উষ্ণতার বার্তা নিয়ে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন

সম্পাদকীয়

দেশের হতদরিদ্র মানুষের সার্বিক জীবনমানে গত এক দশকে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এলেও করোনার কারণে তারা অনেকটাই পিছিয়েছে; দেশে গরিব মানুষের সংখ্যা আরও বেড়েছে। যখন শৈত্যপ্রবাহ চলে তখন দরিদ্র মানুষদের, চরম দুর্ভোগ পোয়াতে হয়। শীতের তীব্রতা বাড়লে শ্রমজীবী মানুষকে খোলা আকাশের নিচে কাজ করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। শীতের রসায়ন বিশ্লেষণ করলে নেতিবাচক দিকের চেয়ে ইতিবাচক দিক কম নয়। শীতের শিশিরভেজা সকাল অনেকের কাছেই উপভোগ্য। সরিষার হলুদ মাঠ আবহমান বাংলার সৌন্দর্যের প্রতীক হয়ে সামনে দাঁড়ায়। এসব মাঠে মধু সংগ্রহের ধুম পড়ে। তবে সব সৌন্দর্যকে স্নান করে দেয় শীতার্তদের কাঁপুনি। চুয়াডাঙ্গা ও পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যাওয়ায় কষ্ট পাচ্ছে সেখানকার বাসিন্দারা। যে কোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষই বিপাকে পড়ে বেশি। তাদের পক্ষে শীতবস্ত্র ও লেপ-কম্বল কিনে শীত নিবারণ করা যেমন দুরূহ, তেমনি পুষ্টিহীনতার কারণে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও তাদের কম। ফলে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে তারা, বিশেষত বয়োবৃদ্ধ ও শিশুরা আক্রান্ত হয় বেশি। তাই শীতের শুরুতেই দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র, খাদ্য ও ওষুধসহ বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা প্রয়োজন। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হলেও দুঃখজনক হলো, শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ লক্ষ করা যাচ্ছে কমই। হতদরিদ্র মানুষের মাঝে সরকারি-বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র ও অন্যান্য সহায়তা প্রদানের যে ঐতিহ্য রয়েছে আমাদের; তা রক্ষা করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন শীতকালেও কিছুদিন পরপর বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দেশে অসময়ে বৃষ্টিপাত হলে দরিদ্র মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে দরিদ্র মানুষের জন্য সহায়তার পরিমাণ বাড়াতে হবে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও দরিদ্র মানুষের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রান্তিক কৃষক, অতি ক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেদিকে সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে এবং তাদের ঘুরে দাঁড়াতে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করতে হবে। লক্ষ করা গেছে, দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে প্রতিবছর শীতকালে দরিদ্র মানুষের কষ্ট আরও বেড়ে যায়। এ মুহূর্তে উষ্ণতার বার্তা নিয়ে সামর্থ্যবানদের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More