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনা করেই তো আজকে দারিদ্রের হার ১৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। কোন বিশেষ এনজিওর ক্ষুদ্র ঋণে যদি দারিদ্র কমে, তবে এই ১৮ ভাগ আগে কেন হয়নি?

তিনি বলেন, জনগণকে দারিদ্রমুক্ত করা, জনগণের শিক্ষার হার বাড়ানো, স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দৌরগৌড়ায় পৌঁছে দেয়া, কর্মসংস্থানের জন্য বেসরকারি খাত উন্মুক্ত করে দেয়া, তৃণমূল পর্যন্ত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলেই এই দারিদ্রের হার হ্রাস পেয়েছে। কোন এনজিও’র ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে দারিদ্র হ্রাস পায় নাই।

আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র, মানুষের ভোটের অধিকারে বিশ্বাস করে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে সর্বপ্রথম বাংলাদেশের ইতিহাসে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল আওয়ামী লীগ। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আসি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটের অধিকারে বিশ্বাস করে, সে কারণেই আওয়ামী লীগ সুষ্ঠুভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে সকাল ৯টা থেকেই সারাদেশ থেকে আগত আমন্ত্রিত তৃণমূল নেতারা গণভবনে আসতে থাকেন। সকাল ১০টার মধ্যে গণভবনের সামনের মাঠে নির্মিত বিশাল প্যান্ডেল তৃণমূল নেতাদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবন সারাদেশের তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে রীতিমত মিলনমেলায় পরিণত হয়। দীর্ঘদিন পর একে অপরের সঙ্গে দেখা পেয়ে কুশল বিনিময়ে মেতে উঠেন প্রবীণ-নবীন তৃণমূল নেতারা। সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। মূল মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর পাশে বসে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ওবায়দুল কাদের। সভা সঞ্চালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম। সভায় শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। এরপর দীর্ঘসময় সারাদেশের তৃণমূল নেতাদের কথা শোনেন প্রধানমন্ত্রী, এ সময় আগামী নির্বাচনকে সামনে নানা নির্দেশনাও দেন তিনি। সমাপনী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী সকলে মিলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। আমাদের একমাত্র শক্তি জনগণ। আমরা কারো কাছে মাথা নত করি না। বিএনপির জন্মই হচ্ছে আজন্ম পাপ। বিএনপির জন্ম অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে, জাতির পিতার হত্যার মধ্য দিয়ে এবং সন্ত্রাসের মধ্যদিয়ে। বাংলাদেশে যত উন্নয়ন হয়েছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।  প্রত্যেকটা এলাকায় যা যা উন্নয়ন হয়েছে মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে, প্রচার করতে হবে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সবার উদ্দেশ্যে বলেন, সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে। সুতরাং সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ শেষে আন্দোলন সংগ্রামে নিহত নেতাকর্মীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন স্বরূপ এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

ভারপ্রাপ্তরা আজ থেকে ভারমুক্ত: দলের বিশেষ বর্ধিত সভা থেকে ভারপ্রাপ্ত নেতাদের ভারমুক্ত করে দিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এখন থেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকরা ভারমুক্ত, অর্থাৎ পূর্ণ সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক হিসেবে গণ্য হবেন। অবশ্য কোন পর্যায়ের নেতারা এর আওতায় পড়বেন তা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী স্পষ্ট করে বলেননি। তিনি বলেন, আজ থেকে সব ভারমুক্ত। সকল দ্বন্দ্ব ও ভেদাভেদ ভুলে দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনী মাঠে নামার নির্দেশনা দেন।

জানা গেছে, দলীয় নেতা, সংসদ সদস্য এবং জনপ্রতিনিধিদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় সরকার ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রকাশনা। দেয়া হয় ১৫ বছর আগের বাংলাদেশ ও বর্তমান বাংলাদেশের তুলনামূলক চিত্রসহ প্রামাণ্য চিত্রের সিডি।

সূত্র জানায়, বৈঠকে তৃণমূলের নেতারা আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানান। এছাড়া কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের চাপ, জুনিয়র সিনিয়র নেতাদের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় তারা ভালো নেই বলেও সভায় একাধিক নেতা অভিযোগ করেন। জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আগামী নির্বাচন খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে। জনপ্রিয়দেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে।

তৃণমূল নেতাদের বক্তব্যের শুরুতেই কথা বলেন পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী আজগর। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে বলেন, ‘পটুয়াখালী এখন উন্নয়নে ভরপুর। পদ্মাসেতুর কারণে আজ পটুয়াখালী একটি অর্থনৈতিক জোনে ধাবিত হচ্ছে। নেত্রী আপনার কাছে একটা দাবি পটুয়াখালী একটা পর্যটন কেন্দ্র। সেই পটুয়াখালীর মানুষের কল্যাণের জন্য একটা স্ট্রং বেড়িবাঁধ প্রয়োজন। দলের অবস্থান জানান দিয়ে তিনি বলেন, মোটামুটি সব  সংগঠন নিয়ে আমি ভালো আছি শুধু একটা উপজেলা নিয়ে আমি ভাল নাই। আর তা হলো বাউফল উপজেলা। বাউফলে একটা বিরোধ চলছে। অনেক মায়ের কোল খালি হয়েছে। সেখানে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে নিজেরা নিজেরা হাতাহাতি কেন করে। তখন সরকারের ভাবমূর্তি কোথায় থাকে?’

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান বলেন, ‘আমি হলে ভালো, অপরে হলে খারাপ, এই রাজনীতি চলছে। অনেকটা সাইজ করার রাজনীতি চলছে। আমরা অনেকেই এই সাইজ করার রাজনীতি করি। এই সাইজ করার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আপনি যাকে মনোনয়ন দিবেন, ইউনিয়ন পরিষদ হোক, সিটি কর্পোরেশন হোক, তিনি যদি নির্বাচিত হয়ে আমার চেয়ে জনপ্রিয় হয়ে যায়, সেজন্য তার মাথাটা এখান থেকে কেটে দিতে হবে, এগুলো যারা করে আপনি জানেন, তাদেরকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে ঢাকা জেলার ৫টি আসনে আমরা নৌকার বিজয় অর্জন করে আনবো। আর সরকারের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার, ষড়যন্ত্র ও আন্দোলনের নামে সহিংসতা চলছে তা মোকাবিলার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। এদের মোকাবিলার জন্য আমরা ঢাকা জেলার নেতাকর্মীরা সব সময় প্রস্তুত আছে।’

দিনাজুপর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুজ্জামান মিতা বলেন, ‘আমাদের দিনাজপুরের একজন সংসদ সদস্য আমাদের জেলার নেতাদের নিয়ে প্রকাশ্যে বিষেদগার করে বেড়ায়। এটা অপ্রত্যাশিত। আমরা সংসদ সদস্যের সঙ্গে কোনো বিরোধ চাই না ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে চাই।’

জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার দাস বলেন, ‘অনেক সংসদ সদস্য জনবিচ্ছিন্ন। জয়ী হওয়ার পর জনগণ এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে তারা যোগাযোগ রাখছেন না। তাই আগামী নির্বাচনে জনপ্রিয় নেতাদের মনোনয়ন দেয়ার দাবী জানাই।’

লালমনিরহাট জেলার সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান বলেন, ‘আমাদের লালমনিরহাট-৩ আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের সংসদ সদস্য। সারাদেশে উন্নয়ন হলেও এই এলাকার সংসদ সদস্য জনবিচ্ছিন্ন।’

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More