স্টাফ রিপোর্টার: ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের শিকার এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের হতভাগ্য যাত্রীদের স্বজনদের কান্না থামছে না। প্রিয়জনদের হারিয়ে তারা পাগলপ্রায়। কোনো সান্ত¡নাতেই সুগন্ধাপাড়ের মানুষদের আহাজারি থামছে না। লঞ্চ দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া ৪১ জনের মধ্যে ১৬ জনের লাশ তাদের আত্মীয়স্বজনদের কাছে শুক্র ও শনিবার হস্তান্তর করা হয়েছে। মারা যাওয়া যাত্রীদের অধিকাংশই বরগুনার বাসিন্দা। আগুন পুড়ে অঙ্গার বরগুনার ৩৭ জনের মধ্যে ১৪ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। এগুলো সংগ্রহ করে স্বজনরা নিজ নিজ এলাকায় দাফন করেছেন। তবে অবশিষ্ট ২৩টি লাশের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এগুলোর ডিএনএ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং নদীপাড়ে কবর দেয়া হয়েছে।
ঢাকার সদরঘাট থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পাঁচ শতাধিক যাত্রী নিয়ে এমভি অভিযান-১০ বরগুনার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চটি ভয়াবহ অগ্নিকা-ের শিকার হয়। এতে ৪১ জন যাত্রী মারা যান এবং অর্ধশতাধিক যাত্রী দগ্ধ হন। এ সময় নদীতে লাফিয়ে পড়ে অনেকে প্রাণে বেঁচে যান। তবে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়া অর্ধশতাধিক যাত্রী এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের সন্ধানে নেমেছে ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ড। তবে শনিবার বেলা ৩টা পর্যন্ত কোনো লাশ পাওয়া যায়নি। স্বজনদের খোঁজে সুগন্ধা তীরে অপেক্ষা করছেন শতাধিক মানুষ। ট্রলার নিয়ে প্রিয়জনকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন অনেকে। এ সময় কারও কারও হাতে ছিলো নিখোঁজ স্বজনের ছবি। লঞ্চ অগ্নিদগ্ধ হয়ে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭০ জন এবং ঢাকায় ১৬ জন চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় শতাধিক যাত্রী আহত হয়েছেন। লঞ্চ দুর্ঘটনায় ঝালকাঠি থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছে গ্রাম পুলিশ। শনিবার সকাল ১০টার দিকে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত দল ঝালকাঠির লঞ্চঘাট এলাকায় পুড়ে যাওয়া লঞ্চটি পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে বরগুনা সদর থানায় প্রতিটি লাশের জন্য সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এর মধ্যে সদরের ৯নং এম বালিয়াতলীর বশির আহমেদ স্বপনের স্ত্রী জাহানারা (৪৫), ২নং গৌরিচন্না ইউনিয়নের খাজুরতলা গ্রামের রফিকুল ইসলামের দুই মেয়ে লামিয়া আক্তার (৪), সামিয়া আক্তারের (৪) জন্য জিডি করা হয়। রফিকুলের স্ত্রী শিমু আক্তার নিখোঁজ রয়েছেন। পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী গ্রামের মোস্তফার কন্যা সাহিদা (১৫), একই উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ঘুটাবাছা গ্রামের নাসরুল্লাহর মেয়ে তাবাসসুম (৩), ৮নং বরগুনা সদর ইউনিয়নের ঢালুয়া গ্রামের বেল্লালের স্ত্রী মনোয়ারার (৫০) জন্য জিডি করা হয়।
পূর্ববর্তী পোস্ট
বর্ণিল আয়োজনের মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হলো তিন দিনব্যাপী চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদের ৪৪ বর্ষপূতি অনুষ্ঠান
পরবর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ